Bratya Basu On SSC Recruitment: ‘সব শূন্যপদেই নিয়োগ’, বাংলার হবু শিক্ষকদের জন্য বড় বার্তা শিক্ষামন্ত্রীর
Bratya Basu On SSC Recruitment: "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যাতে সব পদে নিয়োগ হয়। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি।"
কলকাতা: ‘রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ খুব দ্রুত শুরু হবে।’ বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, “দ্রুতই শিক্ষক নিয়োগ হবে। তবে এখন নিয়োগ নিয়ে কিছু সমস্যা চলছে। সেই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। দ্রুত নিয়োগ হবে।” শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “আগামীদিনে কোনও শূন্য পদ থাকবে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যাতে সব পদে নিয়োগ হয়। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি। কী ভাবে কবে সেটা এখনই সুনির্দিষ্ট বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা নিয়োগ করব।”
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বারবারের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। টেট উত্তীর্ণরা নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কখনই বিকাশ ভবনের সামনে, কখনও হাজরা উত্তপ্ত হয়েছে। পারদ চড়েছে জেলাগুলিতেও। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি, তাঁদের অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে গত সপ্তাহেই। মনে করা হচ্ছে, শিক্ষামন্ত্রীর এহেন আশ্বাস চাকরিপ্রার্থীদের জন্য যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বিরোধীরা বলছেন অন্য কথা। গত বিধানসভা অধিবেশনেও শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, দু’মাসের মধ্যেই নিয়োগ হবে। কিন্তু আদৌ তা বাস্তবায়িত হয়নি। সেই বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছেন বিরোধীরা। ব্রাত্য বসু প্রশ্নোত্তর পর্বে জানিয়েছিলেন, দুমাসের মধ্যে নিয়োগ হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে।
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পাঁচ হাজার চাকরি প্রার্থীর মামলা নিষ্পত্তি হওয়া বাকি রয়েছে। হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায় অনুসারে, দ্রুত চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগের নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া সম্পন করতে হবে। যদি শিক্ষামন্ত্রীর এই আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বিষয়টি অনেকটাই ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যের এস এস সি কমিশন শিক্ষক নিয়োগের প্রেক্ষাপট ও মামলায় জর্জরিত:
➡️ রাজ্যে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পরে ২০১৩ সালে পঞ্চম-দ্বাদশ RLST-2012 শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কম্বাইড মেরিট প্যানেল(CMP) থেকে পরবর্তীতে রেঙ্ক জাম্প করে নিয়োগ হয়, সে বিষয়ে একাধিক প্রার্থীর অভিযোগ রয়েছে এবং সেই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত সিএমপি মামলা গড়ায় ও চলছে।
➡️SLST-2016 IX X এবং XI XII শিক্ষক নিয়োগে যদিও সেখানে সিংহ ভাগ প্রার্থী নিয়োগ হয়েছে, তবুও পরবর্তীতে বেশ কিছু পিছন থাকা রেঙ্কের প্রার্থী চাকরি করছে এবং অনিয়মের প্রমান সহ হাইকোর্টে মামলা চলছে। প্রসঙ্গত মন্ত্রী পরেশ অধিকারী কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে একাদশ দ্বাদশ শিক্ষিকা হিসেবে হটাৎ করে অপেক্ষামান তালিকায় ১ নম্বর নাম প্রকাশ হয়ে চাকরি করছেন। হাই কোর্ট রায়ে মুর্শিদাবাদ জেলার শিক্ষক চাকরি বাতিল হয় এবং পরবর্তীতে প্যানেল মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও SMS ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগে কেস ফাইল হয় ও হাইকোর্ট অপদস্ত করেন এবং এখনো বিচারাধীন।
➡️ Upper Primary দীর্ঘ কয়েক বছরের নিয়োগ প্রক্রিয়া। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুতেই পরীক্ষা বসার বিষয়ে প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত সম্পর্কিত মামলা হয়।
পরবর্তীতে জুলাই ২০১৯ ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াকরণ শুরু হলে সেই তালিকায় অপ্রশিক্ষিত স্থান পাওয়ার দারুন বেশ কয়েক হাজার প্রার্থী হাইকোর্টে ২০৩২ টি বেশি কেস ফাইল করে এবং পরবর্তীতে তাদের আদালতের রায়ে ভেরিফিকেশন ও ইন্টারভিউ হয়। আদালতের নির্দেশে প্রভিশনাল মেধা তালিকা প্রকাশ হলে, সেখানে টেট ওয়েটেজ বৃদ্ধি, অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীকে প্রশিক্ষিত করে স্থান দেওয়া, বেশ কিছু প্রার্থীকে মেধা তালিকায় স্থান না দেওয়া ভিত্তিতে হাজারো প্রার্থী কেস ফাইল করে পরবর্তীতে ১১ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে মেধা তালিকা ও প্রক্রিয়া বাতিল হয়*।
নতুন ভাবে আদালতের রায়ে পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে ইন্টারভিউ তালিকায় কিছু কম নম্বরের প্রার্থীকে তালিকায় স্থান, একাডেমিক স্কোর বৃদ্ধি এবং কাট অফ স্কোরের উর্ধে যোগ্য প্রার্থীদের অনলাইনে আপলোড ডকুমেন্টস রিজেক্ট গণ্য করে বাদ দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া টি বিচারাধীন এবং আদালতের নির্দেশে অভিযোগকারী প্রার্থীদের গ্রিভেন্স শুনানি সম্পন্ন হয়েছে।
➡️ স্কুলের নন টিচিং স্টাফ গ্ৰুপ ডি ও সি-২০১৬ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৪ মে ২০১৯ কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। তারপরেও প্যানেল না থাকা শত শত প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। বর্তমানে মাললা বিচারাধীন। ৫৭৩ জনের বেতন বন্ধ ও চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সময়ে Group C তে ৩৫১ জন ভুয়ো নিয়োগ একই রায়। বর্তমানে ডিভিশন বেঞ্জে বিচারাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: Rampurhat Crime: তৃণমূলের উপপ্রধান ‘খুন’, বগটুই গ্রাম থেকে উদ্ধার ১০ অগ্নিদগ্ধ দেহ