মাদক পাচার রুখতে কারবারের গভীরে পৌঁছতে চাইছে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী

কলকাতা: মাদক পাচার রুখতে কারবারের গভীরে পৌঁছতে চাইছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। শুক্রবার কলকাতার একটি বিখ্যাত হোটেলে যুগ্মভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই জানালেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSF) দুই শীর্ষকর্তা। তাঁদের কথায়, ইয়াবা ট্যাবলেট বা অন্য যে মাদক সামগ্রী পাচার হচ্ছে সীমান্তে, সেই সব পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক মারাত্মক আকারে বেড়ে গিয়েছে। ফলে […]

মাদক পাচার রুখতে কারবারের গভীরে পৌঁছতে চাইছে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Dec 12, 2020 | 12:51 AM

কলকাতা: মাদক পাচার রুখতে কারবারের গভীরে পৌঁছতে চাইছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। শুক্রবার কলকাতার একটি বিখ্যাত হোটেলে যুগ্মভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই জানালেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSF) দুই শীর্ষকর্তা। তাঁদের কথায়, ইয়াবা ট্যাবলেট বা অন্য যে মাদক সামগ্রী পাচার হচ্ছে সীমান্তে, সেই সব পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক মারাত্মক আকারে বেড়ে গিয়েছে। ফলে এই মাদক (Drug) পাচারের পিছনে যে মূল পান্ডারা রয়েছে, তাঁরা সামনের দিকে আসছে না। বরং, ছোটো ছোটো দালাল ঠিক করে, তাদেরকে নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে। যা স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তার।

সাংবাদিক বৈঠকে বিজিবির দক্ষিণ – পশ্চিম আঞ্চলিক (যশোর) এডিজি মহম্মদ জাকির হোসেন বলেন, এই মাদক পাচারের শেকড়ে পৌঁছতে হবে। পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাকে পুরোপুরি কেটে ফেলতে হবে। সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিতে হবে। তাতে যদি আরও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়, তাও করা উচিত বলেই আমার মনে হয়। পাশাপাশি তাঁর দাবি, দু – দেশই এ ব্যাপারে সমানভাবে সক্রিয়। সীমান্তের দু’দিকেই প্রচুর মাদক সামগ্রী ধরা পড়েছে বিগত এক বছরে। বিএসএফের রিপোর্ট বলছে, ২০১৯ সালে দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার – এর অধীনস্থ ভারত – বাংলাদেশ সীমান্তে ইয়াবা ট্যাবলেট ধরা পড়েছে ৫৩ হাজার ৫৬১ টি। ফেনসিডিল ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৬৯ টি বোতল। অন্যান্য মাদক ৩ কেজি ৫৩০ গ্রাম। অন্যদিকে ২০২০ সালে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের পরিমাণ ৩৭ হাজার ৭৩০ টি। ফেনসিডিল উদ্ধার হয়েছে ২ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮৭৪ টি এবং অন্যান্য মাদক সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে ২৭ কেজি ৯৮২ গ্রাম।

বিএসএফের তরফে দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার – এর আইজি অশ্বিন কুমার বললেন, সীমান্তে বেশ কিছু অংশ এখনও নজরদারির ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অংশগুলোতে আমাদের দু’পক্ষেরই নজরদারি বাড়ানোর কথা হয়েছে। কাঁটাতার সংক্রান্ত যে সমস্যা রয়েছে, তা ভারত – বাংলাদেশের কূটনৈতিক এবং কেন্দ্রীয় স্তর থেকে সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে। যদিও এই সমস্যা বছরের পর বছর চললেও, তা আদৌ মিটবে কি না, অথবা কবে মিটতে পারে, সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন আইজি।

গত ৯ ডিসেম্বর থেকে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে শুরু হয়েছিল কমান্ডার স্তরের বৈঠক। শুক্রবার তা শেষ হল। বৈঠকের শেষে বিএসএফের আইজি বললেন, দু’টি দেশের সীমান্ত সুরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোথায় কোথায় নিরাপত্তা এবং নজরদারির ত্রুটি রয়েছে, তাও তুলে ধরা হয়েছে বৈঠকে। দুটি দেশই যুগ্মভাবে মাদক থেকে নারী পাচার অথবা অনুপ্রবেশ রুখতে বদ্ধপরিকর। সীমান্তে পরিকাঠামো আরও উন্নতি করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সুদীপ্তর চিঠি কোনও প্রভাবশালীর অঙ্গুলিহেলনে নয় তো! সিবিআই-কে শুভেন্দুর বিস্ফোরক চিঠি

এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে সাম্প্রতিক কালে গরু পাচারের অভিযুক্ত বিএসএফের এই কমান্ড্যান্ট- গ্রেফতারি প্রসঙ্গ উঠে আসে। তার উত্তরে আইজি সুকৌশলে গোটা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এটা অনেক পুরনো ঘটনা। তবে সীমান্তে অপরাধ করলে বাহিনীর জওয়ানরা ছাড় পান না। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে তাহলে তো গ্রেফতার হতেই হবে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু যে এখন রীতিমতো ‘ক্লোজ চ্যাপ্টার’, তাও তিনি বোঝাতে চেয়েছেন। তিনি দাবি করেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ – এর মতো ঘটনা সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে হয়নি। তাই এনিয়ে আপাতত চিন্তা নেই। যদিও তাঁর এই তথ্যের মধ্যে ত্রুটি রয়েছে বলেই জানিয়েছেন বিএসএফের জওয়ানদের একাংশ। তাঁদের কথায়, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা লকডাউনে একাধিকবার হয়েছে। তাঁদের সক্রিয়তায় রোহিঙ্গারা সফল হতে পারেনি।

 আরও পড়ুন: মমতার ভরসা উন্নয়নের মডেলেই, বঙ্গধ্বনি যাত্রা শুরু তৃণমূলের