Calcutta High Court: ‘হাজির হতে বললেই এসএসকেএমে আশ্রয়…চিকিৎসকদের ভূমিকায় খুশি নই’, ভর্ৎসার সুরে বললেন বিচারপতি
Partha Chatterjee: শাসক দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তদন্তকারীর সংস্থার মুখোমুখি না হওয়ার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালের আশ্রয় নেন।
কলকাতা: মদন মিত্র বা ববি হাকিম, শোভন কিংবা অনুব্রত, প্রভাবশালী ব্যক্তি তথা রাজনীতিকরা অসুস্থ হলেই ভর্তি হন এসএসকেএম হাসপাতালে। উডবার্ন ওয়ার্ডের দরজা যেন তাঁদের জন্য অবারিত। এমন দাবি বারবার উঠেছে আদালতে। এমনকি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের নাম জড়ানোর পরই আদালতের তরফে জানানো হয়েছিল আদালতে হাজিরা এড়াতে কোনও ভাবেই এসএসকেএমে তথা উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হতে পারবেন না প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সেই নির্দেশের প্রায় মাস তিনেক পর পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় গ্রেফতার হওয়ার পরই ভর্তি হন এসএসকেএমে। রাজ্য সরকারের অধীন সেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েই এবার প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি। রবিবার ইডি-র করা মামলায় কার্যত এসএসকেএম-কে ভর্ৎসনা করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী। বিচারপতির নির্দেশেই সোমবার সকালে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পার্থকে।
রবিবার বিচারপতি বিবেক চৌধুরী সাফ জানিয়েছেন, এসএসকেএম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভূমিকায় খুশি নন তিনি। বিচারপতি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক অতীতে যখনই শাসক দলের কোনও নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে অথবা তদন্তকারী সংস্থার সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে, তখনই এসএসকেএম হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। এ ভাবেই নেতারা জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব সফলভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেছেন, রাজনৈতিক নেতারা যখন বুঝতে পারেন যে তাঁদের আর জিজ্ঞাসাবাদ করার সম্ভাবনা নেই, তখনই তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে।
এসএসকেএমের দেওয়া মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখিয়ে আদালতে হাজিরা এড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। পার্থ-র মামলায় তাঁর পর্যবেক্ষণ, বর্ষীয়ান মন্ত্রী, যাঁর অপরিসীম ক্ষমতা রয়েছে এবং যিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, তাঁর পক্ষে অন্য রাজনৈতিক নেতাদের সাহায্য নিয়ে, গুরুতর অসুস্থতা এবং চিকিৎসার আড়ালে জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর দাবি, এ ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে গেলে, হাজার হাজার যোগ্য প্রার্থীদের চোখের জলের অভিশাপ লাগবে।
পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁকে এসএসকেএম ভর্তি করাতে আপত্তি ছিল ইডি-র। শারীরিক পরীক্ষার জন্য প্রথমে তাঁকে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে আদালত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়ার পর এসএসকেএমে ভর্তি হন পার্থ। এরপরই সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি।