হঠাৎই বিকেলে রাজ্যপালের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক ‘আলাপ’ করে এলেন মমতা
প্রতিদিন নিয়ম করে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় মুখর হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপালকেও। আমলাতন্ত্র থেকে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে রাজ্যপালের টিপ্পনী অন্যমাত্রা যোগ করেছে
কলকাতা: ইংরেজি নববর্ষের ‘সৌজন্য সাক্ষাৎটা’ সারলেন বছর শুরু হওয়ার প্রায় পাঁচ দিন পর। এর মাঝের কটা দিনে যে তাঁদের মধ্যে সংঘাত হয়নি এমনটা নয়। বুধবার বিকেল ৫.১০ মিনিটে রাজভবনে প্রবেশ করে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। ঘণ্টা খানেকের আলোচনা। তারপর রাজভবনের ইস্ট গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় তাঁর গাড়ি। সচারচর এটা দেখা যায় না। হাইকোর্টের উল্টোদিকে ওয়েস্ট গেট দিয়েই মুখ্য়মন্ত্রীর গাড়ি সাধারণত বেরয়। তবে, এই রহস্যের থেকে বড় চমক, প্রায় পাঁচ মাস পর এই প্রথম রাজভবনে মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল।
সাক্ষাৎ শেষে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় একটি টুইট করেন। আদ্যন্ত সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেই দাবি তাঁর। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তবে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাঁদের এই সাক্ষাৎ যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, তাতে দ্বিমত নেই ওয়াকিবহাল মহলের। কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল রাজ্যপালের অপসারণের দাবি তোলে। বছর শেষে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়ে অপসারণের দাবি জানায় তৃণমূল।
Myself and Mrs Sudesh Dhankhar greeted Hon’ble Chief Minister @MamataOfficial when she visited Raj Bhawan today. pic.twitter.com/IsbEqedBHV
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) January 6, 2021
অন্যদিকে, প্রতিদিন নিয়ম করে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় মুখর হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপালকেও। আমলাতন্ত্র থেকে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে রাজ্যপালের টিপ্পনী বরাবরই অন্যমাত্রা যোগ দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারংবার সংবিধান মনে করিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন রাজ্যপাল। পাল্টা তোপ এসেছে নবান্ন থেকেও। রাজ্যপালের নাম না করে বিজেপির এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছেন বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। ফলে, মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের সংঘাত সর্বজনবিদিত।
আরও পড়ুন- হাওয়ালা যোগ রয়েছে এনামুলের বিরুদ্ধে, দাবি সিবিআইয়ের, নাকচ জামিন
এর আগে শেষ রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা গিয়েছিল ১৫ অগস্টের দিনে। তাঁর এই যাওয়া নিয়ে সেদিনও কম জলঘোলা হয়নি রাজ্য-রাজনীতিতে। চা-চক্রে না যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হঠাৎ আগমন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে, এ সব নিয়ে বরাবরই মুখ্যমন্ত্রীর ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাব। এ দিনও যে রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ পূর্ব নির্ধারিত ছিল, এমনটা নয়। হঠাৎ রাজভবনে হাজির হয়ে যান তিনি। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, একুশের নির্বাচনের আগে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তা সে হোক না সৌজন্যের।