Kolkata Municipal Corporation: ভাঁড়ারে টান, তবু মেয়র পারিষদদের জন্য ৫০ হাজারের ট্যাব
Kolkata Municipal Corporation: পুরনিগমের খরচ নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে প্রায় ৭ - ১০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে মেয়র পারিষদদের ট্যাবগুলি কেনার জন্য।
কলকাতা : অর্থাভাবের মধ্যেও ৫০ হাজার টাকার ট্যাব। কলকাতা পুরনিগমের এক বিজ্ঞপ্তি ঘিরে এবার শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। মেয়র পারিষদদের জন্য ধার্য্য করা হয়েছে ট্যাবের টাকা। অনলাইনে কাজ সামলাতে এই ট্যাবের সিদ্ধান্ত বলে দাবি কলকাতা পুরনিগমের। উল্লেখ্য, একদিকে যখন কলকাতা পুরনিগম খরচ কমানোর নির্দেশ দিচ্ছে। অন্যদিকে আবার এই ট্যাবের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।৩১ মার্চের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হচ্ছে, অনলাইনে অফিশিয়াল কাজকর্ম যাতে আরও সুষ্ঠুভাবে করা যায়, তা নিশ্চিত করতে মেয়র পারিষদদের ব্যবহারের জন্য ট্যাব দেওয়া হবে। এই ট্যাবের দাম ৪৯ হাজার টাকার বেশি হতে পারবে না। আবার এই বিজ্ঞপ্তির পরের দিনই ১ এপ্রিল পুরনিগমের আরও একটি বিজ্ঞপ্তি। তাতে বলা হচ্ছে পুরনিগমের বিভিন্ন দফতরের অতিরিক্ত খরচ কমাতে পর্যালোচনা করা হবে। এর জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। আর এতেই প্রশ্ন উঠছে। অর্থাভাবের মধ্যেও ৫০ হাজারের ট্যাব?
এর আগে কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজেও স্বীকার করে নিয়েছিলেন, পুরনিগম অর্থাভাবের মধ্যে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খরচ নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে প্রায় ৭ – ১০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে এই ট্যাবগুলি কেনার জন্য। অর্থাৎ, দুটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ছবি। একদিকে যখন পুরনিগমের ভাঁড়ে মা ভবানি অবস্থা, তারমধ্যে কেন এমন সার্কুলার জারি করা হয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, অতীতে যত পুরবোর্ড হয়ে এসেছে, সব ক্ষেত্রেই মেয়র পারিষদরা রাস্তায় নেমে কাজ করেন। কারণ, তাঁরা সাধারণের জনপ্রতিনিধি। ট্যাব কিনে ঘরে বসে তাঁদের কাজ নয়। তাঁদের প্রত্যেকের চেম্বার রয়েছে, সেখানে তাঁদের আপ্ত সহায়করা কাজ করেন কম্পিউটার নিয়ে।
সেই সঙ্গে আরও প্রশ্ন উঠছে, যেখানে খরচ কমাতে বলা হচ্ছে, ওভারটাইম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, গাড়ির বিল দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ১০০ দিনের কর্মীরা টাকা পাচ্ছেন না। বিভিন্ন চুক্তিভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মীরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে টাকা পাচ্ছেন না, অনেক ক্ষেত্রে বেতন বকেয়া, এই পরিস্থিতিতে কেন এই ধরনের সিদ্ধান্ত। যদিও বিষয়টি নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ।
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের সঙ্গে এই নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই ধরনের বিজ্ঞপ্তির কথা তিনি জানেনই না। যদিও বিরোধীরা এই নিয় কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ জানিয়েছেন, “যাঁরা দিনে ২০২ টাকা পান, সেই ১০০ দিনের কর্মীদের টাকা দিতে পারছে না। সবাই তোলাবাজ। ট্যাব দিচ্ছে ভাল কথা। বাড়িতে ওনাদের ছেলে মেয়েরা ওতে ভিডিয়ো গেম খেলবেন। কিন্তু কর্মচারীরা মাইনে পাবেন না। পুরনিগমের কর্মীদের উচিত এখনই রুখে দাঁড়ানো। যদি নিজেদের আগামী দিনে বাঁচতে হয়। নয়ত এরা আমাদের কাউকে বাঁচতে দেবে না।”
আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar: ঠাকুরবাড়ি যাওয়ার পথে অসুস্থ রাজ্যপাল! মাঝরাস্তায় গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরলেন রাজভবনে