Dipankar Bhattacharya Exclusive: ‘বিজেমূল’ ব্যাক ফায়ার? প্রধান শত্রু চয়নে ভুলেই কি বাংলায় শূন্য বামেরা? ব্যাখ্যায় দীপঙ্কর ভট্টাচার্য

Lok Sabha Election Result: বাংলা তথা গোটা দেশের বামপন্থী রাজনীতিতে অন্যতম পরিচিত মুখ দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে সিপিএম মূল শত্রু নির্বাচনে ভুল করেছিল। বিজেপি ও তৃণমূলকে এক পংক্তিতে ফেলে দেওয়ার অঙ্ক ঠিক হয়নি বলেই মত তাঁর।

Dipankar Bhattacharya Exclusive: 'বিজেমূল' ব্যাক ফায়ার? প্রধান শত্রু চয়নে ভুলেই কি বাংলায় শূন্য বামেরা? ব্যাখ্যায় দীপঙ্কর ভট্টাচার্য
একান্ত সাক্ষাৎকারে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 11, 2024 | 5:12 PM

কলকাতা: লোকসভা ভোট মিটেছে। বাংলায় এবারও খাতা খুলতে পারেনি বামেরা। মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীর মতো বাঘা বাঘা নেতারা পরাস্ত হয়েছেন। ভোটের রেজাল্টে আরও একবার হতাশ বাংলার বহু বাম কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু পড়শি রাজ্য বিহারেই আবার সিপিআইএমএল লিবারেশন থেকে দু’জন সাংসদ যাচ্ছেন দিল্লিতে। বাংলায় কোথায় খামতি থেকে গেল সেলিম-সুজনদের? টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলায় বামেদের ‘হতাশাজনক’ ফলের কারণ বোঝালেন সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।

বিহারে বিজেপির বিরুদ্ধে এক সর্বাত্মক জোট দেখা গিয়েছিল। তাতেই সাফল্য এসেছে সিপিআইএমএল লিবারেশনের। দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের মতে, ‘বিজেপি এবং বিজেপির বিরুদ্ধে কে… এটাই গোটা দেশের চিত্র হয়ে উঠেছে। বিজেপি বিরোধী জোটের মধ্যে যদি আমরা না থাকতাম, তাহলে আমরাও এই ফল পেতাম না। সেক্ষেত্রে এখানে সিপিএম মূল জোটের বাইরে কংগ্রেসের সঙ্গে পৃথক একটি জোট বানিয়েছে। সেটা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রথম সারির প্রধান জোট নয়। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের ফলাফল দুর্বল হতে বাধ্য।’

বাংলা তথা গোটা দেশের বামপন্থী রাজনীতিতে অন্যতম পরিচিত মুখ দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে সিপিএম মূল শত্রু নির্বাচনে ভুল করেছিল। বিজেপি ও তৃণমূলকে এক পংক্তিতে ফেলে দেওয়ার অঙ্ক ঠিক হয়নি বলেই মত তাঁর। দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কথায়, ‘এটা লোকসভা নির্বাচন চলছে। এটা বিধানসভা নির্বাচন চলছে না। এটা না বোঝার কোনও কারণ ছিল না। এটা বুঝতে যদি কারও কোনও সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে তাদের আরও ভাবতে হবে।’

উদাহরণ হিসেবে বাংলার বাইরে বিভিন্ন প্রাদেশিক সমীকরণগুলির কথাও তুলে ধরেন তিনি। বাংলায় যেমন বাম-কংগ্রেস একটি তৃতীয় অক্ষ তৈরির চেষ্টা করেছে, তেমন ছবি দেখা গিয়েছে কেরল, পঞ্জাবেও। সেখানেও বিজেপির বিরুদ্ধে দুটি শক্তি লড়াইয়ে ছিল। কিন্তু দীপঙ্করবাবুর ব্যাখ্যায়, যে সব জায়গায় দু’টি শক্তি বিজেপির বিরুদ্ধে নেমেছিল, সে সব জায়গায় যে কোনও একটি শক্তি বিজেপির বিরুদ্ধে প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে। যেমন কেরলে ইউডিএফ প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে, পঞ্জাবে কংগ্রেস প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে।

বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণে বামেদের তৃণমূলের সঙ্গে জোটে যাওয়া সম্ভব ছিল না, সে কথা মানছেন সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক। তবে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, যেভাবে তৃণমূল ও বিজেপিকে সমান্তরালভাবে বিঁধে প্রচার করা হয়েছে, সেটা ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল বিরোধিতায় বিজেপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দরকার ছিল। বিজেপি ও তৃণমূলকে একাকার করে দেখা, বিজেমূল তত্ত্ব… এসব বাস্তব অবস্থা নয়। এটা অনেকটা ভাবের ঘোরে চুরি করার মতো।’

সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদকের কথায়, সিপিএমের বর্তমান ভোটব্যাঙ্কটি মূলত দক্ষিণবঙ্গের শহুরে মধ্যবিত্ত ভোট। শহুরে মধ্যবিত্ত ভোটের প্রয়োজনীয়তার কথা মানলেও, গ্রামাঞ্চলের ভোটে কেন খামতি, সেটা পর্যালোচনা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘গ্রামাঞ্চলে কেন বিচ্ছিন্নতা হচ্ছে, কেন দুর্বলতা থাকছে, সেটা দেখতে হবে।’ পাশাপাশি তিনি এটাও মনে করেন, বিজেপি বিরোধী প্রধান জোটে না থাকলে নির্বাচনে সাফল্য পাওয়া মুশকিল।