Dilip Ghosh on Bengal BJP: ‘বিজেপিতে কেবল নিরামিষ হয় না, বিরিয়ানিও খাওয়া হয়…সময়ে মিটে যাবে’
Kolkata: বিশ্লেষকরা বলছেন, বিক্ষুব্ধ নেতারা যখন আলাদা একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, তাতে বর্তমান নেতৃত্বকে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। শুরুটা হয়েছিল সায়ন্তন বসুর হাত ধরে।
কলকাতা: বঙ্গ বিজেপির অন্দরে ক্রমেই বাড়ছে ‘বিদ্রোহের’ সুর। সদ্যই, বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বনগাঁয় ন’হাটায় পিকনিকের আয়োজন করেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। ছিলেন, দাদা সুব্রত ঠাকুরও। পিকনিকে ছিলেন সায়ন্তন বসু ও জয়প্রকাশ মজুমদার, রিতেশ তিওয়ারিরাও। একবার বিক্ষুব্ধদের নিয়ে আরও একবার মতুয়াদের সঙ্গে- ইতিমধ্যেই দু’বার বৈঠক করেছেন তিনি। আর সেই পিকনিক নিয়েই এ বার মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণকালে দিলীপ বলেন, “বিজেপিতে কেবল নিরামিষ হয় না। আমিষও হয়। মাছ-মাংস খাওয়া হয়। মাঝেমধ্যে পাত পেড়ে বিরিয়ানিও খাওয়া হয়। দলের নেতারা একসঙ্গে পিকনিক করছেন, খাওয়া দাওয়া করছেন, তাতে তো অসুবিধা নেই। হতেই পারে। হ্যাঁ, জানি, নতুন কমিটি নিয়ে বেশ কিছু ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আসলে মে মাসের পর থেকেই দলের কর্মীদের উপর নানারকম অত্যাচার হয়েছে। সবমিলিয়ে মন খারাপ রয়েছে সকলের। তাই একটু মন খারাপ রয়েছে। সেটা কেটে যাবে। সময় দিলেই কেটে যাবে।”
রবিবারই মতুয়া প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক সেরেছেন শান্তনু ঠাকুর। এর আগেও সায়ন্তন বসু ও জয়প্রকাশ মজুমদাররা শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে গিয়েছিলেন। শনিবার বৈঠক হয় কলকাতাতেও। পরপর বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বৈঠকের আবহেই পিকনিকের আয়োজন করেন শান্তনু। সুর চড়িয়ে সাংসদের মন্তব্য, “বেসুরোর সংখ্যা বেশি হলে সেটাই সুর।” উল্লেখ্য, পিকনিকে ছিলেন না বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার। তিনি রাজ্য পার্টি অফিসে বসে জানিয়ে দিয়েছিলেন, “আমিও বিধায়ক, কিন্তু আমি শান্তনু ঠাকুরদের সঙ্গে নেই।”
দলের অন্দরে ক্ষোভের আঁচ যখন তীব্রতর, তখন এইভাবে ‘বিক্ষুব্ধদের’ চড়ুইভাতি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ প্রসঙ্গে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত ছোটগল্পের চড়ুইভাতি। সামাজিক একটা অনুষ্ঠান, এর মধ্যে রাজনীতি নেই। পরিচিত লোকজন মিলে, আমাদের এখানকার যাঁরা কোর কর্মী ছিলেন, তাঁদের নিয়ে বসা। এটা সংঘবদ্ধতা। তাঁঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার চেষ্টা। বহু কর্মী এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে পাত পেড়ে বসে খাওয়া।” তবে এই চড়ুইভাতির পিছনে কি কোনও ইঙ্গিত রয়েছে? বিজেপির বর্যীয়ান নেতা সাফ বললেন, “একটা তো ইঙ্গিত রয়েইছে। সেটা হল কর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা। দূরে না থাকা।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিক্ষুব্ধ নেতারা যখন আলাদা একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, তাতে বর্তমান নেতৃত্বকে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। শুরুটা হয়েছিল সায়ন্তন বসুর হাত ধরে। সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়েন সায়ন্তন বসু। সঙ্গে সঙ্গেই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান তিনি। তারপরেই যেন শুরু। একের পর এক বিজেপি নেতারা হোয়াটস্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছেন।
এদিকে, মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটের ওপর নির্ভর করে লোকসভা নির্বাচনে যে ফল দেখেছিল পদ্ম শিবির। কিন্তু নতুন রাজ্য ও জেলা কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের জায়গা না দেওয়ায় ভীষণভাবে বিরক্ত শান্তনু ঠাকুর। সংবাদমাধ্যমে সরাসরি এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও কানাঘুষো শোনা গিয়েছে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কাছে অভিযোগ করেছেন শান্তনু। যা নিয়ে জল্পনা রয়েছেই। যদিও, দিলীপ ঘোষের দাবি, দলের পুরনো কর্মীরা এমন কোনও কাজ করবেন না যে দলের অসম্মান হয়।