Dilip Ghosh on Republic Day Tableau conflict: ‘ট্যাবলো নয়, রাজনীতি প্রিয় টিএমসি..পিআইএল করাটা ফ্যাশন’

Kolkata: শুধু মমতাই নয়, বাংলার ট্যাবলোকে অনুমোদন দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-কে চিঠি দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী

Dilip Ghosh on Republic Day Tableau conflict: 'ট্যাবলো নয়, রাজনীতি প্রিয় টিএমসি..পিআইএল করাটা ফ্যাশন'
দিলীপ ঘোষ ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 22, 2022 | 1:34 PM

কলকাতা: ট্যাবলো বিতর্ক থামছে না। আগামী ২৬ জানুয়ারি বাংলার নেতাজি ট্য়াবলো বাতিল করা নিয়ে শুরু হয়েছে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত। বারবার, কেন্দ্রের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলছে ঘাসফুল শিবির। এ বার ট্যাবলো বিতর্কে মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।

দিলীপের কথায়, “কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দুজন সিনিয়র মন্ত্রী গোটা বিষয়টা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন। আমরা জানি, ট্যাবলো নির্বাচিত হয় বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে। ষাট-সত্তরটার মধ্যে ২৩ টা নির্বাচিত হয়েছে। ২৯ টা রাজ্য ট্যাবলো পাঠিয়েছিল। সেখান থেকে ১২ টা বেছে নেওয়া হয়েছে। বিশেষ রাজ্য বা বিরোধী বলে আলাদা করা হয়েছে এমন তো নয়। ”

দিলীপের আরও সংযোজন, “টিএমসির ট্যাবলোর চেয়ে রাজনীতি প্রিয়। তাই জলঘোলা করছে। পিআইএল (পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন) করার একটা ফ্যাশন তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নেই বাংলায়। তাই পিআইএল হয়। কেন্দ্র এ ব্যাপারে স্পষ্ট তাই ওখানে কোনও জটিলতা নেই।”

বস্তুত, প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো বিতর্ককে কেন্দ্র করে জল অনেকদূর গড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলা গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা এই মর্মে দায়ের করা হয়েছে। আগামী সোমবার রয়েছে মামলার শুনানি।

নেতাজির ট্যাবলো বিতর্কের জেরে এ দিন জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। কেন প্রজাতন্ত্র দিবসে বাদ পড়ল নেতাজির ট্যাবলো? রাজ্যের তৈরি ট্যাবলো কেন বাদ দেওয়া হল? সেই প্রশ্ন তুলেই দায়ের হয়েছে এই মামলা। মামলাকারীর দাবি, কেন বাদ দেওয়া হল, সে বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। নেতাজির ট্যাবলো অবিলম্বে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।

শুধু মমতাই নয়, বাংলার ট্যাবলোকে অনুমোদন দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-কে চিঠি দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বিতর্ক চরমে ওঠার পর প্রশ্ন ওঠে, যে ট্যাবলো নেতাজিকে নিয়ে তৈরি, সেটি বাদ দেওয়ার অর্থ নেতাজিকে অসম্মান করা!

এরপরই গত মঙ্গলবার রাজনাথ সিং এই বিষয়ে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর চিঠিতে লেখেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে আমরা শ্রদ্ধা করি। সেই সম্মান স্মারক হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৩ জানুয়ারি পরাক্রম দিবস ঘোষণা করেছেন। এবার থেকে গণতন্ত্র দিবসের উদযাপনের শুরুই হবে ২৩ জানুয়ারি থেকে। চলবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। বর্তমান সরকার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’ ট্যাবলো বাদ দেওয়ার অর্থ যে নেতাজিকে অসম্মান নয়, সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন তিনি।

এবারই প্রথম নয়, এর আগেও প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোর অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তৈরি হয়েছিল। ২০২১ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসেও রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, জল ধরো জল ভরো-র মতো বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্প নিয়ে  ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাব দেয়, সেবারও বাদ পড়ে বাংলার ট্যাবলো।

এই ট্যাবলো বিতর্কের মধ্যেই নেতাজিকে কেন্দ্র করে নয়া ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইট করে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে দিল্লির বিখ্যাত ইন্ডিয়া গেটে গ্রানাইট পাথরে তৈরি নেতাজির একটি পূর্ণবয়ব মূর্তি বসাবে কেন্দ্রীয় সরকার। টুইটে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “যখন সারাদেশ নেতাজির জন্মজয়ন্তী উদযাপনের কথা ভাবছে, তখনই অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আমি জানাচ্ছি, দিল্লির ইন্ডিয় গেটে গ্রানাইটে তৈরি নেতাজির বিশাল একটি পূর্ণবয়ব মূর্তি বসানো হবে। ভারত যে নেতাজির কাছে ঋণী, সেই প্রতীক হিসেবে মূর্তিটি সেখানে থাকবে।”

মোদীর ঘোষণা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ার জন্য টিভি৯ বাংলার তরফে নেতাজি গবেষক পূরবী রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমি বিস্মিত। আমি কিছু বুঝতে পারছি না। নেতাজিকে নিয়ে সরকার কী করতে চাইছেন আমি বুঝতে পারছি। এই ঘোষণার কী কারণ সেটাই আমার কাছে স্পষ্ট নয়। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমি দুঃখিত এবং লজ্জিত।”

আরও পড়ুন: Jai Hind University: চার দেওয়ালের মধ্যে প্রস্তাব, কবে পরিণতি? থমকে জয় হিন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ