Jadavpur University: যা ভাববেন, রোবট তাই করবে! তাক লাগানো আবিষ্কার যাদবপুরে

Jadavpur University: আপনার ভাবনার দাস হয়ে কাজ করবে রোবট। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আপনি যা করবেন, তার হুবহু নকল করবে এই রোবট। তাক লাগানো আবিষ্কারে চমক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

Jadavpur University: যা ভাববেন, রোবট তাই করবে! তাক লাগানো আবিষ্কার যাদবপুরে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 10, 2022 | 4:25 PM

সুমন মহাপাত্র

ধরুন আপনি ভাবছেন, আর আপনার হয়ে সব কাজ করে দিচ্ছে একটা রোবট। আপনাকে বাম হাতের কড়ে আঙুলটা পর্যন্ত নাড়াতে হচ্ছে না। কেমন লাগবে? অবাক হচ্ছেন! মনে মনে বলছেন, ধুর সে আবার হয় নাকি? তাহলে আপনাকে চমকে দেওয়ার মতো খবর দিচ্ছি। বেশি দূর যেতে হবে না, যাদবপুরেই রয়েছে এই প্রযুক্তি। মার্কিন জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে যাদবপুরের (Jadavpur University) এই যন্ত্রের কথা। শুধু মনে মনে ভাববেন, আর আপনার সব কাজ করে দেবে রোবট। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসিটিই বিভাগে চলছে এই যন্ত্রের গবেষণা। ইসিটিই বিভাগে নজরকাড়া সব যন্ত্র রয়েছে। যার মধ্যে কাজ হচ্ছে মূলত তিনটি প্রযুক্তি নিয়ে। প্রথম ক্ষেত্রে আপনার ভাবনার দাস হয়ে কাজ করবে রোবট। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আপনি যা করবেন, তার হুবহু নকল করবে রোবট, আর অন্যটি হল মস্তিষ্কের ভাবনা-চিন্তাকে কম্পিউটারে ফুটিয়ে তোলা।

যাদবপুরের গবেষক পড়ুয়ারা তাক লাগাচ্ছে গবেষণায়। ধরা যাক, একজন অসুস্থ ব্যক্তির হাত নেই। কিন্তু তিনি হাত নাড়তে পারবেন। কীভাবে? যাদবপুরের গবেষণাগারে রয়েছে জ্যাকো রোবট আর্ম। সে হুকুম নেয় মানব মস্তিষ্ক থেকে। আর সেই মতো কাজ করে। অর্থাৎ হাত অকেজো এমন কোনও ব্যক্তির শরীরে যদি এই জ্যাকো আর্ম লাগানো হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের হাতের মতোই সব কাজ করে দেবে জ্যাকো আর্ম। হাতেনাতে তা করেও দেখাচ্ছেন যাদবপুরের গবেষকরা। শুধু মনে মনে ভাবলেই সেই হাত কাজ করছে। ধরুন, সামনে একটা বল আছে। আপনি মনে মনে ভাবলেন সেই বলটা তুলে আপনার বন্ধুর হাতে দেবেন। জ্যাকো আর্ম বলটা তুলে বন্ধুর হাতে দিয়ে দেবে। অদ্ভুত লাগলেও এটাই বিজ্ঞানের খেল। আসলে মানুষের মাথায় লাগানো থাকবে একটা ক্যাপ। সেই ক্যাপ থেকে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে ‘ইচ্ছে’ যাবে কম্পিউটারে। কম্পিউটার এবার নির্দেশ দেবে জ্যাকো আর্মকে। আর আপনার ভাবনার বাস্তবায়ন নিজের চোখে দেখতে পাবেন আপনি। অধ্যাপক অমিত কোনারের তত্ত্বাবধানেই যাদবপুরে তৈরি হয়েছে এই প্রযুক্তির জ্যাকো আর্ম। তিনি বলেন, “কোনও ব্যক্তির হাত ভেঙে গেলে বা হাতের নিউরন নষ্ট হয়ে গেলে এই রোবটই ভাবনার মাধ্যমে হাতের কাজ করে দেবে।”

অন্য একটি প্রযুক্তি কাজ করে মুভমেন্টের ওপর। মানে আপনি যা করছেন, তাকেই হুবহু নকল করে দিচ্ছে রোবট। ধরুন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে কোথাও, মানুষের সেই আগুনে প্রবেশ করা অসম্ভব। কিন্তু পারবে রোবট। এবার রোবটকে গিয়ে কী করতে হবে, তা বাতলে দেবেন আপনি। সোজা করে বললে মানুষ বাইরে থেকে যা করবে আগুনের ভিতরে গিয়ে সেই একই কাজ করবে রোবট। এই রোবট নিয়ে কাজ করছেন যাদবপুরের গবেষক অর্ণব রক্ষিত। তাঁর এই রোবটকে দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত হইহই পড়ে গিয়েছে। অর্ণবের কথায়, “প্রচণ্ড গরমের কোনও জায়গা বা এমন জায়গা যেখানে তেজস্ক্রিয় বিকরণ হচ্ছে, সেখানে কাজ করে আসবে রোবট। আমাদের ধারণা আছে রোবট রুজি রোজগারে আঘাত বসায়। কিন্তু এক্ষেত্রে মানুষ ও রোবট যৌথভাবে কাজ করবে কোনও প্রতিযোগিতা ছাড়াই।”

আরও একটি প্রযুক্তি কাজ করছে মানুষের মাথার প্রতিক্রিয়া নিয়ে। অর্থাৎ কোনও ঘটনায় একজন মানুষের মাথা কীভাবে সাড়া দেয়, তা বুঝতে পারবে কম্পিউটার। আপনার সামনে একটা বিশেষ রাসায়নিক রাখা হল, আপনি তার গন্ধ শুঁকলেন।  কম্পিউটারের পর্দায় ধরা পড়বে মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া, সেখান থেকে বোঝা যাবে আপনার মস্তিষ্ক কতটা কাজ করছে। গবেষকরা বলছেন এখান থেকে অ্যালঝাইমারের মতো রোগ আগে থেকেই শনাক্ত করা যাবে। অ্যালঝাইমারের ক্ষেত্রে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে। কোনও কাজের উদ্যেগ নেওয়ার অনুভূতি কমে যায়। রোজকার জীবনে স্বাভাবিক কাজ করতে সময় বেশি লাগে। এই বিষয়গুলো আগে থেকেই বুঝে নেবে এই প্রযুক্তি। গবেষক ছাত্রী মৌসুমি লাহার কথায়, “মাথায় লাগানো হবে একটা ক্যাপ। আর সেই ক্যাপে থাকবে ডিটেক্টর যা ধরে নেবে আপনার মস্তিষ্কের সাড়া দেওয়া।”