Durga Puja 2021: বোধনের সন্ধ্যাতেই জোর ‘টক্কর’! সিপিএমের বুক স্টল নাকি জাগো বাংলার স্টল, এগিয়ে কে
Durga Puja: বিভিন্ন পুজো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। তবে সে সবে কোনওদিনই বামেরা নেই।
কলকাতা: বামেরা কোনও দিনই পুজোআর্চায় সে ভাবে থাকে না। বরং পুজো মানেই মণ্ডপের বাইরে, রাস্তার ধারে তাদের বইয়ের স্টল। বামপন্থার নানা মন্ত্রকে বইবন্দি করে তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং তারই হাত ধরে জনসংযোগ তৈরি করাই বছর বছর ধরে করে এসেছে তারা। একটা সময় বামেদের স্টল ঘিরে উপচে পড়ত মানুষের ভিড়। এরপর ধীরে ধীরে বাংলায় পটবদল হল। ক্ষমতায় এল তৃণমূল। তাদের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র নামেই স্টল দেওয়া শুরু পুজোর সময়। গত ১০ বছরে উত্তরোত্তর বহরে বেড়েছে এই স্টল। এ বছর তো আরও ঝাঁ চকচকে। বামেরা বলছে, ‘আমাদের জায়গা দখল নেওয়ার চেষ্টা এসব’। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, ‘মানুষ নিজেকে একাত্ম করছে বলেই রাজ্যজুড়ে এই স্টল চলছে।’
বিভিন্ন পুজো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। তবে সে সবে কোনওদিনই বামেরা নেই। পরিবর্তে উৎসবের সময়ে বিভিন্ন মণ্ডপ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বা মোড়ে বুক স্টল থাকে তাদের। আর সেখানে বসেই বিভিন্ন ধরনের বই বিক্রি করেই জনসংযোগ সারেন বাম নেতা-কর্মীরা। ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের বই থাকে। সে তালিকায় সিপিএমের লড়াইয়ের গল্প যেমন আছে, তেমনই আছে এসইউসিআই বা সিপিআইএমএলও।
এ চিত্রের সাক্ষী বরাবর থেকেছে বঙ্গ। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে বামেদের স্টল কমেছে। আর বাড়ছে তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলার স্টল। যদিও সেখানে বইয়ের ভিন্ন স্বাদ অবশ্য পেতে কষ্ট করতে হবে। শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বিভিন্ন বই রয়েছে। সঙ্গে দু’একজন সাংবাদিক বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্রিক বই লিখেছেন, তা-ও রয়েছে। বোধনের সন্ধ্যায় তেমন ভিড়ও নজরে পড়েনি।
বরং সিপিএমের স্টলে ষষ্ঠীর সন্ধ্যাতেই ভিড় ভালই জমেছে। বাংলার পুজো সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে থাকা বুক স্টল যা একদা বামদের দখলে থাকলেও সেখানে আপ্রাণ ভাগ বসানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। তাতে সফল হওয়ার যাবতীয় চেষ্টা করছে বঙ্গের শাসক দল। তবে বইয়ের ভিন্নতা ছাড়া তাতে সাফল্য কিয়দংশে কঠিন, তা বলছেন রাজনীতির কারবারিরা।
যদিও জাগো বাংলার স্টলে ভিড় কিংবা বৈচিত্র্য নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “জাগো বাংলা এক সময় সাপ্তাহিক ছিল। এখন তা দৈনিক হয়েছে। সেখানে মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলছেন তা যেমন থাকছে, তেমনই একটা সম্পূর্ণ খবরের কাগজ বলতে যা বোঝায় তাও এটা। দেশ-বিদেশ থেকে সংস্কৃতির চর্চা, খেলা, কর্মজীবনের জন্য যা প্রয়োজন তাও থাকে। নানা আলোচনা থাকে। সব মিলিয়ে একটা সম্পূর্ণ খবরের কাগজ। মানুষ ভাল ভাবেই গ্রহণ করছেন। উৎসব সংখ্যাতেও তার সাড়া পেয়েছি। শুধুমাত্র কলকাতাতেই আমাদের ২০০টির মতো স্টল রয়েছে। রাজ্যজুড়ে সে সংখ্যাটা অসংখ্য। মানুষ নিজেকে একাত্ম করতে পারছেন বলেই রাজ্যজুড়ে এই স্টল চলছে।”
যদিও সিপিএমের চৌরঙ্গি এরিয়া কমিটির নেতা উৎপল ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “আমরা কোনও দিনই সে ভাবে পুজোর সঙ্গে জড়িত নই। আমরা বরাবরই এ ভাবেই মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ সারি। সবেমাত্র স্টল খোলা হয়েছে। তাতেই মানুষ আসছেন। ভাল সাড়া পাচ্ছি। গতবার সে ভাবে মানুষ রাস্তায় ছিল না। এবার ভালই ভিড়। আমরা আশা করছি আমাদের বক্তব্য, আমাদের সংস্কৃতি এই বইগুলির মধ্যে দিয়ে ভাল ভাবেই মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারব। ওরা আমাদের জায়গা দখল করার চেষ্টা করছে। তবে আমাদের বিক্রি ভালই হচ্ছে।”
ষষ্ঠী থেকেই একাধিক জায়গায় বামেদের বুকস্টলের উদ্বোধন হয়েছে। কোথাও গিয়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, কোথায় গিয়েছেন বিমান বসু। সূর্যকান্ত মিশ্রকে দেখা গিয়েছে যাদবপুর ৮বি স্টলে। বিমান বসু গিয়েছেন কলেজ স্কোয়ারের পুজোর উল্টো দিকে যে সিপিএমের স্টল সেখানে। আনন্দনগর ও সিঙ্গুর বাজারেও সিপিআইএমের বুকস্টল উদ্বোধন হয় এদিন।
এই বুকস্টল প্রসঙ্গে এসইউসিআই-এর কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সমরেন্দ্রে প্রতিহার জানান, “প্রতি বছরই আমরা শারদীয় স্টল করি। ছাত্র যুবদের মধ্যে মার্কসবাদকে জানার আগ্রহ আছে। তা পূরণে সাহায্য করবে আমাদের এই বইগুলি।” সারা বাংলায় প্রায় ৩০০টি স্টল হয়েছে এসইউসিআইয়ের।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: ‘দিনহাটায় উপনির্বাচন, তাই এসব’, গীতালদহে গুলিকাণ্ডে বললেন দিলীপ