Governor: ‘বিধানসভার অন্দরে স্পিকার কৃষ্ণ’, বাজেটে সম্পূর্ণ ভাষণ পাঠের ইচ্ছাপ্রকাশ আনন্দ বোসের

হাওড়া ও বালি পুর নিগম সংক্রান্ত বিলের ভাগ্য কী হবে জিজ্ঞাসা করলে রাজ্যপাল মনোযোগ সহকারে প্রশ্নটি শোনেন এবং ইঙ্গিতপূর্ণভাবে হাসিমুখে বলেন, "ধন্যবাদ।"

Governor: 'বিধানসভার অন্দরে স্পিকার কৃষ্ণ', বাজেটে সম্পূর্ণ ভাষণ পাঠের ইচ্ছাপ্রকাশ আনন্দ বোসের
বিধানসভায় রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস ও অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 23, 2022 | 8:00 PM

কলকাতা: বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব নিয়ে অনেক আগেই রাজ্যে পা রেখেছেন সি.ভি আনন্দ বোস। তবে বিধানসভায় প্রথমবার পা রাখলেন শুক্রবার। আর বিধানসভায় গিয়েই স্পিকারকে ‘কৃষ্ণ’ বলে ভূষিত করলেন রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস। তাঁর কথায়, “বিধানসভার অন্দরে স্পিকার হলেন কৃষ্ণ। উনি রাজ্যপালের থেকে বেশি কিছু।” রাজ্যপালের মুখে এই মন্তব্য শুনে অভিভূত স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমদিন বিধানসভায় এসে প্রায় দু-ঘণ্টা ছিলেন তিনি।

এদিন দুপুর ২.৫৯ মিনিটে সস্ত্রীক বিধানসভায় আসেন রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস। তারপর দু-ঘণ্টা কাটিয়ে বিকেল ৪.৫৮ মিনিট নাগাদ বিধানসভা থেকে বেরোন তিনি। এই সময়ের মধ্যে তিনি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং আসন্ন বাজেট অধিবেশন সম্পূর্ণ ভাষণ পড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করারও বার্তা দেন।

এদিন রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস বিধানসভায় এসে প্রথমেই সংবিধান প্রণেতা ভি.আর আম্বেদকর মূর্তিতে মালা দেন। তারপর সৌজন্যসূচক হিসাবে বিধানসভার তরফে রাজ্যপালকে শাল ও স্মারক উপহার দেওয়া হয়। এরপরই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পিকারকে বিধানসভার কৃষ্ণ বলে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার বার্তা দিয়ে সুষ্ঠুভাবে অধিবেশন চালানোর বার্তা দিয়ে রাজ্যপাল এদিন ‘স্বর্গ থেকে পারিজাত আনার’ কথা বলেন। তিনি বলেন, “বিধানসভায় গণতন্ত্রের সুন্দর ফুল ফুটুক। শাসক ও বিরোধী সবাইকে নিয়ে বিধানসভা। এই ভারসাম্য বজায় রাখার কাজটি করতে হয় স্পিকারকে। বিধানসভার অন্দরে অনেকের মতামত থাকে। স্পিকারকে সবটা শুনতে হয়। স্পিকার ও রাজ্যপাল একসঙ্গে মিলে মিশে কাজ করব।” এপ্রসঙ্গে পূর্বতন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের আমলে আটকে থাকা বিলগুলির ভাগ্য কী জানতে চাওয়া হলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। সাংবাদিকেরা দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা হাওড়া ও বালি পুর নিগম সংক্রান্ত বিলের ভাগ্য কী হবে জিজ্ঞাসা করলে রাজ্যপাল মনোযোগ সহকারে প্রশ্নটি শোনেন এবং ইঙ্গিতপূর্ণভাবে হাসিমুখে বলেন, “ধন্যবাদ।”

হাওড়া পুর নিগম সংক্রান্ত বিল নিয়ে এদিন রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তাঁর মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এরপর রাজ্যপাল বিধানসভায় স্পিকারের ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করেন এবং আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সম্পূর্ণ ভাষণ পাঠ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর বিরোধীদের প্রবল চিৎকার-চেঁচমেচি, হই-হট্টগোলে বাজেট অধিবেশনের শুরুতে সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে পারেননি রাজ্যপাল। এমনকি, ২০২২ সালে প্রবল হই-হট্টগোলের জেরে রাজ্যপাল ভাষণ না দিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইলে শাসকদল বাধা দেয়। তাদের দাবি ছিল, টেবিল না করে রাজ্যপাল বেরোতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত রাজ্যপালকে তাঁর ভাষণ টেবিল করতে হয়েছিল। তারপরই অধিবেশন কক্ষ ছাড়েন তিনি। এবার এই ঘটনার ব্যতিক্রম ঘটবে বলেই আশাবাদী সি.ভি আনন্দ বোস।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই রাজভবনে রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বেরিয়ে তাঁকে ‘জেন্টলম্যান’ তকমা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমস্ত রকম সহযোগিতা করছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।