Abhishek Banerjee: ‘অশান্তির উস্কানি দিলে ফল ভাল হবে না’, অভিষেকের সভার অনুমতি দিলেও একাধিক শর্ত হাইকোর্টের
Abhishek Banerjee: রাজ্যের তরফে সওয়াল করা হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্যের। কিছু হলে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
কলকাতা : তৃণমূল (TMCP) যুব সংগঠনের সভা নিয়ে কাটল জট। শহিদ মিনার চত্বরেই তৃণমূলকে সভা করার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। যেখানে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মীরা, সেই চত্বরেই তৃণমূল সভার অনুমতি চাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছিল। মঙ্গলবার সেই মামলায় মিলল সভার অনুমতি। তবে সভা করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। ওই সভার মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেই সভা থেকে যাতে কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য না পেশ করা হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে।
কী কী শর্ত দেওয়া হয়েছে?
১. সিসিটিভি দিয়ে সভাস্থল মুড়ে ফেলতে হবে।
২. পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. পুলিশ কমিশনারকে মাথায় রাখতে হবে ভবিষ্যতে যেন একই জায়গায় দুটি কর্মসূচির অনুমতি না দেওয়া হয়।
৪. আদালত প্রত্যাশা করে তৃণমূল ছাত্র-যুবর তরফ থেকে অশান্তির কোনও উস্কানি দেওয়া হবে না। যদি এরকম হয়, তার ফল ভাল হবে না।
৫. সভা থেকে কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য পেশ করা যাবে না।
৬. শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে হবে।
৭. সভার পরে সভাস্থল পরিষ্কার করতে হবে।
৮. সভা হয়ে গেলে ব্যারিকেড খুলে ফেলতে হবে।
বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘কলকাতায় আরও অনেক বড় জায়গা আছে। ট্রাফিক সামলাতে পারলে রেড রোডে অনুমতি দিয়ে দিন। আরও প্রচার পাবে।’
মঞ্চ উঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা?
এদিনের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ বা বারবার হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি এসেছে। নওশাদ সিদ্দিকীকে হেনস্থা করা হয়েছে। তাঁর দাবি, এবার মঞ্চ উঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে একই জায়গায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে সভার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী আরও বলেন, ‘মঞ্চ থেকে মাত্র ১১০ মিটার দূরে তৃণমূলকে সভার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হামলা হবেই। মোহনবাগান মাঠে সভার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’
‘কিছু হলে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করবে’
রাজ্য জানিয়েছে, পুলিশ এবং সেনা খতিয়ে দেখে সভার অনুমতি দিয়েছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অবস্থানস্থল ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। বাঁশ এবং টিন দিয়ে ব্যারিকেড করা হবে। সংগ্রামী মঞ্চের দিকে কেউ ঢুকতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে। রাজ্যের তরফে সওয়াল করা হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্যের। কিছু হলে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
অন্যত্র কি এই সভা করা যায় না? প্রশ্ন বিচারপতির
বিচারপতি বলেন, অন্যত্র কি এই সভা করা যায় না? ঘটনা ঘটলে নিয়ন্ত্রণ করার কি দরকার? আগে থেকেই তো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। অযথা সমস্যা তৈরি করার দরকার নেই। রাজ্যকে বিচারপতির প্রশ্ন, টিএমসিপি-র আবেদন জমা পড়ার পরে পুলিশ কি তাদের জিজ্ঞাসা করেছিল যে অন্য কোথাও এই সভা করা সম্ভব কি না?
বিচারপতির প্রশ্নে পুলিশের ওপর আস্থা রাখার কথা বলছে রাজ্য। রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, হিংসা বাংলায় নতুন কোনও ঘটনা নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক জমানাতেই হিংসার ঘটনা ঘটেছে। শুধু এখানে নয়, সব রাজ্যেই ঘটেছে। তবে আদালত পুলিশের ওপর আস্থা রাখুক।