EXCLUSIVE Gopal Dalapati : ‘১০০ পেয়েছে আমার ছাত্ররা’, কীভাবে পানওয়ালা থেকে অঙ্কের মাস্টার হয়ে উঠেছিলেন গোপাল
EXCLUSIVE Gopal Dalapati : “আমার দোকানেরই এক খদ্দেরের মেয়েকে অঙ্ক শিখিয়ে প্রথম আমার প্রাইভেট টিউটর হিসাবে হাতেখড়ি। আমার অঙ্ক শেখানোর কৌশল দেখে সকলে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল।” বলছেন গোপাল।
বাংলাজুড়ে এখন যেন শুধুই গোপাল। সবার মুখে গোপালের নাম। তবে এই গোপাল কিন্তু ঠাকুর ঘরে থাকেন না, ননীও চুরি করে খান না। উল্টে চাকরি চুরির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতার হওয়া কুন্তল ঘোষের দাবি, তিনিই নিয়োগ কেলেঙ্কারির মূল ‘দলপতি’, তিনিই অন্যতম বড় মাথা। কথা হচ্ছে তাপস মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ গোপাল দলপতিকে (Gopal Dalapati) নিয়ে। এদিনই দিল্লিতে থেকে সরাসরি কথা বললেন টিভি-৯ বাংলার ম্যানেজিং এডিটর অমৃতাংশু ভট্টাচার্যের সঙ্গে।
প্রশ্ন : এই মুহূর্তে বাংলার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ও ‘মোস্ট সেলিব্রেটেড’ পার্সন মনে হয় আপনি। ফিল করছেন টেনশনটা? লোকের মুখে মুখে শুধু তো আপনারই নাম।
উত্তর : না! টেনশনের কী আছে। আসলে যে কোনও কারণেই হোক, সৌভাগ্যবশতই হোক বা দুর্ভাগ্যবশতই হোক, সবাই গোপালের নাম করছে। তাতে আমার কোনও অসুবিধা নেই।
প্রশ্ন : আপনি অঙ্কের মাস্টারমশাই ছিলেন। সেখান থেকে এই জায়গায় কী করে এলেন?
উত্তর : আমার দমদম ক্যান্টনমেন্টে একটা পানের দোকান ছিল। ওই দোকান আমার বাবা চালাতেন। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর আমি গ্রামের বাড়ি থেকে ওখানে চলে আসি। চলে এসে ওই পানের দোকানেই বসতাম। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে তখন আমার। সকালে দোকানে অনেক অফিসাররা পান খেতে আসতেন। তাঁরা নানারকম আলোচনা করতেন। তাঁদের দেখে খুব মন খারাপ লাগত। ভাবতাম পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেল, শেষে আমাকে পানের দোকানে বসতে হল! বুঝতে পারতাম পড়াশোনা ঠিকমতো না করলে মান-সম্মান থাকবে না। তাই ওই দোকানে বসে বসে পড়াশোনাও করেছি। উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পার করি। মতিঝিল কলেজে ইকোনমিকস, স্ট্যাটিটিকস আর ম্যাথামেটিকস নিয়ে পড়াশোনা করতে শুরু করি। আমার দোকানেরই এক খদ্দেরের মেয়েকে অঙ্ক শিখিয়ে প্রথম আমার প্রাইভেট টিউটর হিসাবে হাতেখড়ি। আমার অঙ্ক শেখানোর কৌশল দেখে সকলে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিল। এলাকায় পানওয়ালা মাস্টার হিসাবে পরিচিতি পেতে থাকি। অনেকে পড়তে আসে। তাদের অনেকে ওই বছর ফার্স্ট ডিভিশনে পাশও করে। তারপর শয়ে শয়ে পড়ুয়া আমার কাছে পড়তে আসতে শুরু করে। আমার বক্তব্য ছিল ফেল করতে হলে অনেক কষ্ট করতে হবে। পাশ করার জন্য কোনও কষ্ট করতে হবে না। শুধু নিজের নাম লিখতে, বলতে পারলেই হবে। এই প্রচারেই আমার নাম ছিল।
প্রশ্ন : এখন তো চাকরির পরীক্ষাগুলিতে নাম লিখে সাদা খাতা জমা দিয়ে অনেক পাশ করে গিয়েছে। সেখান থেকেই কি স্ট্যাটেজিটা সেখান থেকে শুরু?
উত্তর : না। ওই কৌশল এখানে লাগালে কেউ কোনওদিন আর শিক্ষক হতে পারবে না। আমি হয়তো জীবনে অঙ্কে একশো পাইনি। আমার ছাত্ররা একশোয় একশো পেয়েছে। ফলে ওই স্ট্র্যাটেজিতে যদি কেই শিক্ষক তৈরি হয় তাহলে অঙ্কে একশো তো দূর জীবনটা পুরো জিরো হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : কিন্তু, সেরকম সব শিক্ষক তৈরির ক্ষেত্রে তো আপনার নামটা জড়িয়ে গেল। কী বলবেন?
উত্তর : আমার নাম জড়ানোটা দুর্ভাগ্য মনে না করে সৌভাগ্য মনে করতে পারি। সে কারণেই তো আজ এতকিছু বলতে পারছি।