Red Volunteers Preparedness: কাঁধে একরাশ অভিজ্ঞতা আর সাহস, তৃতীয় ওয়েভে ঝাঁপাতে প্রস্তুত ‘লাল ফৌজ’ও

Red Volunteers Preparedness to Fight Third Wave of COVID-19: দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গোটা রাজ্য জুড়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে রেড ভলিন্টিয়ার। যত দিন গিয়েছে সদস্য সংখ্যা বেড়েছে রেড ভলিন্টিয়ার গ্রুপে। রেড ভলিন্টিয়ার্সদের একটি ওয়েবসাইট (www.redvolunteerswb.com) তৈরি করা হয়েছে।

Red Volunteers Preparedness: কাঁধে একরাশ অভিজ্ঞতা আর সাহস, তৃতীয় ওয়েভে ঝাঁপাতে প্রস্তুত 'লাল ফৌজ'ও
তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে রেড ভলিন্টিয়ার্সরা? অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 04, 2022 | 10:23 PM

কলকাতা : ওমিক্রন(Omicron)-র হাত ধরে রাজ্যে ঢুকে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ (Third Wave of COVID-19)। মঙ্গলবার বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. দীপ্তেন্দ্র সরকার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, “আমরা তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে আছি। কোনও সংশয় নেই।” সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মনে করিয়ে দিচ্ছে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি। হাসপাতালে বেড নেই, পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সিলিন্ডার মিলছে না। হাসপাতালে পরিষেবা পাচ্ছে না রোগী। ধাপার মাঠে লাইন পড়ছে প্লাস্টিকে মোড়া কোভিডে মৃতদেহের। এই তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পরার সঙ্গে সঙ্গে প্রাসঙ্গিকতা বাড়ছে রেড ভলিন্টয়ার(Red Volunteers)-দের। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য তাদের প্রস্তুতি কতটা, তার হদিশ নিল TV9 বাংলার সাংবাদিক।

দ্বিতীয় ঢেউয়ের অভিজ্ঞতা:

দ্বিতীয় ঢেউয়ে কোনও প্রস্তুতি ছিল না রেড ভলিন্টিয়ারদের। একবারে আনকোড়া হাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতে তুলে নিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছিলেন রেড ভলিন্টিয়াররা। কিন্তু এইবার তাদের হাতে আছে প্র্যাকটিকাল অভিজ্ঞতা। গতবারের কাজের রিপোর্টে চোখ বুলিয়ে এই ঢেউয়ের মোকাবিলায় চেকলিস্টে কী কী রাখছেন তা জানান এক রেড ভলিন্টিয়ার। দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের লিড, কোথায় বেড খালি আছে, কোথায় অক্সিমিটার পাওয়া যাবে, এমারজেন্সি অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজ- এই সমস্ত বিষয়ের খোঁজ রেড ভলিন্টিয়ারদের হাতে এসেছিল। এই সেই তালিকা ঝালিয়ে নেওয়ার পালা। কোমর বেঁধে প্রস্তুত হচ্ছে রেড ভলিন্টিয়র।

যাদবপুরের রেড ভলিন্টিয়ার বলেছেন, “পূ্র্ববর্তী কোভিড ঢেউয়ে কাজ করার সময় যেসব কনট্যাক্ট আমাদের কাছে তৈরি হয়েছে সেগুলো যাচাই করছি।” তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার ক্ষেত্রে রেড ভলিন্টিয়ারদের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে SFI এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেছেন, “এই ঢেউয়ে রোগের ধরন যেহেতু পাল্টেছে তাই রেড ভলিন্টিয়ারদের কাজের ধরনেও কিছুটা বদল ঘটবে নিশ্চয়। আগেরবার প্রাণ বাঁচানোটা মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এইবার কোভিড পজিটিভ হলে খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার মতো নিবিড় কাজগুলিতে বেশি মনোনিবেশ করতে হচ্ছে।”

দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় রেড ভলিন্টিয়ারদের ঝাঁপিয়ে পড়া

দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই মাঠে নেমে পড়েছিলেন রেড ভলান্টিয়াররা। গভীর রাতে কাঁধে করে কোভিড আক্রান্তের বাড়ি অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া- সবকিছুতেই উঠে এসে লালবাহিনীর উজ্জ্বল মুখগুলো। তাদের নিয়ে প্রবাদ তৈরি হয়ে গিয়েছিল, “সরকারে নেই দরকারে আছি”। বাড়ির সবাই কোভিড আক্রান্ত হলে তাদের বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য ক্যান্টিন শুরু করেছিলেন তারা। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন কোভিড রোগীর বাড়ির দোরগোড়ায়। আবার কোথাও পিপিই কিট পরে নিজেরাই রোগীকে হাসাপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। কোভিড আক্রান্ত পাড়ায় স্যানিটাইজেশনের কাজও তারা করেছেন।

কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে?

  • পূর্ববর্তী ঢেউয়ে তৈরি হওয়া কনট্যাক্ট ও লিডের ভেরিফকেশন।
  • সেরে ওঠা আগে কোভিড আক্রান্ত কোনও রোগীর সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর তৈরি রাখা, যদি পরবর্তীকালে কোনও দরকার হয়।
  • এমার্জেন্সি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটার ও অক্সিজেন সিলিন্ডার কোথায় পাওয়া যাচ্ছে তার আগে থেকেই তার খোঁজ নেওয়া।
  • মাস্ক, স্যানিটাইজার, পিপিই কিট সংগ্রহ করা হচ্ছে এখন থেকেই।
  • রেড ভলান্টিয়ার পরিচালিত ক্যান্টিন শুরু করার ভাবনাচিন্তা।
  • কোনও এলাকা থেকে কোভিড আক্রান্তের খবর পেলে সেই এলাকার পাশাপাশি নিকটবর্তী এলাকাও স্যানিটাইজ করার পরিকল্পনা করছেন রেড ভলান্টিয়াররা।

রেড ভলিন্টিয়ারের কার্যপদ্ধতির সাংগঠনিক চিত্র:

দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গোটা রাজ্য জুড়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে রেড ভলিন্টিয়ার। যত দিন গিয়েছে সদস্য সংখ্যা বেড়েছে রেড ভলিন্টিয়ার গ্রুপে। রেড ভলিন্টিয়ার্সদের একটি ওয়েবসাইট (www.redvolunteerswb.com) তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন জেলার এলাকাভিত্তিক কয়েকজন রেড ভলিন্টিয়ারদের নাম ও ফোন নম্বর দেওয়া আছে। সেখান থেকে যেকোনও নাগরিক রেড ভলিন্টিয়ারদের যোগাযোগ করতে পারবেন। যাদবপুর এলাকার এক রেড ভলিন্টিয়ার জানিয়েছেন, তাদের একটি এরিয়া অ্যাকশন কমিটি রয়েছে যারা রেড ভলিন্টিয়ারদের এই সমস্ত কাজের খতিয়ান সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্ট DYFI ও SFI জেলা কমিটির কাছে পাঠানো হয় এবং তারপর সেই রিপোর্ট রাজ্য কমিটির কাছে পাঠায় জেলা কমিটি। এইভাবে ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থায় কাজ করে রেড ভলিন্টিয়াররা।

আরও পড়ুন: Gangasagar Mela: গঙ্গাসাগরে যাওয়ার আগে করোনা পরীক্ষা, আউটরাম ঘাটে থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা