Manohar Pukur Murder: স্ত্রী, মেয়ের শরীরে ছুরি চালিয়ে বাড়িতে বসেই ফোন লালবাজারে
Murder in Kolkata: অভিযুক্ত অরবিন্দকে ইতিমধ্য়েই আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে রয়েছে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। এছাড়া কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরাও রয়েছেন সেখানে।
কলকাতা: ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় রাত ন’টা। হঠাৎ লালবাজার কন্ট্রোল রুমের ফোনটা বেজে উঠল। ওপার থেকে একটা পুরুষ কণ্ঠস্বর। শান্ত, নির্লিপ্ত গলা। কিন্তু যা বলল, তা শুনতে আতকে ওঠার মতো। ওপারের শান্ত গলাটা ক্রমে কর্কশ হয়ে আসতে লাগল। জানাল, সে খুন করেছে। অরবিন্দ বাজাজ নামে ওই ব্য়ক্তি নিজের স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা বাজাজ ও মেয়ে অদ্বিকার শরীরে চালিয়ে দিয়েছে রান্নাঘরের ছুরি। দুজন মেঝেতে পড়ে রয়েছে। ফোনে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে বাড়ির ঠিকানাও জানিয়ে দিয়েছিল ওই ব্যক্তি। ৩৩/সি, মনোহর পুকুর রোড। চারতলার ঘরে স্ত্রী ও মেয়েকে ছুড়ি মেরে বসে রয়েছে সে।
মনোহর পুকুর রোড এলাকাটি পড়ে রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার মধ্যে। ফোনটি পাওয়া মাত্র লালবাজার থেকে খবর দেওয়া হয় রবীন্দ্র সরোবর থানায়। সেখান থেকে পুলিশের একটি দল যায় ওই আবাসনটিতে। চারতলার ঘরে ঢোকে পুলিশ। ঘরের এক কোণায় তখনও ঠাঁয় বসে রয়েছে ‘খুনি’। মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আর তারই মধ্যে দুজনের রক্তমাখা শরীর পড়ে রয়েছে।
তড়িঘড়ি দুজনকে এসএসকেএমে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কা বাজাজকে (৪৫) মৃত বলে ঘোষণা করে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি রয়েছে বছর আঠারোর অদ্বিকা।
কেন ওই ব্যক্তি নিজের স্ত্রী ও মেয়েকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করল, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। জানা গিয়েছে, প্রিয়ঙ্কা বাজাজের বাবার সিমেন্টের ব্যবসা ছিল। বছর সাতচল্লিশের অরবিন্দ সেখানেই কাজ করত। কিন্তু ক্রমেই ব্যবসা খারাপ হতে শুরু করেছিল। করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউনের সময় তা আরও খারাপ হয়। কাজ হারান অরবিন্দ। প্রায় দুই বছর হতে চলল কর্মহীন অরবিন্দ বাজাজ। এরই মধ্যে এক আয়ুর্বেদিক ও ভেষজ পণ্য সংস্থার ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেই ব্যবসাতেও খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছিলেন।
এদিকে মেয়ে অদ্বিকাও নীট (NEET) প্রবেশিকার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেখানেও একটি বড় অঙ্কের টাকার ধাক্কা। সব মিলিয়ে কীভাবে খরচ সামলাবেন তা বুঝে উঠতে পারছিল না অরবিন্দ। তার উপর স্ত্রী প্রিয়ঙ্কার সঙ্গেও বৈবাহিক সম্পর্ক খুব একটা টানাপোড়েন চলছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে আর্থিক সমস্যা এবং বৈবাহিক সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের কারণেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে অরবিন্দ।
অভিযুক্ত অরবিন্দকে ইতিমধ্য়েই আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে রয়েছে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। এছাড়া কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরাও রয়েছেন সেখানে। তবে খুনের প্রকৃত কারণ নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ। অভিযুক্ত অরবিন্দ বাজাজকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার আরও গভীরে গিয়ে তদন্ত করতে চাইছেন আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন : Gariahat Double Murder: কাকুলিয়া জোড়া খুনে সরাসরি জড়িত, ডায়মন্ডহারবার থেকে গ্রেফতার আরও ১! এখনও অধরা ভিকি