‘অনড়াম্বর’ মমতাকে বিঁধতে বিজেপির নয়া ভোট কৌশল কি ‘ভাইপো’!

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, তৃণমূলের অন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান এবং দাপট নিয়ে যে "ক্ষোভের আগুন" ধিকি ধিকি জ্বলছে তাতে ক্রমাগত হাওয়া জোগাতেই এই কৌশল বিজেপির।

'অনড়াম্বর' মমতাকে বিঁধতে বিজেপির নয়া ভোট কৌশল কি 'ভাইপো'!
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Dec 06, 2020 | 7:21 PM

কলকাতা: রাজনৈতিক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে দুটো কথা বললে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে দশটা কথা বলছেন বিজেপি নেতারা। রবিবার রেড রোডের সভায় ফের নাম না-করে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন বঙ্গ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস। সেই আক্রমণ কখনও কখনও ব্যক্তিগত স্তরের। অনাড়ম্বর জীবনযাপনে অভ্যস্ত মমতাকে বিড়ম্বনায় ফেলতে কৈলাস অভিযোগ করেন,”ভাইপোর চশমার দাম জানেন? ২৫ লাখ টাকা। ৭৫ হাজার টাকা দামের জুতো পড়েন। আর পিসির পায়ে ৭৫ টাকার চটি।” অর্থাৎ মমতা এবং অভিষেকের “জীবনযাত্রার তফাৎ” নিয়েও সাধারণ মানুষের মনে দাগ কাটার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি।

রবিবার জোরালো প্রত্যাঘাত এসেছে তৃণমূলের দিক থেকেও। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে দলীয় সভা থেকে কৈলাসের নাম না- করে বলেন,”এখানে একজন এসেছে চম্বল থেকে। চম্বলের ডাকাত। বেশ বড়সড় চেহারা। কিন্তু এখানে কিছুই করতে পারবে না।” শনিবার ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংও নিশানা করেছিলেন অভিষেককে। আপাতত বিজেপি শিবিরের লক্ষ্য রাজনীতির মঞ্চ থেকে এই ভাইপো সিরিজকে আম জনতার অলস আড্ডার বিষয়বস্তু করে তোলা।

তাই গত বেশ কিছুদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক আক্রমণে মমতার থেকে অভিষেককে প্রাধান্য দিচ্ছেন বিজেপির নেতারা। অন্য বিরোধী দলগুলিও প্রায় একই পন্থা নিয়েছে। অভিষেক নিজেও সেটা বলেছেন প্রকাশ্যে। মাত্র ক’দিন আগেই তিনি একটি জনসভায় বলেছিলেন, “সবাই আমাকে ভাইপো ভাইপো করে আক্রমণ করছে। সাহস থাকলে আমার নাম ধরে আক্রমণ করুন।”

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই আজ আমি এখানে, তৃণমূলকে জেতাব, গোর্খাল্যান্ডও হবে: গুরুং

বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য কৌশলগত ভাবেই এই “ভাইপো” লাইন ছাড়তে রাজি নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, তৃণমূলের অন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান এবং দাপট নিয়ে যে “ক্ষোভের আগুন” ধিকি ধিকি জ্বলছে তাতে ক্রমাগত হাওয়া জোগাতেই এই কৌশল বিজেপির। দলে অভিষেক – জমানায় প্রশান্ত কিশোরদের কর্মপদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুলে ইতিমধ্যেই একাধিক নেতা, বিধায়ক সম্মান- অসম্মানের প্রশ্নে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন। “ভাড়াটে” লোকদের রাজনৈতিক জ্ঞান শুনে দল করতে রাজি নন বলে “বিদ্রোহ” করেছেন একাধিক অভিজ্ঞ জনপ্রতিনিধি। বিধানসভা ভোটের আগে সেই সংখ্যাটা আরও অনেক বাড়বে বলে দাবি করছে বিজেপি। তাই তৃণমূলের ভিতর থেকে “নীরব বিক্ষুব্ধদের” দলত্যাগে উদ্বুদ্ধ করতে কৈলাসের মতো কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা বলছেন, “বাংলায় এখন ভাইপোর সংবিধান চলছে। আম্বেদকরের নয়।”