SSC Agitation: অভিষেকের আশ্বাসে কি চাকরির দরজা খুলবে?

SSC Agitation : আজ ৫০৪ দিনে পড়েছে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা বলছেন, এর আগেও একাধিকবার প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। তাই, আশার আলো দেখলেও চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

SSC Agitation: অভিষেকের আশ্বাসে কি চাকরির দরজা খুলবে?
নিয়োগের দাবিতে পথে চাকরিপ্রার্থীরা। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 31, 2022 | 7:27 PM

কলকাতা : আন্দোলনে নেমেছেন ৫০০ দিনের বেশি। চাকরির দাবিতে সরব হয়েছেন। তাঁদের আন্দোলন তুলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। কিন্তু, মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর শাসকদলের তরফে চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ চোখে পড়েছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তাহলে এতদিন পর কি আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা? এতদিনের আন্দোলনের পর কি নিয়োগপত্র হাতে পাবেন তাঁরা? কী মনে করছেন চাকরিপ্রার্থীরা? অভিষেকের এই আচমকা সক্রিয়তাকে কী চোখে দেখছে বিরোধীরা? সত্যিই কি অভিষেকের পক্ষে চটজলদি সমস্যার সমাধান সম্ভব?

আজ ৫০৪ দিনে পড়েছে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন। তাঁরা চাইছেন যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হোক। অভিষেক গত শুক্রবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা বলেছেন, বৈঠক ইতিবাচক। তারপরও অবশ্য আন্দোলন মঞ্চ ত্যাগ করেননি চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এবং যতদিন না চাকরি পাচ্ছেন তাঁরা, ততদিন আন্দোলন জারি রাখবেন।

অভিষেকের ওই উদ্যোগ নিয়ে আজ আন্দোলনকারীরা বলেন, “নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। নিয়োগের দাবি নিয়েই তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, অতি দ্রুত আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন।” এসএসসি নিয়ে মামলা হাইকোর্টে চলছে। এই অবস্থায় অভিষেকের উদ্যোগে কি সমস্যার সমাধান সম্ভব? চাকরিপ্রার্থীরা বললেন, “ধর্নামঞ্চ থেকে একসঙ্গে কোনও মামলা হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে অনেকে মামলা করেছেন। তাঁদের মামলাগুলি চলছে। তবে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগে আদালতের কোনও বাধা নেই।” একইসঙ্গে তাঁরা বলেন, “এতদিনে একাধিকবার অবশ্য প্রতিশ্রুতি মিলেছে। কিন্তু, সমস্যার সমাধান হয়নি। অভিষেক আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী। তবে খুশি তখনই হব, যখন এখান থেকে নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরব।”

চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে হাইকোর্টে সওয়াল করছেন আইনজীবী তথা বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। অভিষেকের এই আশ্বাসকে তিনি কীভাবে দেখছেন? প্রশ্ন শুনেই তিনি বলেন, “অবাস্তব কথা বলছেন। চাকরিপ্রার্থীদের ভাঁওতা দিচ্ছেন।” নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, “চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, মেধাতালিকা লঙ্ঘন করে তাঁদের জায়গায় অন্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। এখন এদের চাকরি দিতে হলে, যাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাদের সরিয়ে শূন্যপদ তৈরি করতে হবে। আর যদি বলে সবাইকে চাকরি দেব, তাহলেও আইনি সমস্যা হবে। কারণ, তখন তুমি এত শূন্যপদ ঘোষণা করোনি। আর এখন এত শূন্যপদ এল কীভাবে? প্রশ্ন উঠবে।” অভিষেকের এই বৈঠক চাকরিপ্রার্থীদের ভুল বোঝানো ছাড়া অন্য কিছু নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অভিষেকের এই বৈঠককে কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রবীণ আইনজীবী অরুণাভ ঘোষও। তিনি বলেন, “চাকরি নিয়ে অভিষেকের বলার কোনও এক্তিয়ার নেই। উনি প্রশাসনের কেউ নন। তাছাড়া সবাইকে চাকরি দেবেন কী করে। রাজ্য সরকারের কাছে টাকা আছে না কি।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখনও চাকরিপ্রার্থীদের লড়াই শেষ হল না। সেখানে অভিষেকের এই আশ্বাস কি ফলপ্রসূ হতে পারে? তৃণমূলের মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বললেন, “অভিষেক একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। সেই আইনি জটিলতা কাটিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য কিছুটা সময় লাগবে।” কিন্তু, বিরোধীরা যেভাবে অভিষেকের উদ্যোগের বিরোধিতা করছে, তার সমালোচনা করেন তিনি।

রাজনৈতিক চাপানউতর। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন। সব পেরিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা কবে মিটবে, সেটাই দেখার।