‘প্যান্টের জিপ খোলা পকসো নয়, এমন পর্যবেক্ষণে সহমত পোষণ করছি না’
কেন্দ্রের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল কে কে বেণুগোপাল এই পর্যবেক্ষণকে 'বিপজ্জনক' বলে আখ্যা দেন।
মুম্বই: বম্বে হাইকোর্টের (Bombay High Court) পরপর দুটি পর্যবেক্ষণ। প্রথম পর্যবেক্ষণে বিতর্কের দানা বেঁধেই ছিল, দ্বিতীয় পর্যবেক্ষণে সেই বিতর্ক আরও জোরালো হল। বৃহস্পতিবার ভিন্ন একটি যৌন নিগ্রহ মামলায় বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ জানায়, নাবালিকার হাত ধরা এবং প্যান্টের জিপ খুলে অভিযুক্তর যৌনাঙ্গ প্রদর্শন পকসো আইনে যৌন নির্যাতন বলা যাবে না। কয়েক দিন আগে এমনই একটি মামলায় ওই নাগপুর বেঞ্চ জানিয়েছিল, ত্বক থেকে ত্বক স্পর্শ না করে জামার উপর স্তনে হাত দিলে, অপরাধীকে পকসো আইনে অভিযুক্ত করা যাবে না। এই দুই পর্যবেক্ষণই দিয়েছেন বম্বে হাইকোর্টের বর্ষীয়ান মহিলা বিচারপতি পুস্পা গনেড়িওয়ালা।
বম্বে হাইকোর্টের প্রথম রায়ে তড়িঘড়ি স্থাগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল কে কে বেণুগোপাল এই পর্যবেক্ষণকে ‘বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দেন। তারপরও বৃহস্পতিবার আরও একটি ‘বিতর্কিত’ রায় এল বম্বে হাইকোর্ট থেকে। এর ফলে পকসো আইনের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহালের একাংশের। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সুপ্রিম কোর্ট হচ্ছে হাইকোর্টের উপরে এপিল কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে মান্যতা দেওয়াই হাইকোর্টের কর্তব্য। সেটাকে কখনই ছোটো করে দেখা উচিত নয়। যখন সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে সেটাই মেনে চলা কর্তব্য।
আরও পড়ুন: আমরা এই সময়ে এসে উল্টো পথে হাঁটছি: রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের যৌন নির্যাতন থেকে সুরক্ষা আইনের (পকসো) সংজ্ঞাই কার্যত বদলে যেতে পারে বম্বে হাইকোর্টের এই দুই পর্যবেক্ষণে। এর ফলে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে আরও বেশি উদ্বেগ তৈরি হবে অভিভাবকদের মনে। এমন পর্যবেক্ষণে উদ্বেগে বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, পকসো আইনের একটা সামাজিক উদ্দেশ্য আছে। নাবালক বা নাবালিকাদের যৌন নিগ্রহ থেকে বাঁচানোর জন্য এই আইন। বিচার করার সময় বিচারপতিকে এটা মাথায় রাখতে হবে। এটা অন্য আইনের মতো নয়।
আরও পড়ুন: একজন বাবা হিসেবে আজ আমি সন্ত্রস্ত: মীর আফসার আলি
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, “নাবালিকার হাত ধরা বা প্যান্টের জিপ খোলা যে পকসো নয়, এমন পর্যবেক্ষণে আমি সহমত হতে পারছি না। এই দুটো সমান অপরাধের মধ্যেই পড়ে। বড় কথা সুপ্রিম কোর্ট প্রথম মামলার রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।”