ট্যাংড়ার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা কেন নিয়েছিলেন দেবাঞ্জন? সরষে ফুল দেখছেন তদন্তকারীরা

ভুয়ো ভ্যাক্সিনেশন শিবির কাণ্ডের তদন্তে নেমে যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন দেবাঞ্জন দেবের হাত অনেক দূর বিস্তৃত।

ট্যাংড়ার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা কেন নিয়েছিলেন দেবাঞ্জন? সরষে ফুল দেখছেন তদন্তকারীরা
আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 25, 2021 | 6:14 PM

কলকাতা: টিকা প্রতারক দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb)  বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। শুক্রবারই কসবা থানায় (Kasba False Vaccination Camp) লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন ওই ব্যবসায়ী।

ভুয়ো ভ্যাক্সিনেশন শিবির কাণ্ডের তদন্তে নেমে যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ছে। তদন্তের গতি যত এগোচ্ছে, বেরিয়ে আসছে গুণধরের একের পর এক তথ্য। আর জাল গোটাতে গোটাতে চোখে রীতিমতো সরষে ফুল দেখছেন তদন্তকারীরা। নানান কথা বলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতে কোনও কসুরই করেননি দেবাঞ্জন। নিয়েছেন একের পর এক তৃণমূল নেতার নামও।  তদন্তকারীরা মনে করছেন দেবাঞ্জন দেবের হাত অনেক দূর বিস্তৃত। তাঁর পিছনে প্রভাবশালী যোগের সম্ভাবনাও বিস্তর!

ভুয়ো টিকার তদন্তে নেমে একের পর এক তৃণমূলে নেতার নামও প্রকাশ্যে এসেছে। রাজনৈতিক সচেতকদের বক্তব্য যে সমস্ত নেতাদের সঙ্গে দেবাঞ্জনকে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে তাঁর কীরকম সম্পর্ক, কতটা ঘনিষ্ঠতা, তা পুলিশি তদন্তের বিষয়। কিন্তু এরই মধ্যে প্রকাশ্যে আনল দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে কসবা থানায় মৌখিকভাবে ট্যাংড়ার এক ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ জানাতে আসেন। তাঁর বক্তব্য, কলকাতা পুরসভার কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে বাইপাস সংলগ্ন একটি জায়গায় কমিউনিটি হল তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৯০ লক্ষ টাকা আদায় করেন। তবে এখনও সেখানে কমিউনিটি হল তৈরি হয়নি।

দেবাঞ্জনের কীর্তি প্রকাশ্যে আসার পরই থানার দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। তিনিও যে প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তা ভালোই আঁচ করতে পারেন। কসবা থানার পুলিশ ওই ব্যবসায়ীকে লিখিত অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। ভুয়ো টিকার চক্রী দেবাঞ্জন দেবের প্রতিটি কথাতেই অসঙ্গতি। জেরায় উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

তদন্তে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র কলকাতা পুরসভার নকল পদ ব্যবহার করে নয়, হলোগ্রাম ব্যবহার করেও আর্থিক লেনদেন ও নানান সুবিধা নিয়েছিলেন দেবাঞ্জন দেব। একাধিক ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে কসবা থানার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কলকাতা পুরসভার স্ট্যাম্প ব্যবহার করে চেক দেওয়া হয়েছিল ব্যবসায়ীকেও।

আরও পড়ুন: ‘এবার বাংলায় ভ্যাকসিন সিন্ডিকেট’, সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার দিলীপ

তদন্তে জানা যাচ্ছে, দেবাঞ্জন দেব কলকাতার দুটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে ছিলেন। একটা পুরসভার নাম দিয়ে। আর সেই অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে পুরসভার নগর পরিকল্পনা বিভাগের দুজন শীর্ষ কর্তার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে পুরসভার কাছে এই খবর আসে। ওই দু’জন শীর্ষকর্তা সম্পর্কে তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এরপর কলকাতা পুরসভার নগর পরিকল্পনা বিভাগের ডিজি বিশ্বজিৎ মজুমদার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করেন। তিনি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখেন যে দুজন আধিকারিকের নাম বলা হয়েছে, তাঁদের বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই ওই বিভাগে। যাঁদের অস্তিত্বই নেই, তাঁদের নামে কীভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা হল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।