কলকাতায় ব্রিটেন ‘স্ট্রেন’ নিয়ে ধোঁয়াশা! আধিকারিকরা বলছেন, “রিপোর্ট আসেনি”

বেলেঘাটা আইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে এক জন যুবকের অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে। বাকিরা সুস্থ রয়েছেন।

কলকাতায় ব্রিটেন 'স্ট্রেন' নিয়ে ধোঁয়াশা! আধিকারিকরা বলছেন, রিপোর্ট আসেনি
করোনাভাইরাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 09, 2021 | 1:33 PM

কলকাতা: সকালের উদ্বেগ দুপুরে বদলে গেল ধোঁয়াশায়। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আর‌ও চারজনের দেহে ব্রিটেনের স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে বলে শনিবার সকালে খবর মিলেছিল। তাতে সম্মতির সিলমোহর দিয়েছিলেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের এক শীর্ষ কর্তা। তিনি জানিয়েছিলেন, আইডি’তে চিকিৎসাধীন যে ছ’জনের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সে পাঠানো হয়েছিল। তার মধ্যে চারজনের দেহে ব্রিটেনের স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে। একজনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে এবং একজনের রিপোর্ট আসা বাকি রয়েছে।

স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী অবশ্য রিপোর্ট প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেননি। দুপুরে সেই বক্তব্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ বলতে শুরু করেন, রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। উল্টে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে দ্বিতীয় দফায় করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব নিয়ে নিশ্চিত হ‌ওয়ার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল। সম্ভবত এসটিএমের পাঠানো রিপোর্টে চারজন পজিটিভ এবং একজন নেগেটিভ হয়েছেন। তাতে অবশ্য ধোঁয়াশা কাটেনি।

দুপুরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অধ্যক্ষ অণিমা হালদার বলেন, “পাঁচজনের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। বাকি চারজন ভাল আছেন। চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের দেহে ব্রিটেনের স্ট্রেন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই তাঁদের ভর্তি করানো ওয়ার্ডে হয়েছে। তবে সরকারি ভাবে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।”

কবে রিপোর্ট আসবে?

দিন পাঁচেক আগে ব্রিটেন থেকে আগত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক থেকে বেড়ে সাত হয়েছিল। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “রিপোর্ট আসতে দিন দশেক সময় লাগবে।” ঘটনাচক্রে ততদিনে হাইকোর্টে দায়ের হ‌ওয়া জনস্বার্থ মামলা বিচারাধীন গঙ্গাসাগর মেলাও পার হয়ে যাবে। ফলে মেলায় এই ঘটনার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।

গত ২০ ডিসেম্বর লন্ডন ফেরৎ যাত্রীদের নিয়মানুযায়ী করোনা পরীক্ষা করা হলে এক জনের দেহে ভাইরাসের অস্বিস্ত মেলে। আক্রান্ত যুবক কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসক-পুত্র। তাঁর দেহে করোনার ব্রিটেন স্ট্রেন আছে কিনা, তা পরীক্ষার্থে নমুনা কল্যাণী ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অফ বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সে পাঠানো হয়।

তাঁর রিপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যেই কল্যাণী থেকে স্বাস্থ্যভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বড়দিনের ছুটি থাকলেও একজনের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স করে রিপোর্ট পাঠাতে সমস্যা হয়নি। কিন্তু সেই যুবকের সূত্র ধরে বাকি পাঁচজনের রিপোর্ট এখন‌ই দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কল্যাণীতে অবস্থিত এন‌আইবিএমজি’র অধিকর্তা সৌমিত্র দাস‌ও।

বস্তুত ব্রিটেন ফেরৎ কেউ করোনা পজিটিভ হলে, তাঁদেরকে আইডিতে রেখেই ‘জিনোম সিক্যুয়েন্স’ করা হয়। আক্রান্ত ছ’জনের মধ্যে তিন পুরুষ ও এক জন মহিলার রিপোর্টে দেখা যায়, তাঁদের দেহে ব্রিটেন স্ট্রেনের অস্বিত্ব রয়েছে। প্রসঙ্গত, দিন চারেক আগেই করোনা আক্রান্ত এক ব্রিটিশ অভিনেত্রীকে নিয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সামনে চরম ‘নাটক’ হয়।

বনিতা সিন্ধু নামে ওই অভিনেত্রী কলকাতায় শ্যুটিং করতে এসেছিলেন। নিয়মানুযায়ী তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামতেই চাননি অভিনেত্রী। তিনি বর্তমানে মুকুন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর দ্বিতীয় পর্যায়ের রিপোর্ট আসা বাকি।

আরও পড়ুন: নেতাজীর জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী কি কলকাতায়? ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখল সাউথ ব্লক