কেন গৃহীত হল না শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগপত্র?

কেন বিধিসম্মত নয়, সেটা জানিয়ে অধ্যক্ষ অর্ডার পাস করবেন।

কেন গৃহীত হল না শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগপত্র?
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 17, 2020 | 2:49 PM

কলকাতা: আপাতত গৃহীত হল না শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) পদত্যাগপত্র। কারণ, তাঁর পদত্যাগপত্রটি বিধিসম্মত নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন আইনজ্ঞ তথা বিধানসভার অধ্যক্ষ।বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কেন বিধিসম্মত নয়, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ অর্ডার পাস করবেন বলে জানা গিয়েছে। বিধানসভা অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগপত্র এখনও বিবেচনাধীন। এ নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত না হওয়ার বিষয়ে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শুভেন্দু অধকারী। তিনি বলেন, “সারাদেশে পদত্যাগী বিধায়কের বিধায়ক পদ খারিজ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে শাসক দল। আর এখানে বিদ্রোহী বিধায়কের বিধায়ক পদ বাঁচাতে মরিয়া রাজ্যের শাসক দল। এ যেন পুরো উলট পুরাণ। গোটা বিষয়টি আমি উপেক্ষা করছি। নৈতিকভাবে আমিই ঠিক। অধ্যক্ষ বড় জোর আমার সই যাচাই করার জন্য ডাকতে পারেন আমাকে। সে ক্ষেত্রে আমি যাব।”

বিগত কয়েক দিন ধরে বঙ্গ রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে শুভেন্দু। রাজ্যবাসীর কাছে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে অনেকটা সময় নিয়ে নিয়েছেন তিনি। প্রথমে মন্ত্রিত্ব ছাড়েন, এরপর বুধবার বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেন এবং বৃহস্পতিবার তৃণমবলের সদস্যপদও ছেড়ে দেন ‘নন্দীগ্রামের নায়ক’। এর অব্যবহিত পরেই তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য জল্পনা দ্বিগুণ করে। শুভেন্দু বলেন ‘তাঁর জনশক্তি রয়েছে, আর সেটাই আসল শক্তি’। এবার যে যাবতীয় জল্পনা সত্য করে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন শুভেন্দু-  তা একপ্রকার স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছে। কিন্তু কবে, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে বিধানসভার রিসিভিং সেকশনে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। যদিও তা এখনও গৃহীত হয়নি।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, আগামী ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহর সভাতেই আরও বেশ কয়েকজন অনুগামীকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু। তবে শেষপর্যন্ত শুভেন্দুর মানভঞ্জনের চেষ্টা করেছিল তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব, এমনটাও শোনা যাচ্ছে।

চলতি মাসের ১ তারিখে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার লাগোয়া একটি বাড়িতে বৈঠকে বসেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভোট কৌশলী পিকেও। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে তৃণমূল দাবি করলেও রাতারাতি বদলে যায় পরিস্থিতি। ২ ডিসেম্বরই সৌগত রায়কে এসএমএস করেন শুভেন্দু। তিনি জানান, “খবর সংবাদমাধ্যমে পৌঁছে গিয়েছে। এরপর একসঙ্গে কাজ করা অসম্ভব।” এরপরই তৃণমূলের অন্দরে শুভেন্দুকে নিয়ে সব আশা শেষ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: ‘শুভেন্দুবাবুর সহায়তা কেন্দ্র’ গেরুয়া থেকে ফের নীল-সাদা, কার্যালয় পুনরুদ্ধার তৃণমূলের

উল্লেখ্য, শুভেন্দু নাম না করে তৃণমূল নেতৃত্বকে বারবার আক্রমণ করে গিয়েছেন বিগত কয়েক মাস ধরে। এরপর তৃণমূল নেতৃত্বও পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে। গত সোমবারই জলপাইগুড়ির সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, “১০ বছর পার্টির হয়ে খেয়ে, ১০ বছর গর্ভমেন্টের হয়ে, গর্ভমেন্টের সবটা খেয়ে, ইলেকশনের সময় এর সঙ্গে ওর সঙ্গে বোঝাপড়া করলে, আমি টলারেট করি না।” রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা নেত্রীর এই বার্তা যে শুভেন্দু-সহ বিজেপিমুখী অনান্য নেতাদের উদ্দেশে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।