AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

কোভিডের ২৪ হাজারের ওষুধ বিকোচ্ছে ৯০ হাজারে! TV9 বাংলার স্টিং অপারেশনে চক্র ফাঁস হতেই কড়া স্বাস্থ্য দফতর

TV9 বাংলার (TV(Bangla) স্টিং অপারেশনের জের। কোভিড (COVID) চিকিৎসায় ব্যবহৃত সরঞ্জামের কালোবাজারি রুখতে নেওয়া হল কড়া ব্যবস্থা। রেমডিসিভির (Remdesivir) ব্ল্যাকে নজরদারি স্বাস্থ্য দফতরের।

কোভিডের ২৪ হাজারের ওষুধ বিকোচ্ছে ৯০ হাজারে! TV9 বাংলার স্টিং অপারেশনে চক্র ফাঁস হতেই কড়া স্বাস্থ্য দফতর
প্রতীকী চিত্র।
| Updated on: May 14, 2021 | 4:47 PM
Share

কলকাতা: TV9 বাংলার (TV(Bangla) স্টিং অপারেশনের জের। কোভিড (COVID) চিকিৎসায় ব্যবহৃত সরঞ্জামের কালোবাজারি রুখতে নেওয়া হল কড়া ব্যবস্থা। রেমডিসিভির (Remdesivir) ব্ল্যাকে নজরদারি রাখছে স্বাস্থ্য দফতর। অক্সিজেন সিলিন্ডার , অক্সিমিটার-সহ একাধিক সরঞ্জামে নজর রাখা হচ্ছে। কালোবাজারি বরদাস্ত নয়,  স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।

এবিষয়ে প্রথমেই বলা রাখা ভাল, কোভিডের চিকিৎসায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম যে বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে, তা সত্য নয়। অক্সিফ্লোমিটার, অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ আরও কিছু আনুষাঙ্গিক জিনিস-যেগুলো মূলত হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের চিকিৎসায় কাজে লাগে, তা বাজারে যে কোনও ওষুধের দোকানে গেলেই, ব্যবসায়ীই বলে দিচ্ছেন ‘নেই’। এই মুহূর্তে সরকারি বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, ১ লক্ষ ১০ হাজারের বেশি মানুষ হোম আইসোলেশনে রয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই সরঞ্জামগুলি ব্যবহৃত হয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দোকানে এই সরঞ্জাম কিনতে গিয়ে রোগীর আত্মীয়রা শুনছেন ‘না’ শব্দটাই। আর যাওবা সেগুলি বাজারে বিক্রি হচ্ছে, তা অত্যন্ত চড়া দামে। রেমডিসিভির কালোবাজারি নিয়ে একটি স্টিং অপারেশন করে TV9 বাংলা।

গত কয়েক দিনে দেখা গিয়েছে, রেমডিসিভির মতো ওষুধ নিয়েও খোলাবাজারে চলছে রমরমা কারবার। সূত্র মিলেছিল দমদমের পুর হাসপাতালের ফার্মাসিতে। TV9 বাংলার স্টিং অপারেশনে ধরা পড়ে কালোবাজারির সেই ছবি। ওষুধের জন্য অসহায় আর্তি, কিন্তু দমদমের পুর হাসপাতালের এই ফার্মাসিতে রেমডিসিভির নেই। তবে কর্মীরা জানিয়েছিলেন, ব্যবস্থা হতে পারে। ফার্মাসির এক কর্মী তাঁর এক সহকর্মীর নম্বর দিলেন। ফোন করা হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। দ্বিতীয় জনও সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন রেমডিসিভিরের স্টক নেই।

তবে তিনি আরও জানিয়েছিলেন, রেমডিসিভির মিলতে পারে প্রাইভেটে। অর্থাৎ ফেলো কড়ি বাঁচাও প্রাণ। ফার্মাসির এই কর্মীর থেকেই মিলল প্রাইভেট চেনের আরেক লিঙ্ক। দ্বিতীয় ব্যক্তি ফোনে জানিয়েছিলেন, “প্রাইভেটে নিতে চান। তাহলে ব্যবস্থা করে দেব। বেলগাছিয়ার এক জন ব্যক্তি নিয়েছিলেন, তাঁর লাগেনি। ওঁকে আপনার নম্বরটা দিয়ে দিচ্ছি। ওঁ আপনাকে ৫-১০ মিনিটের মধ্যে ফোন করবে। আপনি তাঁর সঙ্গে কথা বলে নেবেন ঠিক আছে।”

কথা মতো ফোনও আসে TV9 বাংলার প্রতিনিধির কাছে। ফোনে জানানো হল, ওষুধ মিলতে পারে, তবে দাম পড়বে প্রায় চার গুণ। ওই ব্যক্তির কথোপকথন, “আমি দাদা ব্ল্যাকে কিনেছিলাম ১৫ হাজার টাকা করে।” আমাদের প্রতিনিধি প্রশ্ন করেন, “পার ভাওয়েল ১৫ হাজার টাকা?” উত্তর আসে, ” হ্যাঁ, আমি তাতেই দিয়ে দেবো। আমার কাছে ৬ টা আছে, আপনার চাইলে নিতে পারেন। আপনার পজিটিভ রিপোর্ট আর আধার কার্ডটা পাঠাতে হবে। দমদমের দিকে আসবেন, আমি দিয়ে দেবো।”

অর্থাৎ ২৪ হাজার টাকার রেমডিসিভিরের জন্য লাগবে ৯০ হাজার টাকা। এত দাম দিয়ে সাধারণ মানুষ বড়জোর তিনটে ভাওয়াল কিনতে পারবেন। কিন্তু কালোবাজারির চক্রী তো তিনটে দিতে নারাজ। অগত্যা ফোনে আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়ে দিলেন, “দাদা সকালেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে ৬টা।” অর্থাৎ তিনটে কেনা যাবে না, কিনতে হবে ৯০ হাজার টাকা দিয়ে ৬টাই।

আরও পড়ুন: ২০ মিনিটই ডেকে আনল বিপদ, মাত্র চার ঘণ্টায় মৃত্যু ১৫ জন করোনা আক্রান্তের

কোভিডে মৃত্যুমিছিল চলছে, এই সুযোগে কালোবাজারি চালাচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ। মানুষের জীবনের মূল্য তাঁরা ঠিক করে ফেলেছেন পলকেই। TV9 বাংলার ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল সেই ছবি। খবর সম্প্রচারিত হতেই নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর।

একটা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে সমস্ত ওষুধ আপাতত সেন্ট্রালি সরবরাহ হচ্ছে।

তবে এক্ষেত্রেও দেখা দিচ্ছে একটি সমস্যা। কিছু বেসরকারি হাসপাতাল রোগীর পরিবারকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে দিচ্ছেন হাতে। তা নিয়েই খোলাবাজারে যাচ্ছেন রোগীর আত্মীয়রা। যা কালোবাজারিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। এই পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য রেমডিসিভির ব্যবহার সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

আবার সেই নিয়মও মানছে না অনেক বেসরকারি হাসপাতাল। অনেক ক্ষেত্রেই প্রেসক্রিপশনে রেমডিসিভির লিখে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের বক্তব্য, দেখা যাচ্ছে, অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই এত ওষুধের মাত্রা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। ফলে সে বিষয়টিও রুখতে অন্য চিন্তাভাবনা করছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।