CBSE: ২০২২ সালে দশম, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় একাধিক বদল, বড় ঘোষণা বোর্ডের
CBSE: বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বোর্ডের ওয়েবসাইটে। স্কুলগুলিকে ইতিমধ্যেই পরীক্ষার্থীর তালিকা দিতে বলেছে বোর্ড।
কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন ছন্দে ফেরার পথপ্রদর্শক হতে চলেছে সিবিএসই। ২০২২ সালে ক্লাস টেন ও ক্লাস টুয়েলভের বোর্ড পরীক্ষা হবে দুই পর্যায়ে। আঠেরোই অক্টোবরের মধ্যে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা হয়ে যাবে। বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বোর্ডের ওয়েবসাইটে। স্কুলগুলিকে ইতিমধ্যেই পরীক্ষার্থীর তালিকা দিতে বলেছে বোর্ড। তবে সেই তালিকায় সংশোধনের কোনও সুযোগ নেই।চূড়ান্ত তালিকাই জমা দিতে বলা হয়েছে স্কুলগুলিকে।
প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা অনলাইনে হবে। স্কুলগুলিই পরীক্ষা নেবে। সিবিএসই (CBSE) প্রশ্নপত্র স্কুলগুলিকে দিয়ে দেবে। বিষয়ভিত্তিক এককথায় উত্তরের প্রশ্ন হবে। প্রতি পরীক্ষার দেড় ঘণ্টা ধরে হবে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা। সেখানে বিস্তারিত উত্তর দিতে হবে। প্র্যাকটিক্যালের নম্বরও সেই পরীক্ষায় যোগ হবে। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় সিলেবাসের অর্ধেক থেকে প্রশ্ন আসবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি অর্ধেক থেকে প্রশ্ন আসবে। কোনওকারণে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়লে প্রথম দফায় পরীক্ষার মূল্যায়নে জোর দেওয়া হবে। তেমনই নভেম্বরেও দেশজুড়ে স্কুল খোলা না গেলে, দ্বিতীয় দফার মূল্যায়নে জোর দেওয়া হবে।
এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একাধিক বদলও আসতে পারে। দায়িত্ব পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নব নিযুক্ত সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন।
তিনি মনে করেন, একটি পরীক্ষার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন না করে, পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তাতে অনেক বেশি মেধার ভিত্তিতে একজন পরীক্ষার্থীর মূল্যায়ন সম্ভব। এর আগে অবশ্য এই সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে সিবিএসই, আইসিএসসি।
সিবিএসই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা একই শিক্ষাবর্ষের শেষে দু’ভাগে নেবে বোর্ড। দুটি পরীক্ষা হবে দু’রকম ভাবে। প্রথম দফার পরীক্ষা হবে ফ্লেক্সিবল শিডিউলে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এমনকী বিদেশেও যে সব স্কুল রয়েছে, তাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তাই এই ব্যবস্থা। দ্বিতীয় দফায় কোথায় পরীক্ষা হবে, মানে কোথায় কে পরীক্ষা দিতে যাবে, তা স্থির করে দেবে বোর্ড। প্রশ্নপত্র দু’ঘণ্টার।
ঠিক এরকম পন্থায় না হলেও, কেবল যে একটি মাত্র পরীক্ষার মাধ্যমের পরীক্ষার্থীর মূল্যায়ন করতে চাইছে না উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদও, সেটা স্পষ্ট করে দেন তিনি। সিবিএসই অবশ্য একাধিক নিয়মে পরিবর্তন এনেছে। নব নিযুক্ত সভাপতি অবশ্য এতটাও বিস্তারিত আলোচনা করেননি এ বিষয়ে। চিন্তাভাবনা একেবারেই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে।
চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “একটা পরীক্ষা না করে পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা নেওয়া হলে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন অনেক বেশি সূক্ষ্ম হবে।” উল্লেখ্য, উচ্চ মাধ্যমিকের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, টেস্ট পরীক্ষার পরই বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষা নেয়। কোভিড পরিস্থিতিতে মূল্যায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করছে পর্ষদ, সংসদ এবং শিক্ষা দফতর।
তবে পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষার পক্ষে মত দিচ্ছেন অনেক শিক্ষাবীদই। তাঁদের মতে, পরীক্ষার্থীরা ধারাবাহিক মূল্যায়নের মধ্যে থাকবে। তাঁদের অনুশীলন আরও বেশি সূক্ষ্ম থাকবে। একটি পরীক্ষার মাধ্যমে অনেক সময়েই সঠিক মূল্যায়ন নির্ধারিত হয়। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর ওপর ধারাবাহিক নজর থাকবে শিক্ষকদেরও। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে পড়ুয়ারা অনেক বেশি মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সেটি যাতে তাদের ওপর বাড়তি চাপ না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষাবীদরা।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবীদ পবিত্র সরকার বলেন, “প্রশাসনিক স্তরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা নিশ্চয় ভেবেচিন্তে একথা বলছেন। এতে পরীক্ষার্থীদেরও সুবিধা হয়, প্রশাসনিক স্তরেও সুবিধা হয়। কারণ চূড়ান্ত মূল্যায়ন তো সংসদ থেকেই হবে।” এদিন, পরীক্ষা পদ্ধতির নয়া পরিকল্পনার পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রীদের রিভিউ সমস্যা মেটানোরও একশো শতাংশ আশ্বাস দিয়েছেন নতুন সভাপতি।