চাষাবাস করে খাওয়া ওই দুই ব্যক্তির ব্যাগে ছিল না কোনও তেজস্ক্রিয়! জানিয়ে দিলেন বিজ্ঞানীরা
Kolkata: তবে এই ধরনের তেজস্ক্রিয় মৌল কীভাবে তাঁদের কাছে এল, সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করছে সিআইডি তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
কলকাতা: কলকাতার তিন নম্বর মতিলাল কলোনি থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তুটি কোন তেজস্ক্রিয় মৌল ক্যালিফোর্নিয়াম নয়। জানাল ভবা রিসার্চ সেন্টার ।
গত ২৫ তারিখ রাতে দমদমের ৭১ নম্বর মতিলাল কলোনি থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। সিআইডি তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, সেটি তেজস্ক্রিয় মৌল ক্যালিফোর্নিয়াম হতে পারে। সেই মৌলটিকে পরীক্ষার জন্য ভবা অ্যাটমিক রিসার্চ ইন্সস্টিটিউটে পাঠালে তার প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে সেটা কোন তেজস্ক্রিয় মৌল ক্যালিফোর্নিয়াম নয়।
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার। রাতে কলকাতার তিন নম্বর মতিলাল কলোনি থেকে দু’জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে আড়াইশো গ্রামের বেশি ধাতব পদার্থ। প্রাথমিকভাবে সিআইডি মনে করছেন, পরমাণু বোমা তৈরির অন্যতম উপকরণ ক্যালিফোর্নিয়াম নামক এই ধাতুটি।
আন্তর্জাতিক বাজারে এক গ্রামের দাম প্রায় ১৭০ কোটি টাকা। ধৃতদের কাছ থেকে মোট চারটি ধাতুর টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়াম ছাড়াও ইরিডিয়াম আছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের নাম শৈলেন কর্মকার এবং অসিত ঘোষ। তাঁরা দুজনেই হুগলি সিঙ্গুর এবং পোলবার বাসিন্দা।
তবে এই ধরনের তেজস্ক্রিয় মৌল কীভাবে তাঁদের কাছে এল, সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করছে সিআইডি তদন্তকারী আধিকারিকেরা। প্রতারণা-সহ অ্যাটমিক এনার্জি ধারায় মামলা রুজু করা হয়। ধৃত অসিতের বাড়িতে যায় পোলবা থানার পুলিশ। অসিতের স্ত্রী রীনা ঘোষ জানান, জমিজমা, চাষ নিয়েই থাকতেন তাঁর স্বামী। সম্প্রতি জমি বেচাকেনার কাজে যুক্ত হন। আট দশ দিন আগে তারকেশ্বর যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হন। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি।
ফোনে তাঁর সঙ্গে শেষ কথা হয় গ্রেফতার হওয়ার এক দিন আগে। বুধবার থেকে আর কোন কথা হয়নি।তিনি মাঝে মধ্যে জমি কেনাবেচার জন্য বেরোতেন, তবে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই স্বামীর গ্রেফতারির খবর জানতে পারেন রীনা। এলাকায় সাধারণ ছাপোষা মানুষ হিসাবেই পরিচিত আসিত। তবে ধৃতদের সঙ্গে কোনও সংগঠনের যোগ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ধৃতরা আদৌ ওই ধাতব পদার্থ কোথা থেকে নিয়ে এসেছিলেন, তাও জানার চেষ্টা চলছে।
এ প্রসঙ্গে সোমবার মেদিনীপুরে এ বিষয়ে মন্তব্যও করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার মেদিনীপুর শহরে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই বলেন, “রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গকে আন্তর্জাতিক স্তরের উগ্রবাদীরা নিজেদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করছে।” রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, “পুলিশ সমস্ত বিষয়টিকে হালকাভাবে নেয় আর এর ফলেই বাংলাদেশ থেকে উগ্রবাদীরা এসে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের জাল বিছোয়।” তবে এসবের পরও প্রশ্ন উঠছে, তাহলে ওই ধাতব পদার্থ কী? সেটি আদৌ কোন কাজে লাগে? নেহাতই চাষবাস করে খাওয়া মানুষগুলোর কাছে ওই ধাতব এল কীভাবে? তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আরও পড়ুন: ‘বাংলা এখন উগ্রবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল’, হঠাত্ কেন এমন বললেন দিলীপ ঘোষ?