Mahua Moitra: মমতার কথাতেও নদিয়ায় মেটেনি শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! মহুয়াকে কাঠগড়ায় তোলা লিফলেট পৌঁছল মন্ত্রীদের ঘরে

TMC Nadia: বৃহস্পতিবার চলছিল বিধানসভার অধিবেশন। বেশ কয়েক মন্ত্রী অধিবেশন শেষে যখন নিজেদের কেবিনে আসেন, তখন টেবিলের উপর দেখতে পান হলুদ রঙের লিফলেট। দলের সাংসদের বিরুদ্ধে এ রকম লিফলেট দেখে অস্বস্তি পড়েন অনেক মন্ত্রীই।

Mahua Moitra: মমতার কথাতেও নদিয়ায় মেটেনি শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! মহুয়াকে কাঠগড়ায় তোলা লিফলেট পৌঁছল মন্ত্রীদের ঘরে
মহুয়া মৈত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 16, 2022 | 11:29 PM

কলকাতা: খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাবধান করেছিলেন। কিন্তু তার পরও যে নদিয়া জেলায় তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটেনি, তা জানান দিল একটি লিফলেট। কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের উদ্দেশে লেখা ওই লিফলেট বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এসেছে। সেই লিফলেটই জানান দিচ্ছে নদিয়া জেলায় শাসকের অন্দরের গোলামাল এখনও চলছে। ওই লিফলেটে মহুয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে। জনৈক প্রতিকার মণ্ডলের নামে প্রচার করা হয়েছে ওই বিতর্কিত লিফলেটে। তা ঘিরে বৃহস্পতিবার সরগরম হল বিধানসভা। নদিয়ার মহুয়া বিরোধী নেতার একাংশই এই লিফলেট কাণ্ডের পিছনে রয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও এ নিয়ে কোনও পক্ষেরই কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। যদিও ২০২১ সালে একটি প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে নিতে বলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সকলের সামনেই মহুয়া মৈত্রকে এ ব্যাপারে সাবধান করেছিলেন তিনি। তাতে যে লাভ হয়নি জানান দিলে এই লিফলেট।

বৃহস্পতিবার চলছিল বিধানসভার অধিবেশন। বেশ কয়েক মন্ত্রী অধিবেশন শেষে যখন নিজেদের কেবিনে আসেন, তখন টেবিলের উপর দেখতে পান হলুদ রঙের লিফলেট। কৌতুহলবশত অনেকেই তা পড়তে শুরু করেন। দলের সাংসদের বিরুদ্ধে এ রকম লিফলেট দেখে অস্বস্তি পড়েন অনেক মন্ত্রীই। প্রতিকার মণ্ডলের নামে প্রচারিত এই লিফলেট কেউ বা কারা অধিবেশন চলাকালীন মন্ত্রীদের ঘরে রেখে এসেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১১ সালের পর তৃণমূলে যোগ দেওয়া মহুয়ার উদ্দেশে ওই লিফলেটে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, ভাঙড়, কেশপুরের মতো একাধিক আন্দোলনের সময় না থাকার খোঁটা দেওয়া হয়েছে। কমিরপুরের বিধাযক থেকে কৃষ্ণনগরের সাংসদ হওয়া এবং তার পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় যে তাঁকে নদিয়া জেলার দায়িত্ব দিলেন, সেই বিষয়ও উল্লেখিত হয়েছে। মহুয়া জেলা সভাপতি হওয়ার পর তাঁর ব্য়বহারে সে জেলার বহু পুরনো নেতা অতিষ্ট বলে অভিযোদ করা হয়েছে লিফলেটে। সেই বিরক্ত নেতারা দল এবং নেত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে মুখ বুজে সব সহ্য করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে ওই লিফলেটে। এর পর বেশ কয়েকটি ঘটনা ধরে মহুয়ার ভূমিকার সমালোচনা করা হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে। কৃষ্ণনগরের সাংসদের কিছু পদক্ষেপে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

লিফলেটে মহুয়াকে প্রশ্ন করা হয়েছে, করিমপুরের বর্তমান বিধায়ককে কেন দিনের পর হেনস্থা করা হয়। কিসের স্বার্থে তাঁকে অপমান করা হচ্ছে, তাও জানতে চেয়েছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমানকে হারানোর জন্য তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যকে নির্দল হিসাবে মহুয়া দাঁড় করিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে লিফলেটে। পলাশিপাড়া হাসপাতালের দেওয়াল তোলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে কর্মীদের নামে মহুয়া মৈত্রই মামলা করিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ রকম বেশ কয়েকটি অভিযোগ ক্রমান্বয়ে উল্লেখ করা হয়েছে লিফলেটে। যা শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে। সেই লিফলেটের একেবার শেষে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, “গুটিকতক OC, IC, BDO দের নিয়ে আপনি ২৪শে লড়াইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছেন। আপনার সঙ্গে ২৪-এ দেখা হবে তো?” প্রসঙ্গত, মহুরা বিরুদ্ধে নদিয়ার তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, তাঁর সাংসদ এলাকায় সে সব বিধানসভা পড়ে, সেই বিধায়কদের আড়ালে রেখে বিডিওদের মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করেন। লিফলেটের শেষে এই বিষয়টিই উল্লেখিত হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

কিছুদিন আগেই তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ করেছিলেন মহুয়া। বিধায়কদেরও অভিযোগ ছিল, তাঁদের এড়িয়েই এলাকার কাজ করেন মহুয়া। সে সবের রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার প্রকাশ্য এই লিফলেট।