করোনা আতঙ্ক: নিমরাজি রাজ্য, ভিড়ে ‘বেলাইন’ রেল!

পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয়, যে পরিষেবা 'বেলাইন' হয়ে যাওয়ার সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে পূর্ব রেল কর্তপক্ষ।

করোনা আতঙ্ক: নিমরাজি রাজ্য, ভিড়ে 'বেলাইন' রেল!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 02, 2021 | 10:19 PM

কলকাতা: হাওড়া ও শিয়ালহদ, দুই শাখাতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে নিত্যযাত্রীদের সংখ্যা। পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয়, যে পরিষেবা ‘বেলাইন’ হয়ে যাওয়ার সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে পূর্ব রেল কর্তপক্ষ। কারণ বর্তমানে যে সংখ্যক স্টাফ স্পেশাল চলছে, তাতে ভিড়ের পরিমাণ এতটাই যে নিজেদের কর্মীদের সুরক্ষিত রাখা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছে রেল। আর যদি তেমনটা না করা যায়, তবে আবারও মসৃণ পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রেই প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিতে পারে। রেলের তরফে অবশ্য রাজ্যকে সরকারিভাবে লোকাল ট্রেন চালুর আবেদন জানানো হয়েছে, কিন্তু সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় স্টাফ স্পেশাল লোকাল সংখ্যা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

খাতায় কলমে লোকাল ট্রেন না চললেও নেহাত কম সংখ্যায় স্টাফ স্পেশাল চলছে না দুই শাখায়। সাধারণ যাত্রীরাও টিকিট কেটে অবলীলায় সেই ট্রেনে উঠতে পারছেন। কিন্তু তাও ‘লোকাল ট্রেন চলছে না’ সরকারি খাতায়। অন্যদিকে সময় যত গড়াচ্ছে, স্টাফ স্পেশালের উপর যাত্রীদের চাপও বাড়ছে। জুন ও জুলাই মাসে যাত্রী বৃদ্ধির হার চমকে দেওয়ার মতো। ফলে সম্ভব হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ববিধি মানা। এই অবস্থায় করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে নিজেদের কর্মীদের জন্য চিন্তিত রেল আধিকারিকরা। রেল কর্মীরা নতুন করে আক্রান্ত হলে দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা খুব সমস্যা হবে।

ফলে যাত্রীসংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্পেশাল ট্রেন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। যদিও স্বাভাবিক সময়ে যে সংখ্যক ট্রেন চলাচল করে, সম পরিমাণ ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের পর্যাপ্ত অনুমতি নেই বলে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের এক উচ্চপদস্থ রেল আধিকারিক। সকালে কিংবা সন্ধ্যার দিকে বাড়তি ট্রেন চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে হাওড়া এবং শিয়ালদা শাখাতে যাত্রী সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। পাল্লা দিয়ে ট্রেনের সংখ্যা বাড়লেও তা কোনওভাবেই পর্যাপ্ত নয়। বিভিন্ন সময়ে যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ট্রেন বাড়ানোর দাবিতে। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার রেলের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে নবান্ন এখনও সম্মতি দিচ্ছে না। রাজ্যের সায় না মেলায় ট্রেনের সম্পূর্ণ পরিষেবা চালু করতে পারছে না রেল। তাই তৃতীয় ঢেউয়ের আগে নিজেদের কর্মীদের নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় পড়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

চিন্তার কারণ স্বাভাবিক। স্টাফ স্পেশাল চালুই করা হয়েছিল রেল কর্মীদের যাতায়াতের জন্য। আপাতত তাতে সকলেই চড়েন। একই সঙ্গে রেলের কর্মীরাদেরও স্টাফ স্পেশাল লোকাল ট্রেনে চেপেই যাতায়াত করতে হয়। নতুন করে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে এবং রেল কর্মীরা তাতে সংক্রমিত হলে দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা আদৌ কতটা স্বাভাবিক রাখা যাবে, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছে পূর্ব রেল। আরও পড়ুন: উপনির্বাচন কি দুয়ারেই? মঙ্গলবার থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু করতে বলল কমিশন