সনিয়াকে পাশে নিয়ে শীতেই বড় পরিকল্পনা মমতার, মনে করালেন, ‘এক একটা দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ’

Mamata Banerjee Speech 21 July: একুশের মঞ্চ থেকে কিছুটা ঘুরপথে যেন মমতাও বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপি বিরোধী যুক্তফ্রন্টে কংগ্রেসকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি

সনিয়াকে পাশে নিয়ে শীতেই বড় পরিকল্পনা মমতার, মনে করালেন, 'এক একটা দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ'
অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 21, 2021 | 5:56 PM

কলকাতা: বিজেপিকে ঠেকানো কংগ্রেস বিহীন কোনও তৃতীয় ফ্রন্টের কাজ নয়। এ কথা আগেই বলতে শোনা গিয়েছিল এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারকে। পরে একই কথার পুনরাবৃত্তি শোনা যায় তৃণমূলে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের মুখে। সরকারি না বললেও, একুশের মঞ্চ থেকে কিছুটা ঘুরপথে যেন মমতাও বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপি বিরোধী যুক্তফ্রন্টে কংগ্রেসকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। কারণ খোদ কংগ্রেস চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধীকে পাশে নিয়েই ব্রিগেডে সভার আয়োজন করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন মমতা। তবে অবশ্যই যদি কোভিড মিটে যায়, তবেই।

করোনার কারণে গত বছরের ন্যায়ে এ বছরও একুশে জুলাই ভার্চুয়ালি উদযাপন করেছে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বিজয়োৎসব পালন করেনি এ রাজ্যের শাসকদল। তবে ২০২৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে শীতকালে ব্রিগেডে একটি বড় সভার আয়োজন তৃণমূল করতে পারে, এমনই সম্ভাবনার কথা এ দিন উল্লেখ করেছেন মমতা। সেই সভায় ভারতের তামাম বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রধানদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে, জানান তিনি।

মমতা বলেন, “যদি কোভিড মিটে যায় এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তাহলে শীতকালে আমরা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বড় সভার আয়োজন করব। যেখানে শরদ পাওয়ারজি, সনিয়াজি থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ, কেরল, তামিলনাড়ু, দিল্লি ইত্যাদি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে আসব। আমরা সবাই মিলে মানুষের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতির কথা মনে করাব। লোকসভা নির্বাচনে এখনও আড়াই বছর বাকি। কিন্তু ভোটের আগে আমরা জোট করলে কোনও লাভ হবে না। এক একটা দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আসুন আমরা জোট বেঁধে দেশকে আলো দেখাই।”

আজকের মঞ্চ থেকে শুধুমাত্র আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রস্তুতির কথাই নয়, বরং বিরোধী জোটের ‘নিউক্লিয়াস’ হওয়ার যোগ্য দাবিদার যে তিনিই, সেই ইঙ্গিতও কার্যত বিরোধী নেতাদে দিয়ে রেখেছেন মমতা। কেননা বাকি বিরোধীদের এক ছাতার তলায় আনার ক্ষেত্রে তিনি যে উদ্যোগ দেখাচ্ছেন, এই মুহূর্তে গোটা দেশে তেমন সক্রিয়তা আর কোনও নেতা বা নেত্রীর দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। দিনকয়েক পরে তিনি যখন দিল্লি সফরে যাবেন, তখন বৈঠকের আয়োজন করার কথা বলেও যেন মমতা বড় রাজনৈতিক ইশারা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

তাঁর সাফ কথা, “মৃত্যুর পর ডাক্তার ডাকলে কিন্তু কোনও লাভ নেই। রোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি তা আটকানোর বন্দোবস্ত করা যায়, তাহলে কিন্তু রোগী সেরে উঠতে পারে। তাই এখনই সময়। একটাও দিন নষ্ট করা যাবে না। আমি সব রাজ্যের নেতাদের আবেদন জানাবো, যান, নিজের নিজের দলকে বোঝানো শুরু করুন। সবাই একসঙ্গে কাজ করার জন্য এক ফ্রন্ট গঠন করুন। আর এই ফ্রন্ট নিয়ে এখন থেকেই পরিকল্পনা করুন। আমিও দিল্লি যাচ্ছি। অধিবেশন যখন চলে সবার সঙ্গে দেখা হয়। আমিও বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। শরদ পাওয়ার আছেন, চিদম্বরমজি আছেন, আপনারা ভাবুন। যদি একটা বৈঠক ডাকতে পারেন, তাহলে আমরা একসঙ্গে বসে কথা বলতে পারি। আলোচনা করতে পারি যে দেশ কোন দিকে যাচ্ছে।”

তবে এই প্রসঙ্গেই উল্লেখ্য়, গত লোকসভা ভোটের মাসকয়েক আগেও একই চেষ্টা চালিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। যেখানে ব্রিগেডের মঞ্চে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন দেশের সকল বিরোধী বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের। যদিও লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, সেই মঞ্চে সনিয়া গান্ধী বা রাহুল গান্ধীরা উপস্থিত ছিলেন না। যদিও প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল কংগ্রেস। বলাই বাহুল্য, উনিশে মমতার সেই উদ্যোগে কোনও লাভ হয়নি। তাই এ বার চব্বিশের অনেক আগে থেকেই বিজেপি বিরোধী যুক্তফ্রন্ট গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। যার শঙ্খনাদ হয়ে গেল একুশের মঞ্চ থেকেই। আরও পড়ুন: ‘আমার ফোনও তো ট্যাপ হয়েছে স্যর’, পেগাসাস কাণ্ডে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চান মমতা