আলাপনকে ছাড়ছে না রাজ্য, কারণ দর্শিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘নরমে-গরমে’ চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর!
রাজ্য ছাড়ল না আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Alapan Bandyopadhyay ) । দেওয়া হল না রিলিজ অর্ডার। না ছাড়ার কারণ দর্শিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (PM Narendra Modi) চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)।
কলকাতা: রাজ্য ছাড়ল না আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Alapan Bandyopadhyay ) । দেওয়া হল না রিলিজ অর্ডার। না ছাড়ার কারণ দর্শিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (PM Narendra Modi) চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। অর্থাৎ জল্পনা সত্যি করে, কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে দিল্লি যাচ্ছেন না আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। নর্থ ব্লকে রিপোর্ট করলেন না তিনি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, নবান্নে পৌঁছে গিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্য এমনকি সংশ্লিষ্ট আমলার সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই কেন পদক্ষেপ করা হল, তা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, এই নির্দেশ অসাংবিধানিক ও নজিরবিহীন। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছেন তিনি। চার পাতার এই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে কলাইকুণ্ডার সেদিনের বৈঠকে অনুপস্থিতির কারণও। পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন মেয়াদ বৃদ্ধির সম্মতি দেওয়ার চার দিন পরই কেন বদলির নির্দেশ?
গত বছর অক্টোবর মাসে মুখ্যসচিব পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। ৩১ মে অবসর গ্রহণের কথা ছিল আলাপনের। কিন্তু এর পরও তাঁকে মুখ্যসচিব পদে রেখে দেওয়ার জন্যে কেন্দ্রকে প্রস্তাব পাঠায় রাজ্য। কেন্দ্র তাতে সম্মতিও দেয়। গত ২৪ তারিখই যখন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন মাসের মেয়াদ বৃদ্ধির সম্মতি দেওয়া হল, তার চার দিন পরই কেন বদলির নির্দেশ? এই চিঠিতে সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাঁচ পাতার এই চিঠিতে আইনি সংস্থানগুলো উল্লেখ করে, কয়েকটি ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ২৮ তারিখ ইয়াস নিয়ে কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর রিভিউ বৈঠক। সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল রিপোর্ট দিয়েই দিঘা চলে যান। বৈঠকে পুরো সময় ছিলেন না। কিন্তু পরবর্তীতে সেটা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কলাইকুণ্ডার বৈঠক নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তার সঙ্গে কি এই বিষয়ের কোনও যোগসূত্র রয়েছে? সেই ইঙ্গিত দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে জানান, ২৮ তারিখ অর্থাৎ বৈঠকের দিন ইয়াস বিপর্যস্ত এলাকা আকাশপথে ঘুরে দেখার কথা ছিল তাঁর। সে কর্মসূচি আগেই নির্ধারিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেকথা স্পষ্ট উল্লেখ করেন চিঠিতে। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই যে তিনি দিঘা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, তা চিঠিতে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। চিঠির শেষ পাতায় রাজ্যের স্বার্থে বেশ কিছুটা নরম সুরেই বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: আজই কি তাঁর পাকাপোক্ত অবসর? এক নজরে বাংলার শীর্ষ আমলা আলাপনের আলাপ-পরিচয়
সোমবার সকাল ১০টার মধ্যেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লির নর্থ ব্লকে কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতরে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু গেলেন না আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য জানিয়েছে, ‘রাজ্য কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই সময় কোনও মতেই মুখ্যসচিবকে ছাড়া সম্ভব নয়’। তবে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করে, সেটাই দেখার।