হেলমেট নেই, মত্ত হয়ে বাইক সফর! বর্ষবরণের রাতে গ্রেফতার হাজারো
মাথায় হেলমেট নেই। নেশায় বুঁদ হয়ে গাড়ি চালানো সহ ট্রাফিক না মানা, এমন একাধিক ঘটনায় শহরে গ্রেফতার হাজারেরও বেশি।
কলকাতা: বর্ষবরণের (New Year Celebration) রাতে বেলাগাম উদযাপন। মাথায় হেলমেট নেই। নেশায় বুঁদ হয়ে গাড়ি চালানো সহ ট্রাফিক না মানা, এমন একাধিক ঘটনায় শহরে গ্রেফতার হাজারেরও বেশি।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বর্ষবরণের আনন্দে মেতে উঠেছে রাজ্যের মানুষ। বাড়ির ছোট থেকে বুড়ো সকলেই পিকনিকের মেজাজে শহরের ভিড়ে মিশেছেন। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে শুক্রবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান এবং পার্কগুলিতে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। ভিক্টরিয়া, ইকো পার্ক, তারামণ্ডল, ময়দান এবং শহরের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সদলবলে ২০২১ সাল উদযাপনের জন্য ভিড় জমছিল সকাল থেকেই। অন্যান্য বছরের মত না হলেও এদিন আলিপুর চিড়িয়াখানায় ভিড় ছিল নজরকাড়া। লালবাজার সূত্রে খবর, বর্ষবরণের রাতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অশ্লীল আচরণ ও অভদ্র আচরণের জন্য ১২৭০ জনকে গ্রেফতার।
শুধুমাত্র শহরবাসী নয়, দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষ সকল থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেন আলিপুর চিড়িয়াখানায়। প্রত্যেকটি খাঁচার সামনে ছিল কচিকাঁচাদের উপচে পড়া ভিড়। বাঘ, সিংহ, জিরাফ, ক্যাঙ্গারু দেখার উৎসাহ ছিল তো ছিলই, তবে এ সবের মধ্যে বুড়ো ‘বাবু’ই (শিম্পাঞ্জি) এখনও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে।
অন্যান্য বছরের তুলনায় ভিড় কিছুটা কম হলেও নতুন বছরের বেলা বারোটার মধ্যেই প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চিড়িয়াখানায় এসেছেন বলে জানিয়েছেন অধিকর্তা আশিস কুমার সামন্ত। তিনি বলেন, বড়দিনের ভিড় ছাপিয়ে যাবে। পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষের উপস্থিত হবে, তা বলাই যায়। তবে চিড়িয়াখানায় আসা সকল দর্শকে মেনে চলতে হচ্ছে করোনা প্রটোকল। চিড়িয়াখানায় প্রবেশের জন্য টিকিট কাউন্টারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে টিকিট কাটতে হচ্ছে সবাইকে। সেই সঙ্গে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। মাস্ক ছাড়া চিড়িয়াখানার মধ্যে প্রবেশ করলে জরিমানা করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন চিড়িয়াখানার অধিকর্তা।
এদিন অধিকর্তা আরও জানিয়েছেন, চিড়িয়াখানার যে অ্যাপ চালু করা হয়েছিল তা এখনও পর্যন্ত চলছে। সাধারণ মানুষের ফিডব্যাক খুব ভাল। অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য চিড়িয়াখানার ভিতরে এবং বাইরে মোতায়ন ছিল পুলিশ। পথচলতি মানুষ যাতে রাস্তায় নেমে না পড়েন, যানজটের পরিস্তিতি তৈরি না হয় সেজন্য রাস্তায় দুধারে ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য বাঁশের ব্যারিকেডে করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘তোলাবাজ ভাইপোর জ্যাঠা’, সৌগতকে আক্রমণ শুভেন্দুর
তবে ২০২১ সালের প্রথম দিনেও ফাঁকা থেকেছে ব্যান্ডেল চার্চ। মার্চ মাস থেকে লকডাউনের জেরে সাধারণের জন্য বন্ধ হয়ে যায় চার্চের গেট। ২৫ ডিসেম্বর মিড নাইট মাস বন্ধ ছিল। এমনকী খোলা ছিল না চার্চের সামনের মাঠও। তবে সাধারণের জন্য গোশালা করা হয়েছিল চার্চের সামনে গেটে কাছে।
অন্যদিকে প্রশাসনের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই অমান্য করে রাস্তায়, পিকনিক স্পটে ৪-৫টি করে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে মদ্যপ অবস্থায় জোরে বক্স বাজাতে বাজতে সুন্দরবনের ঝড়খালি, গদখালি, সজনেখালি, ডাবু-সহ নানা স্থানে ভ্রমণার্থীরা যান ভ্রমণ করতে।
অশোকনগর সাইন্স মিলেনিয়াম পার্কেও প্রত্যেক বছর যে ভাবে ভিড় এবং পিকনিক করতে আসে। সেই হিসেবে এ বছর ভিড় নেই বললেই চলে। করোনা মহামারি মানুষের আনন্দে কিছুটা হলেও ভাটা নামিয়ে দিয়েছে। তাই নতুন বছরে অশোকনগর সাইন্স মিলেনিয়াম পার্কে সেভাবে মানুষের দেখা মেলেনি।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রথম বিশেষজ্ঞ-অনুমোদন পেল অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন