SSC Scam: দুর্নীতি ঘোলাজলে ভেসেছে চাকরি! একরত্তিকে কোলে নিয়ে সুপ্রিম রায়ের দিকে তাকিয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত মা
SSC Recruitment Scam: মৌমিতার কথায়, টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। দুর্নীতির ঘোলাজলে সেই তিনিও আজ ভেসে গিয়েছেন। যোগ্যদের এই পরিস্থিতির জন্য কমিশনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মৌমিতা।
কলকাতা: দেড় বছরের শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে তাকিয়ে এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত মা’ও! পূর্ব বর্ধমানের শ্রীরামপুর হাইস্কুলের সংস্কৃতের শিক্ষিকা মৌমিতা হালদার। এসএসসি স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতের রায়ে চাকরি খোওয়ানো ২৫,৭৫৩ জনের মধ্যে একজন মৌমিতা। মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর— অ্যাকাডেমিক যোগ্যতার সব স্তরেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ দেড় বছরের শিশু সন্তানের মা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষকতার চাকরির পরীক্ষায় মৌমিতার প্রাপ্ত নম্বর ৯৪.৬৭ শতাংশ। তবুও ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বরে চতুর্থ কাউন্সেলিংয়ে চাকরি পান সংস্কৃতের শিক্ষিকা!
তিনি বলেন, “নিয়োগটা একটু দেরীতে হয়েছিল। ২০১৮ সালে প্রথম কাউন্সেলিং হয়, আমি চাকরি পেয়েছিলাম চতুর্থ কাউন্সেলিংয়ে। যোগ্য-অযোগ্যদের মিশিয়ে দেওয়ায় আজ এই পরিণতি হল”।
মৌমিতার কথায়, টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। দুর্নীতির ঘোলাজলে সেই তিনিও আজ ভেসে গিয়েছেন। যোগ্যদের এই পরিস্থিতির জন্য কমিশনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মৌমিতা।
মেমারির বাসিন্দা মৌমিতা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বছর দুয়েক আগে সন্তান প্রসবের ছ’দিনের মাথায় ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন মৌমিতা। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁর শরীরের বাঁ দিকের অংশ অবশ হয়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসায় ২৭ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ করে ফেলেছেন স্বামী প্রসেনজিৎ দাস। তিনি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। নয় সদস্যের একান্নবর্তী সংসারের আর্থিক হাল ধরার সদস্য বলতে এই দম্পতি। এই পরিস্থিতিতে চাকরি চলে গেলে স্ত্রীর চিকিৎসাই বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বামী।
যোগ্যদের চাকরি রক্ষার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এই মা। অন্যদিকে, মৌমিতা কোনওভাবেই যাতে মানসিক অস্থিরতার শিকার না হন, সেই বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা। চাকরি হারানোর দোলাচলে স্ত্রীকে কীভাবে স্থির রাখবেন, সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না প্রসেনজিৎ-ও।