মমতাকে ৫ লক্ষ টাকার জরিমানা! নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ

Nandigram Case: নন্দীগ্রামে ভোটের ফল কারচুপির অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট পুনর্গগণার দাবিও জানান তিনি।

মমতাকে ৫ লক্ষ টাকার জরিমানা! নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 07, 2021 | 12:25 PM

কলকাতা: নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ।  বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ সেই রায় ঘোষণা করলেন নিজেই। তবে মামলাকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এদিন রায় ঘোষণার আগে বিচারপতি কয়েক বিষয় উল্লেখ করে বলেন, বিচারব্যবস্থাকে ‘কলুষিত করার জন্যই’ জরিমানা করা হয়েছে।

কৌশিক চন্দ এদিন কয়েকটি বিষয় পয়েন্ট আউট করেন:

বিচারপতির মন কী কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারে না? তাতে কি আদৌ বিচারব্যবস্থা প্রভাবিত হয়?

বিচারপতির বক্তব্য, যে দিন মামলাটি আদালতে ওঠে, সে সময় কেউ জানাননি মামলাটি যাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে দেখা যায়, রাজ্যসভার সাংসদরা এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর ছবি দিয়ে টুইট করছেন। এই বিষয়টি উল্লেখ করেই কৌশিক চন্দ বলেন, “সারা দেশ খুঁজলেও এমন কোনও ব্যক্তি পাওয়া যাবে না, যিনি কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের সমর্থনে কথা বলেন না। সেক্ষেত্রে একজন বিচারপতির ক্ষেত্রে তা কেন হবে না? বিচারপতি হলে কি মনটা পাল্টে যায়? তবে এটা মাথায় রাখতে হবে, তিনি যখন আইনজীবী ছিলেন, তখন তাঁর যা মন-মানসিকতা ছিল, তা নিয়েই তিনি বিচারপতি হয়েছেন। তবে বিচার ব্যবস্থায় তার প্রভাব পড়বে না।”

প্রথমেই কেন আপত্তি জানানো হয়নি? এটি পরিকল্পনার অংশমাত্র

বিচারপতি কৌশিক চন্দের আরও বক্তব্য, রাজ্য যে পথে এগিয়েছে, সেটি একটি পরিকল্পনার অংশ মাত্র। কারণ প্রথম দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য তাঁকে আবেদন করেননি। কিন্তু রীতি এটাই। পরবর্তী কালে দেখা যায়, আদালত চত্বরে একাধিক আইনজীবী বিপ্লব করছেন। সেটা কি কোনও পরিকল্পনা নয়? এভাবে সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।

বিক্ষোভ দেখিয়ে বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করা হয়েছে

গতদিনের শুনানিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী মনু সিঙ্ভি বলছিলেন, যখন একজন বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়, সেটি সাধারণ মানুষের মনে প্রভাব ফেলে। বিচারপতি কৌশিক চন্দ এদিন সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তাঁর বক্তব্য, সাধারণ মানুষ কখনই বিচার ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারেন না। সেটা নির্ধারিত করবেন একজন বিচারপতি। কিন্তু এই মামলায় যেভাবে প্রথম থেকে বিক্ষোভ করা হয়েছে হাইকোর্টের সামনে, তা নজিরবিহীন। এই বিক্ষোভ বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করেছে। আর তার জন্যই মামলাকারী অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঁচ লক্ষ টাকার জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই জরিমানার অর্থ জমা দিতে হবে রাজ্য বার কাউন্সিলে, যা পরবর্তীকালে কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে। এই মামলা এবার কোন বেঞ্চে যাবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।

প্রেক্ষাপট

নন্দীগ্রামে ভোটের ফল কারচুপির অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট পুনর্গগণার দাবিও জানান তিনি। কিন্তু হাইকোর্টে মামলাটির বেঞ্চ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। মামলাটি বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজসালে ওঠে, যা নিয়ে আপত্তি জানায় তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বিচারপতিকে মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর আর্জি জানানো হয়। তারই জল গড়ায় এতদূর।