চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নয়া স্ট্রেন, আতঙ্ক বাড়িয়ে ব্রিটেন থেকে রাজ্যে ১০৪
মন্ত্রকের তরফে নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যকে। যেখানে বলা হয়েছে, ব্রিটেন থেকে যাঁরা দেশে ফিরবেন তাঁদের প্রত্যেকের RT-PCR করতেই হবে। বিমানবন্দরেই এই পরীক্ষা করা হবে।
কলকাতা: বিপদ যেন কিছুতেই কাটছে না। সবেমাত্র কিছুটা দুর্বল হতে শুরু করেছিল কোভিড-১৯ (COVID-19)। এরইমধ্যে দেশে হাজির করোনার নতুন ‘স্ট্রেন’। যা নাকি আগের থেকে আরও অনেক বেশি সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। অর্থাৎ সত্যিই যদি এর বাড়বাড়ন্ত শুরু হয় তা হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে চিকিৎসকদের। এসবের মধ্যেই চিন্তা বাড়িয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্র। বলছে, গত ২৫ নভেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রিটেন থেকে মোট ৪৩৭১ জন যাত্রী দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে এসেছেন। তার মধ্যে আবার ১০৪ জন এ রাজ্যের বাসিন্দা। তালিকায় রয়েছেন কলকাতারই ৮৩ জন। এছাড়াও দার্জিলিং, কালিম্পং, শিলিগুড়ি, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়ার বাসিন্দাও রয়েছেন। এদের নজরে রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। দেশে ফেরার পর কোনওরকম নয়া উপসর্গ দেখা দিল কি না সেদিকে নজর রাখতে হবে কমপক্ষে ১৪ দিন।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ, বিশ্বভারতী অবিচ্ছিন্ন ভারতের ঐতিহ্য, মোদীর ভাষণে বারবার উঠে এল সে কথাই
স্বাস্থ্য দফতরের সূত্র অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনার আটজন, হাওড়ার চারজন, শিলিগুড়ির তিনজন, দার্জিলিং, হুগলির দু’জন করে এবং মুর্শিদাবাদ, কালিম্পংয়ে একজন করে রাজ্যে ফিরেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রক ইতিমধ্যেই তাঁদের খুঁজতে বলেছে। অন্তত ১৪ দিন ভালভাবে নজর রাখতে হবে। কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। হোম আইসোলেশন তার প্রথম ধাপ। বিধি নিষেধ না মানলে পরিস্থিতি মারাত্মক হতে পারে।
মন্ত্রকের তরফে নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যকে। যেখানে বলা হয়েছে, ব্রিটেন থেকে যাঁরা দেশে ফিরবেন তাঁদের প্রত্যেকের RT-PCR করতেই হবে। বিমানবন্দরেই এই পরীক্ষা করা হবে। কারও রিপোর্ট পজিটিভ এলে আইসোলেশনে থাকতে হবে তাঁকে। করোনার এই নয়া স্ট্রেন আগের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রমক বলেই দাবি চিকিৎসকদের।
কিন্তু যাঁরা ব্রিটেন থেকে দেশে ফিরছেন, তাঁদের ট্র্যাক করাও রাজ্যের পক্ষে কিছুটা কষ্টসাধ্য। কারণ, কেন্দ্র যে তালিকা পাঠিয়েছে সেখানে ব্যক্তির নাম ও ফোন নম্বরের উল্লেখ রয়েছে। কিছুদিন আগেই এই পদ্ধতিতে কতটা বেগ পেতে হচ্ছে তা নিয়ে মুখ খোলেন লখনউয়ের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। তাঁদের বক্তব্য, তালিকায় শুধু ফোন নম্বর রয়েছে। এদিকে অধিকাংশর ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ফোনের সুইচড অফ। ফলে এই ট্র্যাকিং পদ্ধতি প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে। এটা একেবারেই খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মতো।
আরও পড়ুন: আমাকে বিশ্বভারতী কোনও আমন্ত্রণ জানায়নি, নবান্নে মুখ খুললেন মমতা
এর মধ্যে কেউ যদি বিজয়ওয়াড়ার মহিলার মতো কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেন তা হলে তো ষোলো কলা পূর্ণ। লন্ডন থেকে ফেরার পর ওই মহিলার শরীরে কোভিড-১৯’ এর উপস্থিতি দেখা যায়। আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে পালিয়ে যান তিনি। শুধু তাই নয় ট্রেনে সফরও করেন। নতুন স্ট্রেনের আচরণ অনুযায়ী, অনেক সহজে সে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই মহিলার ক্ষেত্রেও যদি তেমনটা ঘটে থাকে, তা হলে বিপদ যে ডানা মেলতে শুরু করেছে তা বলাই বাহুল্য। এর মধ্যে বাংলার এই তালিকা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।