জ্যোতিপ্রিয়-উদয়ন-পার্থ-শেখ সুফিয়ান ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’, উল্লেখ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে

NHRC Post Poll Violence: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান, উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ-সহ একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে।

জ্যোতিপ্রিয়-উদয়ন-পার্থ-শেখ সুফিয়ান 'কুখ্যাত দুষ্কৃতী', উল্লেখ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে
অলংকরণ-অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 15, 2021 | 9:17 PM

কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসার প্রেক্ষিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে রীতিমতো তোলপাড় ফেলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রাথমিকভাবে এই রিপোর্টে রাজ্য সরকারকে তুলোধোনা করা হয়েছিল। এ বার উঠে এল আরও বিস্ফোরক তথ্য। এই রিপোর্টে একাধিক প্রথম সারির তৃণমূল নেতাকে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান, উত্তরবঙ্গের তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ-সহ একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে।

কলকাতা হাইকোর্টে জমা পড়া মানবাধিকার কমিশনের এই রিপোর্ট প্রথমেই নজর কেড়েছিল একটি লাইন। যেখানে উল্লেখ করা হয়, “রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন।” এমনকী, একাধিক ঘটনার কথা উল্লেখ করে সেখানে সিবিআই তদন্তের দাবিও জানানো হয়। যা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রিপোর্টের বিস্তারিত অংশ প্রকাশ্যে আসার পর এই বিতর্ক যে আরও বড় আকার ধারণ করতে চলেছে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই রাজনৈতিক মহলে।

সূত্রের খবর, কমিশনের এই রিপোর্টে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উদয়ন গুহ, শওকত মোল্লা, পার্থ ভৌমিক, শেখ সুফিয়ান, খোকন দাস, জীবন সাহার নাম রয়েছে। এঁদের মধ্যে কেউ নেতা কেউ মন্ত্রী। কেউ প্রাক্তন বিধায়ক, কেউ বা কাউন্সিলর। জেলা ধরে ধরে এমন অসংখ্য নামের তালিকা এই রিপোর্টে জমা দিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। যার মধ্যে বেশিরভাগ নামই রাজ্যের শাসকদলের নেতাদের। এই নামের তালিকার উপরে স্পষ্টভাবে ‘গুণ্ডা’ বা ‘দুষ্কৃতী’দের নামের তালিকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসায় কবলিত যে যে এলাকায় গিয়ে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন, সেই এলাকা থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতেই এই রিপোর্টে তৃণমূল নেতাদের নাম রাখা হয়েছে। এমনটাই খবর সূত্রের।

তবে এই তালিকায় শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতাদের নাম নয়, একাধিক পুলিশ আধিকারিকদের নাম তুলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে। এই রিপোর্টে স্পষ্ট দাবি করা হয়েছে, এই দুষ্কৃতীদের পক্ষে রাজ্য প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে। তাই এই রাজ্যে মামলাটির বিচার করা সম্ভব নয় বলেও দাবি করা হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’র তালিকায় নাম থাকা নেতারা।

বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এই প্রসঙ্গে বলেন, “জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আগে তথ্য জানা উচিত ছিল যে আমি নিজে পেশায় একজন আইনজীবী। গত ১০ বছর আমি রাজ্য বার কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ছিলাম। না জেনে একটা ভুল তথ্য তারা জমা দিয়েছে। আমার নামে পশ্চিমবঙ্গের কোনও থানায় এফআইআর তো দূরের কথা, যদি একটা সাধারণ অভিযোগ পান আমি তাঁকে পুরস্কৃত করব। আমার দল যেভাবে গাইড করবে, সেভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ করব। প্রয়োজনে মানহানীর মামলাও করব।” অন্যদিকে নৈহাটির তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিকের প্রতিক্রিয়া, “লোকে হাসবে। বুঝতে পারবে বিজেপি কীভাবে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলদাসে পরিণত করছে।” আরও পড়ুন: ‘শাসকের ইচ্ছাই আইন’, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট আদালতে, মমতা বললেন ‘বদনাম করার চেষ্টা’

COVID third Wave