‘শাসকের ইচ্ছাই আইন’, মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট আদালতে, মমতা বললেন ‘বদনাম করার চেষ্টা’
Human Rights West Bengal: কমিশন নিজের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, "রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন।"
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ভোট হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে বিস্ফোরক রিপোর্ট জমা দিল মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদল। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো ভোট পরবর্তী হিংসায় কবলিত রাজ্যের একাধিক জায়গা ঘুরে আলাদতে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। যদিও সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানি শুরুর আগেই উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মানবাধিকার কমিশন নিজের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, “রাজ্যে আইনের শাসন নেই। শাসকের ইচ্ছাই এখানে আইন।” এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই ক্ষোভে রীতিমতো ফেটে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পালটা তোপ, ‘কমিশনের নামে মিথ্যা রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে আদালতে।’
ঘটনা হচ্ছে, ভোট পরবর্তী হিংসার যে যে অভিযোগ রাজ্যে উঠেছিল, সেগুলির ভিত্তি এবং সারবত্তা খতিয়ে দেখতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের ঘুরে দেখে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রিপোর্টই বৃহস্পতিবার আদালতে জমা পড়ে। রিপোর্টে উঠে আসে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে আর উল্লেখ করা হয়েছে, হিংসার ঘটনায় যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁদের প্রতি রাজ্য সরকার চরম উদাসীন আচরণ দেখিয়েছে। এমনকী, রাজ্যে আইনের বদলে শাসকের শাসন চলছে বলেও দাবি করা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। হিংসার ঘটনার কারণে একাধিক পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু ও ধর্ষণের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের বাইরে মামলা হওয়া বাঞ্ছনীয় বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার কমিশন। এর পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে একটি সিট গঠন করে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। যারা আহত বা মৃত, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিশন।
মানবাধিক কমিশনের এই বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসায় দৃশ্যতই অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকে বিষয়টির উত্থাপন হলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা। আদালতে জমা পড়া রিপোর্ট কেন প্রকাশ্যে এল সেই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ পক্ষাপাতমূলক একটা রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা চলছে। উত্তর প্রদেশের নদী থেকে লাশ গঙ্গায় ভেসে আসার সময় মানবাধিকার কমিশন কোথায় থাকে। যদিও বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন, কোনও মন্তব্য করব না। কিন্তু যা হয়নি তা নিয়ে মিথ্যা প্রচার চলছে। উত্তর প্রদেশ বিজেপি শাসিত রাজ্য বলে ওদের সাত খুন মাফ। ভোটের আগে যে হিংসা হয়েছে তখন নির্বাচন কমিশন দায়িত্বে ছিল। বিজেপি হার হজম করতে পারছে না। তাই হারের পর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এইসব অভিযোগ তুলছে।” আরও পড়ুন: মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে বিধানসভায় শুনানি, পেশ করা হবে বিশেষ অডিয়ো-ভিডিয়ো ক্লিপিংস