পচা মাংস নয়, ছিল মাছ! আড়াই বছর জেল খাটার পর ভাগাড়কাণ্ডে বেকসুর খালাস ব্যবসায়ী
আড়াই বছর শুনানির পর জানা গেল, পচা মাংস নয়, মাছ রাখা ছিল। এরপরই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে আদালত।
কলকাতা: প্রায় আড়াই বছর জেল যন্ত্রণার পর ভাগাড় কাণ্ডে এক ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস করল কলকাতা হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতের নির্দেশে ৫ বছরের জন্য জেল সাজা শোনানো হয়েছিল স্বরূপ সেন নামক ওই হোটেল ব্যবসায়ীকে। তাঁর বিরুদ্ধে পচা মাংস রাখার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু আড়াই বছর শুনানির পর জানা গেল, পচা মাংস নয়, মাছ রাখা ছিল। এরপরই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে আদালত।
আজ থেকে বছর তিনেক আগের ঘটনা। ভাগাড় কাণ্ড তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল গোটা রাজ্যে। টাটকা মাংসের নামে কয়েক দিনের পুরনো ভাগাড়ের পচা মাংস বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। তদন্ত চালিয়ে জানা যায়, এই কাণ্ডের পিছনে প্রধানত কাজ করছিল বনগাঁর মাংস বিশু। তাঁকে গ্রেফতার করা হলেও পরবর্তী সময় সে বেকসুর খালাস হয়ে যায়। অথচ যে ব্যবসায়ী আসলে কোনও দোষ করেননি, তাঁকে আড়াই বছর জেল খাটতে হল। তবে শেষ পর্যন্ত মুক্তি অবশ্য মিলেছে।
২০১৮ সালে যে সময় ভাগাড় কাণ্ডের জেরে চারিদিকে হইচই পড়ে গিয়েছে, সেই সময় বনগাঁর ওই ব্যবসায়ীর হোটেলে রেড করে পুরসভা। এরপরই স্বরূপ সেন নামক ওই ব্যবসায়ীর দোকান থেকে পচা মাংস উদ্ধার করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বনগাঁর নিম্ন আদালত ৫ বছরের জেল সাজা শোনায়। নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যবসায়ী। মামলাটির শুনানির পর এ দিন আদালত স্বরূপ সেনকে বেকসুর খালাস করে। জানা যায়, পচা মাংস নয়, মাছ রাখা ছিল হোটেলে। তাঁকে মুক্তি দেয় বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ। বনগাঁ আদালতের রায় খারিজ করার পাশাপাশি দ্রুত স্বরূপ সেনকে জেলমুক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস নাগাদ প্রথমবার শহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাজুড়ে ভাগার কাণ্ডের পর্দাফাঁস হয়। সেই সময় অভিযানে নামে একাধিক পুরসভা। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা থেকেই প্রথমবার হোটেল, রেস্তোরাঁয় পচা মাংস বিক্রির অভিযোগ ওঠে। ভাগাড় কাণ্ডে আড়ালে পচা, নিম্ন গুণমানের মাংস, মাছ বিক্রির অভিযোগ ওঠে। একাধিক হোটেল, রেস্তোরাঁয় অভিযান চলে। ধরপাকড় শুরু হয়। অভিযানে নেমে নামী রেস্টুরেন্ট থেকে পচা মাংস ও মাছ উদ্ধার করা হয়। ৬ কেজি পচা মাংস ও ৩ কেজি পচা মাছ উদ্ধার করে পুলিশ। মাছ ও মাংস বিষাক্ত বলে উঠে আসে তদন্তে৷ এরপরই বনগাঁ পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতে বনগাঁ আদালত ২০১৯ সালে রায় ঘোষণা করে। তখনই ২ জনকে দোষী এবং বাকিদের মুক্ত করেছিল নিম্ন আদালত৷ সেই রায়ই এদিন খারিজ হয়েছে। আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা: হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ রাজ্যের