‘বেগম রোকেয়ার কথা মনে পড়ছিল,’ প্রথমা রুমানার ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে ‘গর্বিত’ মহুয়া দাস

যেহেতু নারী শিক্ষা প্রসারে বেগম রোকেয়ার অবদান ভোলার নয়, সেই প্রেক্ষিতে তিনি রুমানার সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করেছেন।

'বেগম রোকেয়ার কথা মনে পড়ছিল,' প্রথমা রুমানার ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে 'গর্বিত' মহুয়া দাস
সংসদ সভাপতি মহুয়া ও প্রথমা রুমানা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 23, 2021 | 7:10 PM

কলকাতা: প্রবল বিতর্কের মুখে অবশেষে মুখ খুললেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। বৃহস্পতিবার ফল ঘোষণার সময় প্রথম স্থানাধিকারী রুমানা সুলতানার ধর্ম বারংবার উল্লেখ করার প্রসঙ্গে এ দিন সংসদে এসে ‘সাফাই’ দেন তিনি। মহুয়া জানান, রুমানাকে নিয়ে তিনি গর্বিত। সেই সময় তাঁর মনে “বেগম রোকেয়ার ধ্বনি উচ্চারিত হয়েছে।” যেহেতু নারী শিক্ষা প্রসারে বেগম রোকেয়ার অবদান ভোলার নয়, সেই প্রেক্ষিতে তিনি রুমানার সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করেছেন। এতে তিনি কোনও ভুল দেখেন না।

রুমানার নাম না নিয়ে বারবার ‘মুসলিম’ লেডি বলে উল্লেখ করতে শোনা গিয়েছিল মহুয়া দাসকে। যা নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় একপ্রকার বিতর্কের ঝড় বয়ে গিয়েছে। শিক্ষাবিদ থেকে রাজনৈতিক মহল, সকলেই একলপ্তে রুমানার ধর্মীয় পরিচিতি উল্লেখ করা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছে। শুক্রবার যখন সংসদ সভাপতি দফতরে এসে পৌঁছন, তখন বিদ্যাসাগর ভবনের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিল পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক মুক্ত মঞ্চ। সেই বিক্ষোভের মাঝেই তিনি বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেন।

মহুয়ার দাবি, ধর্মীয় পরিচয় তুলে ধরা কখনই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। নেহাতই আবেগের বশে তিনি তা বলে ফেলেছেন। যদিও নিজের জায়গায় কার্যত অনড় থেকে সংসদ সভাপতি বলেন, সংখ্যালঘু বলার সময় তাঁর গর্ববোধ হয়েছে। “ওকে নিয়ে কথা বলার সময় আমার বেগম রোকেয়ার কথা মনে পড়ছিল। তিনিও একই রকম ভাবে পড়াশোনায় ভাল ছিলেন। তাঁরই কথা মনে পড়ায় রুমানাকে সংখ্যালঘু পরিচয় দিয়েছিলাম,” বলেন মহুয়া দাস।

সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই বিষয়ের জল অবশ্য রাজনীতির মাঠেও পৌঁছে গিয়েছে। গতকালই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন লোকসভার সাংসদ অধীর চৌধুরী। এ দিন বিজেপি ও সিপিএম-ও একে একে মুখ খুলেছে। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “উচ্চ মাধ্যমিকে যিনি প্রথম হয়েছেন তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কিন্তু তাঁর নাম ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে, সেটার নিন্দা করছি। এটা কি সংখ্যলঘুদের জন্য ভোটব্যাঙ্ক ভরার চেষ্টা?”

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও মুখ খুলেছেন বিষয়টি নিয়ে। তিনি বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকে যিনি প্রথম হয়েছেন তাঁর কথা বলতে গিয়ে যে মহিলা বারবার মুসলমান কথাটা ব্যবহার করেছেন, তিনি আদপে শিক্ষার গুরুত্ব, কৃতীর গুরুত্ব খাটো করেছেন। এরকম কারোর এই গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা উচিত নয়।” আরও পড়ুন: ‘পরীক্ষা হয়নি, তো ফেল কিসের?’ উচ্চ মাধ্যমিকে অকৃতকার্যদের বিক্ষোভ জেলায় জেলায়