Partha Chatterjee: পালের গোদা পার্থই, দুর্নীতিতে সায় না দিলেই অপসারণ করতেন মন্ত্রীমশাই: সিবিআই চার্জশিট
Partha Chatterjee: তদন্তকারীদের দাবি, নিজের দফতরেই চাকরি বিক্রির জাল বিস্তার করেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আরও কী কী রয়েছে ওই চর্জশিটে?
সুজয় পাল
ঘনিষ্ঠ আধিকারিকদের নিয়ে নিজস্ব নেটওয়ার্ক। অনুগত আধিকারিকদের পছন্দের পদে বসানো। বিরুদ্ধে বললেই, তড়িঘড়ি সরিয়ে দেওয়া। সিবিআইয়ের চার্জশিটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ। তদন্তকারীদের দাবি, নিজের দফতরেই চাকরি বিক্রির জাল বিস্তার করেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আরও কী কী রয়েছে ওই চর্জশিটে?
নিয়োগ দুর্নীতিতে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বেরিয়ে আসছে পরের পর কেলেঙ্কারি। এসএসসি গ্রুপ সি নিয়োগে যে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার মাস্টারমাইন্ড কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়? এই মামলায় সিবিআইয়ের সম্প্রতি আলিপুর কোর্টে পার্থ সহ ১৬ জনের নামে যে চার্জশিটে দিয়েছে, তাতে তেমনই ইঙ্গিত। নিয়োগের প্রতি ধাপে নিজের লোক বসানো, কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া থেকে বেআইনি কাজে অনুমোদন। পরের পর বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের চার্জশিটে। সেখানে উল্লেখ,
নিয়োগে বেনিয়মের পথ সুগম করতেই উপদেষ্টা করা হয় এসপি সিনহাকে।
আমলা না হওয়া সত্ত্বেও, এসএসসি-র সচিব হিসাবে নিয়োগ করা হয়।
এসএসসি আইন সংশোধন না করেই নিয়োগ।
নিয়োগ সংক্রান্ত রেকমেন্ডেশন লেটারে স্ক্যানড সই ব্যবহার নিজের ওএসডি-র মাধ্যমে চাকরি প্রার্থীদের তালিকা পাঠাতেন পার্থ।
পার্থর সঙ্গে ওএসডি-র চ্যাট হিস্ট্রি সিবিআই- এর কাছে।
শুধুমাত্র বেআইনিভাবে আধিকারিকদের নিয়োগই নয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্তদের সুবিধা করে দিতে বহু আধিকারিককে তাঁদের পদ থেকে সরিয়েও দিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। চার্জশিটে একথাও উল্লেখ করেছে সিবিআই।
সরানো হয় এসএসসি-র সেন্ট্রাল কমিশনের চেয়ারম্যান শর্মিলা মিত্রকে, এসএসসি প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকারকে অপসারণ করা হয়। বেআইনি কাজে সাথ না দেওয়ায় অপসারিত হন আরও ১ কর্তা। নম্বর বদলে রাজি না হওয়ায় কোপের মুখে পড়েন কমিশনের প্রোগ্রামিং অফিসার পর্ণা বোস।
নিয়োগের প্যানেল বাতিল হওয়ার পরও ভুয়ো নিয়োগপত্রে চাকরি দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে শোকজ করা হয় এসপি সিনহাকে। চার্জশিটে উল্লেখ, বেআইনি কাজে রাজি না হওয়ায় এসএসসি- র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকারকে সরানো হয়। এসএসসি-র প্রোগ্রামিং অফিসার পর্ণা বোসকে পরীক্ষার্থীদের নম্বর বদলের নির্দেশ দেন এসপি সিনহা। কিন্তু রাজি না হলে, তত্কালীন এসএসসি চেয়ারম্যানকেই সরিয়ে দেন পার্থ। সেই জায়গায় পরবর্তীকালে আসেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। শুধুমাত্র নম্বর বদলই না, গ্রুপ সি পরীক্ষার ওএমআর শিটের তথ্য নষ্টেরও অভিযোগ এসপি সিনহা ও অশোক সাহার।
২০১৯-এর উত্তরপত্রের সমস্ত তথ্য নষ্ট করা হয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ সিবিআই-এর। পরের পর বিস্ফোরক তথ্য তদন্তকারীদের হাতে। কমিশনে চাকরি চুরির নেটওয়ার্ক তৈরি। সিবিআইয়ের চার্জশিটে যে সমস্ত তথ্য উঠে এসেছে, তাতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বিপদ আরও বাড়তে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।