RG Kar Case: একই দিনে দুটো রায়, কেরলে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ কিন্তু কলকাতা নয়!

RG Kar Case: সবটাই ব্যাক্তিগত আক্রোশ। সেই আসামীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়ে গোটা ঘটনাকে বিরলের তকমা দিলেন কেরলের ওই নিম্ন আদালতের বিচারক।

RG Kar Case: একই দিনে দুটো রায়, কেরলে 'বিরলের মধ্যে বিরলতম' কিন্তু কলকাতা নয়!
Follow Us:
| Updated on: Jan 21, 2025 | 7:39 PM

কলকাতা: বেলা গড়িয়ে তখন দুপুর। মাঘের নিভে আসা শীতে প্রভাব জমিয়েছে অস্বস্তিকর গরম। শিয়ালদহ জেলা ও দায়রা আদালতের সামনে তখন গিজগিজে ভিড়। বনগাঁ, বারাসাত, গেঁদে লোকাল চেপে ‘ওপেন কোর্টে’ রায় ঘোষণা দেখবে বলে উপচে পড়ছে জনস্রোত। সেদিন দেশকে নাড়িয়ে দেওয়া ঘটনা, আরজি কর মামলার রায় শোনাবেন বিচারক অনির্বাণ দাস। সবাই জেনে গিয়েছে যে, সাজা তো হচ্ছেই। কিন্তু ফাঁসি কাঠে ঝুলবে নাকি আজীবন কারাগারে বন্দি থাকবে ‘একমাত্র দোষী’ সঞ্জয় রায়? এ নিয়ে দোটানা তৈরি হয়েছে মানুষের মনে। সেই উত্তেজনা আরও এক ধাপ চড়িয়ে দিলেন বিচারক। বললেন, সাজা ঘোষণার আগে একটু সময় নিতে চান তিনি। সময় নিলেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ? তারা যে সেই স্নায়ুচাপ আর সহ্য করতে পারছে না।

শিয়ালদহের সেই নিম্ন আদালত থেকে প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার দূরে আরও একটি আদালতে তখন প্রায় একই রকম চাপানউতোর পরিস্থিতি। ঘটনা ওত বড় নয়। মাঝে মধ্যেই এমন শুনানি চলে থাকে আদালতে। বিচারকও রায় দিয়ে থাকেন। কিন্তু সেদিনটা যেন অন্য়রকম। ঘটনা ‘সাধারণ’ কিন্তু রায় পড়ল ‘অসাধারণ’, এমনটাই বলছে একাংশ। বিষ খাইয়ে খুনের ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ তকমা দিলেন সেই রাজ্যের নিম্ন আদালতের বিচারক।

কিন্তু এদিকে, সরকারি হাসপাতালে ৩৬ ঘণ্টা ধরে কর্মরত চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন-নির্যাতনের পরও পেলেন না ‘বিরলতম’ তকমা। বাংলার অন্যতম সরকারি হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় সেই চিকিৎসককে শিকার হতে হয়েছিল ধর্ষণের। তবে সেখানেই বাধ পড়েনি। পৈশাচিক নির্যাতন। তারপর তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া। কিন্তু তারপর এটা ‘বিরলতম’ ঘটনা নয়। সারা দেশজুড়ে সাড়া তুলেছিল আরজি কর। প্রতিবাদের সুর চড়েছিল বিদেশের মাটিতেও। কিন্তু তারপর? টানা পাঁচ মাস আন্দোলন, টানাপোড়েন। সাজা পেলেন অভিযুক্ত। হল আমৃত্যু কারাদণ্ড। কিন্তু পেলেন না ‘বিরলতম’ ঘটনার তকমা।

অন্যদিকে, সেই কেরলে। যেখানের নিম্ন আদালতে চলছিল একটি খুনের মামলা। বিষ খাইয়ে নিজের প্রেমিককে খুন করেছেন প্রেমিকা। সবটাই ব্যাক্তিগত আক্রোশ। সেই আসামীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়ে গোটা ঘটনাকে বিরলের তকমা দিলেন কেরলের ওই নিম্ন আদালতের বিচারক।

শনিবার ২৪ বছর বয়সী এক মহিলা অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তিরুবনন্তপুরমের অতিরিক্ত জেলা আদালত। এরপর সোমবার, ফাঁসির সাজা দেওয়া হয় তাঁকে। ২০২২ সালে অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার দরুন নিজের বর্তমান সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু সেই প্রস্তাবে কোনও মতেই রাজি ছিলেন না তার প্রেমিক। ফলত, পিছু ছাড়াতে প্রাণনাশকেই অন্তিম হাতিয়ার করে নেন সেই মহিলা। নিজের বাড়িতে খেতে ডেকে, খাবারে বিষ মিশিয়ে প্রেমিককে হত্যা করেন তিনি। এরপর গ্রেফতার, তদন্ত ও অবশেষে বিচার। ‘বিরলতম ঘটনার’ তকমা দিয়ে অভিযুক্ত মহিলাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত।

সেই একই দিনে আরও একটি সাজা ঘোষণা হয়। যার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। ৫ মাস ১১ দিন পেরিয়ে অবশেষে ‘বিচার’ পান তিলোত্তমা। ঘটনার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে ফাঁসি নয়, বরং আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনান বিচারক। অবশ্য, সেই ‘সাজা ঘোষণা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এরকম পৈশাচিক কাণ্ড ঘটানো এক ব্যক্তি কীভাবে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দিল আদালত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে একাংশের মানুষজন। আবার সরকারি চিকিৎসককে কর্মরত অবস্থায় ধর্ষণ যে ‘বিরলতম ঘটনা’ নয়, তাও বা কীভাবে বলা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। আদালতের এই রায়ে কিন্তু অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেছেন, ‘ফাঁসি হলে মনকে বেশি সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’

আরজি কর কাণ্ডে হাজার আন্দোলন দেখেছে এই শহর। তৈরি হয়েছিল জনরোষও। কিন্তু তার প্রভাব কি সাজা ঘোষণায় পড়া উচিত। হয়তো না। সেই কারণেই সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণার সময় যে, মৃত্যুর পরিবর্তে মৃত্যু হতে পারে না, এই কথাটাই মনে করিয়ে দিয়েছে আদালত।

আদালতের রায়কে কিন্তু সমর্থন জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা দিনের পথে পড়ে থেকেছে। রাজ্য-বিরুদ্ধে হুঙ্কার তুলেছে। পুলিশের লাঠিও খেয়েছে। তাই সাজা ঘোষণার দিনে তাদের মতটারও যে গুরুত্ব রয়েছে, তা বলা বাহুল্য। সঞ্জয়ের ‘আমৃত্যু কারাদণ্ডে’ কিন্তু তারা অসন্তুষ্ট নন। বরং বল যে তাদের কোর্টেই এসেছে, এমনটাই মন করছে আন্দোলনকারীদের একাংশ।

তাঁদের দাবি, সঞ্জয়কে ফাঁসি কাঠে ঝুলিয়ে কখনওই তিলোত্তমার সঠিক বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। বরং এটাই সুযোগ। এই আন্দোলন ও মামলাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি হলে আদতেই সেই রাতে আরও কেউ তার সঙ্গে জড়িত ছিল কি না তা আর জানা সম্ভব হবে না।

একই সুর কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তের গলায়ও পাওয়া গিয়েছে। তাঁর কথায়, সঞ্জয় হয়তো একা দোষী নয়। অন্তত সদ্য প্রকাশিত সেই ফরেন্সিক রিপোর্টের পর থেকে সঞ্জয় যে ‘একমাত্র দোষী’ এমনটা নিয়ে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘যে সব সাক্ষ্য প্রমাণ উঠে এসেছে, এমনকি যাদের নাম জড়িয়ে গিয়েছে, সেই ভিত্তিতে এই বিচার যথাযথ হয়েছে কি না তা নিয়ে পরবর্তী আদালতে আবেদন করা যেতেই পারে। আর যদি সেটাই ঘটে। তবে এখানেই শেষ নয়। বরং এখান থেকেই শুরু বিচারের দ্বিতীয় অধ্যায়ের।’

একদিনেই পড়ল ১০ শতাংশ, আপনারও ছিল জোম্যাটোর শেয়ার?
একদিনেই পড়ল ১০ শতাংশ, আপনারও ছিল জোম্যাটোর শেয়ার?
আসতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় আইপিও, টাটার মাথায় আরবিআইয়ের খাঁড়া
আসতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় আইপিও, টাটার মাথায় আরবিআইয়ের খাঁড়া
দাদু দিয়েছিলেন ০.০৪% শেয়ার, নারায়ণ মূর্তির নাতির সম্পত্তি কত জানেন?
দাদু দিয়েছিলেন ০.০৪% শেয়ার, নারায়ণ মূর্তির নাতির সম্পত্তি কত জানেন?
বেকারত্বের 'সহজ সমাধান' বলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, চাই শুধু চায়ের দোকান
বেকারত্বের 'সহজ সমাধান' বলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, চাই শুধু চায়ের দোকান
আজও পড়েছে ইনফোসিস, বাজারে ঝড় তুলেছে ব্যাঙ্কগুলো!
আজও পড়েছে ইনফোসিস, বাজারে ঝড় তুলেছে ব্যাঙ্কগুলো!
ঘরেই ছিলেন, ছেলের যাবজ্জীবনের সাজা শুনে দোর আটকেই রইলেন সঞ্জয়ের মা
ঘরেই ছিলেন, ছেলের যাবজ্জীবনের সাজা শুনে দোর আটকেই রইলেন সঞ্জয়ের মা
চাকরি পেয়েই বাড়ি, গাড়ি! এই ভুল আপনিও করেছেন?
চাকরি পেয়েই বাড়ি, গাড়ি! এই ভুল আপনিও করেছেন?
সর্বনাশা স্যালাইন? প্রসূতির প্রাণের বিনিময়ে সামনে এল আরও এক দুর্নীতি!
সর্বনাশা স্যালাইন? প্রসূতির প্রাণের বিনিময়ে সামনে এল আরও এক দুর্নীতি!
ইনফোসিসের পতনে নারায়ণমূর্তির পরিবারের লস কত হয়েছে জানেন?
ইনফোসিসের পতনে নারায়ণমূর্তির পরিবারের লস কত হয়েছে জানেন?
জেলাশাসকের মাথায় ‘প্রভাবশালী শাশুড়ি’র হাত, ফের কোটি কোটির দুর্নীতির অ
জেলাশাসকের মাথায় ‘প্রভাবশালী শাশুড়ি’র হাত, ফের কোটি কোটির দুর্নীতির অ