TET: ‘আগামীতে টেট সংক্রান্ত তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত’, সরকারের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা নয়া পর্ষদ সভাপতির?

TET: চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন তুলতে এর আগে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে সরকারের তরফে। এরইমধ্যে জারি হয়ে গিয়েছে ১১ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি।

TET: 'আগামীতে টেট সংক্রান্ত তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত', সরকারের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা নয়া পর্ষদ সভাপতির?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 11, 2022 | 6:03 PM

কলকাতা: “আগামীতে নিয়োগ এবং টেট সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি প্রস্তুত।” এ কথা শোনা গেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Education Board) নতুন সভাপতি গৌতম পালের (Gautam Pal) মুখে। যা নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে শিক্ষা মহলে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর পূর্বসূরি তথা শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattyacharya)। বিগত কয়েক মাসে লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগে মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকারের। এমতাবস্থায় গৌতম পালের এ মন্তব্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। 

এদিন তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আমি আগামীদিনে নিয়োগ এবং টেট সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। আমি কথা দিচ্ছি অত্যন্ত নিয়ম মেনে, আইন মেনে আমি কাজ করব। আইনের বাইরে আমি কোনও কাজ করব না। কোনও অস্বচ্ছতা এখানে স্থান পাবে না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এবারে পুরোপুরি এনসিটিই-র প্রশ্নপত্রের প্যাটার্ন মেনে প্রশ্ন করতে চলেছি। আমরা দিনরাত কাজ করছি। আগে কোনও ইনফরমেশন বুকলেট দেওয়া হত না। এবারে আমরা দেব। কীভাবে প্রশ্ন আসবে, কোন ধরনের প্রশ্ন আসবে, পরীক্ষার সময় কত, কোন কোন সিলেবাস থাকবে তা ইনফরমেশন বুকলেটে থাকবে।”

আন্দোলনে সহমর্মিতা জানিয়েও নিয়োগে বসার অনুরোধ 

একইসঙ্গ চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের প্রতি ‘সহমর্মিতা’ জানিয়েও তিনি তাঁদের আসন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। সঙ্গে প্যানেলভুক্ত হওয়া মানেই যে চাকরি পাওয়া নয় তা এদিন ফের একবার জোর দিয়ে বোঝাতে দেখা গেল মানিককে। তাঁর কথায় উঠে আসে নিট-কলেজ সার্ভিস কমিশনের চাকরির পরীক্ষার কথা। তাহলে বর্তমানে যাঁরা আন্দোলনে রয়েছেন তাঁরা কী সকলে চাকরি পাবেন না? নতুন করে শুরু হয়েছে চাপানউতর। তাঁর কথায়, “আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। তাঁদের প্রতি আমার যথেষ্ট সহমর্মিতা রয়েছে। আমি তাঁদের কাছে অনুরোধ করছি তাঁরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিক”। শুরু এ কথা নিয়ে হয়েছে চর্চা। 

সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা? 

গৌতমের দাবি, “কেউ যদি বলেন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অন্যায় হয়েছে তাই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেব না, আমি অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করব। করতেই পারেন। কিন্তু, নিয়োগ প্রক্রিয়া দেরি হলে সকলের বয়স বেড়ে যাবে। আমি অনুরোধ করছি সবাই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিন। আমি খুব তাড়াতাড়ি তাঁদের অ্যাপেন্টমেন্ট লেটার দেব। পরবর্তী বছরেও ২ বার নিয়োগ করব। আমি সরকার এবং মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষা দফতর অত্যন্ত সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে।” এদিকে চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন তুলতে এর আগে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে সরকারের তরফে। এরইমধ্যে জারি হয়ে গিয়েছে ১১ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেট পাশ প্রার্থীরাই নিয়োগে অগ্রাধিকার পাবেন। এমতাবস্থায় আন্দোলনের ‘পাশে’ দাঁড়িয়েও চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার অনুরোধ আদপে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সরকারের যে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছিল তাই ফেরানোর চেষ্টা করছেন গৌতম, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের বড় অংশের। 

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ করবেন বলেছেন। আমাদের অপেক্ষা করতে ববে কী হচ্ছে তা দেখার জন্য। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ স্বশাসিত সংস্থা। যদি গৌতম পাল সরকারি আদেশ-নির্দেশকে উপেক্ষা করে বা মেনে সঠিকভাবে নিয়োগ করতে পারেন তাহলে তাঁকে স্যালুট জানব।”