Kunal Ghosh: পার্থকে সরাতে প্রকাশ্যে সরব কেন কুণাল-দেবাংশু? তৃণমূলের শৃঙ্খলা নিয়েই প্রশ্ন বিরোধীদের
Samik Bhattacharya: "এটায় কি নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইছেন? না দলে কোনও গণতন্ত্র নেই, এটা বোঝাতে চাইছেন? না দলে তাঁর কথা কেউ মানছেন না, এটা বোঝাতে চাইছেন? বিষয়টি আমার কাছে খুব একটা স্পষ্ট নয়।"
কলকাতা: তৃণমূল অন্দরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ থেকে সরানোর দাবি উঠল। কিন্তু কেন তা প্রকাশ্যে? তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের টুইট নিয়ে জোর সওয়াল করছেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। রাজ্যের মন্ত্রীও। তাঁকে সরানোর জন্য যদি কারোর বক্তব্য থাকে, তা দলের ভিতরে না রেখে, প্রকাশ্যে করছেন কেন? এটি কি দলেরই কোনও ‘স্ট্যান্ড’ নাকি নেতাদের নিজেদের মুখরক্ষার তাগিদ? প্রশ্ন তুলছে যুযুধান প্রতিপক্ষ।
অপা-বিতর্কে লক্ষ্মীবারে বড় কোনও সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে পারে তৃণমূল। এমনটা সূত্রের খবর। আজ বিকেলে তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠক রয়েছে। ঠিক তার আগে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিস্ফোরক টুইট করেন। কুণাল বলেন, “অবিলম্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দলের সমস্ত পদ ও মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। তাঁকে বহিষ্কার করা উচিত। যদি আমার এই বক্তব্য ভুল হয়, তাহলে দলের পূর্ণ অধিকার রয়েছে, আমাকে দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার।”
এ দিনের টুইটে কুণাল স্বভাবতই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সমস্ত পদ থেকে অবিলম্বে সরানো উচিত। বুধবার বেলঘরিয়ায় অর্পিতার মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে ফের ২৮ কোটি টাকা উদ্ধার হওয়ায় কুণালও তাঁর অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, কুণাল তাঁর এই বক্তব্য দলের ভিতরেই রাখতে পারতেন, যেখানে আজই শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আসলে বৈঠকের আগে পার্থকে সরানোর জন্য দলকে চাপে রাখার চেষ্টা করছেন কুণাল।
কুণাল ঘোষের এই টুইট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “কুণাল ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, একইসঙ্গে তিনি দলের মুখপাত্র। তিনি গত এক বছর ধরে দলকে রিপ্রেজেন্ট করছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখছেন, কিন্তু আমি কখনও শুনিনি, দলের একজন সাধারণ সম্পাদক এত গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দলের অভ্যন্তরে না কথাটি বলে, টুইট করে তিনি মানুষকে জানাচ্ছেন। এটায় কি নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইছেন? না দলে কোনও গণতন্ত্র নেই, এটা বোঝাতে চাইছেন? না, দলে তাঁর কথা কেউ মানছেন না, এটা বোঝাতে চাইছেন? বিষয়টি আমার কাছে খুব একটা স্পষ্ট নয়।”
উল্লেখ্য, কুণাল ঘোষ পরে এই টুইটটি নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে মুছেও ফেলেন। বদলে তিনি আরও একটি টুইট করেন। যার সারবত্তা, এখন দল পার্থ ইস্যুতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বৈঠক হবে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাই তিনি তাঁর ব্যক্তিগত টুইট ‘ডিলিট’ করেন।
তৃণমূল অন্দরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ক্ষোভ আরও প্রকাশ্যে আসে। কুণালের সুরেই টুইট করেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ফোঁড়ায় যখন পুঁজে ভরে এসেছে, অনতিবিলম্বে তাকে ফাটিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। তাতে শরীর ভালো থাকে, শান্তিতে ঘুমানো যায়। একটি ফোঁড়ার জন্য গোটা শরীরকে কষ্ট দেওয়া বৃথা।”
কুণাল-দেবাংশুর মতো নেতৃত্ব কেন সামাজিক মাধ্যমে এসে মুখ খুলছেন, তদুপরি শাসকদলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।