Na Bollei Noy: পুজোর আগে টাকার পাহাড় দেখেছে রাজ্য, ওই টাকা কি ভূতে দিয়ে গিয়েছে? যে কথা ‘না বললেই নয়’

Na Bollei Noy: পুজোর আগে টাকার পাহাড় দেখেছে বাঙালি, প্রশ্ন হচ্ছে এই পাপ তবে কার? ওই টাকা ভূতে দিয়ে গেছে?

Na Bollei Noy: পুজোর আগে টাকার পাহাড় দেখেছে রাজ্য, ওই টাকা কি ভূতে দিয়ে গিয়েছে? যে কথা ‘না বললেই নয়'
না বললেই নয়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 25, 2022 | 3:11 PM

কলকাতা: শুভ শারদীয়া। ভোররাতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ দেবীপক্ষের সূচনা করে দিল। আমাদের TV9 বাংলাতেও ছিল অন্য আগমনী। পুজো আসছে। পুজো তো আসলে পুজো নয়। কোটি কোটি বাঙালির রোজগার। পুজোকে ঘিরে হরেক বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড। কয়েক বছর আগের একটা হিসেব অনুযায়ী দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে রাজ্যে প্রায় চল্লিশ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। করোনা অতিমারীর পর এই প্রথমবার কোনওরকম বিধিনিষেধ ছাড়া পুজো। লক্ষ্মীর ঝুড়ি উপচে পড়বে। সেটাই তো কাম্য। কিন্তু, লাভের গুড় তো পিঁপড়ে খেয়ে গেল। পুজোর ঠিক আগে আগেই বাঙালি যে টাকার পাহাড় দেখল, তা কি কাম্য ছিল? 

TV9 বাংলার কল্যাণে বীরভূমে অনুব্রত ও তাঁর কন্যার যে অকল্পনীয় সম্পত্তির হদিশ মিলছে, তা কি কাম্য? হকের চাকরির জন্য হাজারও তরুণ-তরুণী দেড় বছর রাস্তায় বসে আছেন। তাঁদের এই বেইজ্জতি কাম্য? আর পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে ওই হকের চাকরিগুলো যাঁরা রসগোল্লার মতো গিলেছেন, সেই শিক্ষকরা এই সমাজে কাম্য? মহার্ঘ্য ভাতার আশায় বসে থাকা সরকারি কর্মচারী? তাঁদের এই চাতকপাখির দশা কাম্য? পুজোর আগে যা খবর বাংলার মানুষ দেখছেন, তা দেখাতে না হলে বোধহয় আমরাও খুশি হতাম। কিন্তু, ওই টাকার পাহাড় লুকিয়ে রাখবে কে? লুকিয়ে রাখা যায়নি বলেই গার্ডেনরিচের আমির খান গ্রেফতার হয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও দাবি করে চলেছেন ওই টাকা তাঁর নয়। হয়তো অনুব্রত মণ্ডলও তাঁর ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞীর সমতূল্য ঐশ্বর্য নিয়ে একই যুক্তি সাজাবেন।

প্রশ্ন হচ্ছে এই পাপ তবে কার? ওই টাকা ভূতে দিয়ে গেছে? ওই সম্পত্তি ভূতে ভোগ করেছে? আমাদের দেশে ভূতুড়ে কাণ্ড অনেক ঘটে। এই যেমন রাজনৈতিক দলগুলির বিপুল সম্পত্তি। নির্বাচন কমিশনে নিয়ম মেনে হিসেব দাখিল হয়। কিন্তু, টাকার উত্‍স কী? প্রায় সব দলই ব্যালান্স শিট মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে। অর্থাত্‍ এখানেও ভূতুড়ে ডোনার। পঞ্জাবে পঁচিশ কোটি। দিল্লিতে চল্লিশ কোটি। মহারাষ্ট্রে নাকি আরও মোটা অঙ্ক। বিহার, ঝাড়খণ্ড। সব রাজ্যেই রেট আছে। চার্ট পেশ করেছেন উদ্ধব, নীতীশ থেকে কেজরিওয়াল। বিজেপি নাকি, রাজ্য বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ওই রেটে বিধায়কদের অফার দেয়। ঘোড়া কেনাবেচার বরাদ্দ। আবার বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবীশের অভিযোগ ছিল, তৃণমূল গোয়ায় সুটকেস নিয়ে গিয়েছে। অভিযোগ সকলেই করেছে। চার্টার্ট প্লেনের খরচ নিয়ে অভিযোগ। হেলিকপ্টার ভাড়া নিয়ে অভিযোগ। হোটেল-রিসর্ট বুকিং নিয়ে অভিযোগ। সকলেই সকলের দিকে আঙুল তুলছে। প্রমাণ কেউ দেয়নি এখনও পর্যন্ত। কিন্তু যেখানে হিসেব রয়েছে? সেখানে সকলেই কিন্তু, সামান্য বেহিসেবি। আটটি রাজনৈতিক দল। সঙ্গে সাতাশটি আঞ্চলিক দল। তাদের ব্যালান্স শিট জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। আমরা এবার একটু পাতি পাটিগণিতে জমা খরচের হিসেব খতিয়ে দেখব। পাবলিকের হকের টাকা। খোলা খাতা। আমরা তাতে একটু চোখ রাখলে ক্ষতি কী? 

আমাদের রাজ্যে ইদানিং ভূতুড়ে ঘটনা অবশ্য বেশি ঘটছে। লাশও কি গায়েব হয়ে যাচ্ছে? এই দেখুন পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকারি তথ্যই বলছে, গতবছর শতাধিক কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। আবার সরকার দাবি করছেন কেউ মারা যায়নি। অনেকটা জেসিকা লাল হত্যাকাণ্ডের মতো। লোয়ার কোর্টের রায় ছিল কেউ খুন করেনি। নো ওয়ান কিলড জেসিকা। কিন্তু, সেই রায়ে জেসিকা লাল বেঁচে ওঠেননি। পশ্চিম মেদিনীপুরের কৃষকরাও এবারের পুজোয় বেঁচে উঠবেন না। রাস্তায় ধারে বসে থাকে শিক্ষক। তদন্তের অপেক্ষায় দিন গোনা টাকার পাহাড়। হিসেবহীন সম্পত্তি। মৃত কৃষক। এবার দেবীপক্ষে সকলেই অপেক্ষায়। তাই,কিছু কথা আজ না বললেই নয়। টিভি নাইন বাংলায় না বললেই নয়। রাত ৮.৫৭। দেখবেন কিন্তু।