Subrata Mukherjee: আজও অন্তরালেই থাকলেন, ‘দাদা’র স্মৃতিচারণার মুহূর্তে মমতা নিজেকে ব্যস্ত রাখলেন নবান্নে ফাইলের ফাঁসে
Subrata Mukherjee: আড়ালে থেকেই তাঁকে আজ শ্রদ্ধা জানালেন তিনি। ভারাক্রান্ত মনে নবান্নেই নিজেকে ব্যস্ত রাখলেন কাগজ-কলম-ফাইলের মাঝে।
কলকাতা: পারলেন না, তিনি আজও পারলেন না। প্রয়াত বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শেষ যাত্রায় অংশ নেবেন না, আগেই বলে দিয়েছিলেন তিনি। তবে বিধানসভায় তাঁর স্মৃতিচারণাতেও যোগ দিতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলা ভালো, ‘সুব্রতদা’র’ স্মৃতিচারণায় অংশ নিলেন না ‘বোন’ মমতা। আজ, সোমবার যে সময় বিধানসভায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণায় নস্ট্যালজিক হয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে সহযোদ্ধা পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমরা, তখন খবর পাওয়া গেল নবান্নে ঢুকছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাত্ ‘দাদা’র স্মৃতিতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে মমতা নিজেকে ব্যস্ত রাখলেন কাজেই। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেদনাহত। তিনি শেষ যাত্রাতেও যেতে পারেনি। আজও আসতে পারেননি।”
বৃহস্পতিবার, কালীপুজোর সন্ধ্যায় আচমকাই গোটা রাজ্যে নেমে আসে অন্ধকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন বলেছিলেন, “বাড়িতে পুজো, কিন্তু আমি মন স্থির রাখতে পারিনি। মনটা আনচান করছিল। সুব্রতদার শরীরটা খারাপ হচ্ছে খবর পাচ্ছিলাম। অবশেষে এল মৃত্যুসংবাদ। আমি গোয়ায় থাকতেই খবর পেয়েছিলাম। দৌঁড়ে গিয়েছি হাসপাতালে। আমাকে বলেছিলেন, আমি ঠিক আছি, প্রোগাম দে, গোয়া যাব।”
সেই ছাত্র রাজনীতি, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগমায়া কলেজে ছাত্র ইউনিয়ন করছেন, তখন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছাত্র পরিষদের সভাপতি। মমতা বন্দোপাধ্যায়কে একদিন ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সেই স্নেহের বন্ধন আজও অমলিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “সুব্রতদার সঙ্গে আমার সম্পর্কের ভিত শক্ত হয়েছে। কখনও মনে হয়নি, আমি মুখ্যমন্ত্রী আর তিনি মন্ত্রী। সব সময় ভেবেছি, ওঁ দাদা। আমি বোন।” তারপর রাজনীতির জল গড়িয়েছে অনেকদূর। মুখ্যমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের তাঁর সম্পর্কে কথাগুলো বলার সময়ে ভেঙে পড়েছিলেন বৃহস্পতিবার রাতে। তারপর থেকে প্রকাশ্যে তিনি আর এ ব্যাপারে কোনও কথাই বলেননি। অংশ নেননি শেষযাত্রাতেও।
বিধানসভা ভবনটা ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে মন্দিরের মতো। প্রথম পা রেখেছিলেন ১৯৭১ সালে। তারপর প্রায় পাঁচ দশক পরিষদীয় রাজনীতিতে কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। পরিষদীয় রাজনীতিতে পঞ্চাশ বছর পূরণের পর টিভি নাইন বাংলায় কথাবার্তা অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই সাক্ষাৎকারে সুব্রতবাবু জানিয়েছিলেন একুশের ভোটের পর প্রথম বিধানসভায় যাওয়ার অনুভূতির কথা। তাঁর কথায়, “বিধানসভার অধ্যক্ষ মনে করিয়ে দিয়েছিলেন আমার এই পঞ্চাশ বছরের কথা। তখন ভেবেছিলাম, একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। তার পর নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে পড়ি।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “ওঁকে শতবার প্রণাম জানাই।” মনেপ্রাণে তাঁকে শ্রদ্ধা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শেষ যাত্রার দিনেও সারাদিন অন্তরালে থেকে গোটা প্রক্রিয়ার দেখাশোনা করেন তিনি। আড়ালে থেকেই তাঁকে আজ শ্রদ্ধা জানালেন তিনি। ভারাক্রান্ত মনে নবান্নেই নিজেকে ব্যস্ত রাখলেন কাগজ-কলম-ফাইলের মাঝে।
আরও পড়ুন: Inhuman: বর্বরতা! এক্সাইড মোড়ে যুবককে রাস্তায় ফেলে বুকে বুট পরা পা তুলে দিল গ্রিন পুলিশ!