Sukanta Majumder: ‘রাজ্য সরকার কলপাড়ের মাসিদের মতো ঝগড়া করছে’, UGC-র খসড়া নিয়ে বিরোধিতা করায় সুকান্তর সুর সপ্তমে
Sukanta Majumder: প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি রয়েছে রাজ্যের তৈরি করা কমিটির সদস্যদের। কিন্তু কোন কোন বিষয়ে আপত্তি, সেগুলো স্পষ্ট নয়। আগামী বুধবার ফের বৈঠক, সেখানে যে বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি, তা নিয়েই আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
কলকাতা: জাতীয় শিক্ষানীতি-পর্বের পর আবারও শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত। এবার প্রেক্ষাপট ইউজিসি-র (UGC) একটি খসড়া নিয়ে। চলতি বছরের শুরুকেই ইউজিসি-র তরফে একটা খসড়া প্রকাশ করা হয়েছিল। সমস্ত স্টেক হোল্ডারদের কাছ থেকে সে বিষয়ে মতামত চেয়েছিল ইউজিসি। সেই খসড়া খতিয়ে দেখে মতামত জানানোর জন্য ১২ সদস্যের কমিটি তৈরি করে রাজ্য। প্রাথমিক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি মিটিংও করেন কমিটির সদস্যরা। কেবল মিটিংই নয়, ভার্চুয়ালি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগও রেখে চলেছেন। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই খসড়া নিয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা করার কথা। আর সেখানেই দ্বন্দ্ব।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি রয়েছে রাজ্যের তৈরি করা কমিটির সদস্যদের। কিন্তু কোন কোন বিষয়ে আপত্তি, সেগুলো স্পষ্ট নয়। আগামী বুধবার ফের বৈঠক, সেখানে যে বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি, তা নিয়েই আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
কী বলা রয়েছে UGC এর খসড়ায়?
১. প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি নিয়ে যাঁরা স্নাতকোত্তর করেছেন, তাঁরা NET পরীক্ষা ছাড়াই অধ্যাপনা করতে পারবেন।
২. প্রফেশনাল কোর্সে হাতে কলমে অভিজ্ঞতায় জোর দেওয়া হবে।
৩. একজন ছাত্রের স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ভিন্ন বিষয়ে হলে তিনি পিএইচডির বিষয় নিয়েই অধ্যাপনা করতে পারবেন, মাস্টার্সের বিষয়ে নয়।
৪. অধ্যাপকদের পদোন্নতি নির্ভর করবে সামাজিক কাজ, স্টার্ট আপে অংশগ্রহণ ও বেদ বেদান্ত-সহ ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমে অংশগ্রহনের ওপরও।
প্রসঙ্গত, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতিতে সম্প্রতি বড় পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করেছে ইউজিসি। তাতে আচার্য তথা রাজ্যপালের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই নিয়ে আগে থেকেই কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এই খসড়ার একাধিক বিষয় নিয়েও আপত্তি রয়েছে বলে খবর।
এই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আমাদের তো অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আপত্তি রয়েছে। UGC তো সম্পূর্ণভাবে দেশের বহুত্ববাদকেই ধ্বংস করতে চাইছে। UGC প্রায় বিজেপির লাইনে কথা বলেছেন।”
অধ্যাপক থেকে নন্দিনী মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমার মনে হয় এই সমস্ত ক্ষেত্রে একটা ইউনিফর্মিটি রাখা উচিত। অল ইন্ডিয়া লেভেলের নেট কিংবা গেট কোয়ালিফিকেশন থাকা দরকার। রাজ্য় সরকারের কথা যত কম বলা যায়, ততই ভালো। কারণ বিকাশ ভবনে এই মুহূর্তে ২ হাজার শিক্ষকের অ্যাপ্লিকেশন পড়ে রয়েছে। যেখানে শিক্ষকদের প্রোমোশন আটকে রাখা হয়েছে। নিয়োগ নেই, রাজ্য সরকার তো কিছুই করতে চাইছে না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জন ১০-১২ বছর অধ্যাপনার পর অ্যাস্টিস্ট্যান্ট প্রফেসর হয়ে বসে রয়েছেন!”
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকলে কমিটির মাধ্যমেই জানাক না, কোথায় আপত্তি? তারপর UGC সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও যদি রাজ্য না মানে, তাহলে UGC কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য আশা করবেন না। পুরোটাই রাজনৈতিক স্বার্থে আপত্তি। রাজ্য সরকার তো কলপাড়ের মাসিদের মতো ঝগড়া করছে।”