Sujit Chattopadhyay: পদ্মশ্রী বিজেতা ২ টাকার মাস্টারমশাই, সম্মান পেয়ে কী বললেন ‘সদাই ফকির’?

Padmashree: পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের রামনগর। এখানেই চলে ‘সদাই ফকিরের পাঠশালা’। পাঠশালার 'গুরুমশাই' সুজিত চট্টোপাধ্যায় (Sujit Chattopadhyay)। প্রায় ৩০০ পড়ুয়া পড়ে এই পাঠশালায়। পড়ুয়া পিছু ‘গুরুদক্ষিণা’?

Sujit Chattopadhyay: পদ্মশ্রী বিজেতা ২ টাকার মাস্টারমশাই, সম্মান পেয়ে কী বললেন 'সদাই ফকির'?
অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 01, 2021 | 5:36 PM

পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের রামনগর। এখানেই চলে ‘সদাই ফকিরের পাঠশালা’। পাঠশালার ‘গুরুমশাই’ সুজিত চট্টোপাধ্যায় (Sujit Chattopadhyay)। প্রায় ৩০০ পড়ুয়া পড়ে এই পাঠশালায়। পড়ুয়া পিছু ‘গুরুদক্ষিণা’? বছরে মাত্র ২ টাকা। সঙ্গে চারটি চকোলেট! হ্যাঁ। শিক্ষক পড়ুয়া সম্পর্ক নিয়ে যখন নানা বিচ্ছিন্ন ঘটনা শোনা যায় সেই সময় দাঁড়িয়ে এক অনন্য় চরিত্র এই সুজিত চট্টোপাধ্যায়। এবারের পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত তিনি।

৭৮ বছরের ‘মাস্টারমশাই’ প্রান্তিক এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়ান নামমাত্র দক্ষিণায়। কেন প্রশ্ন করলে স্মিত হেসে সুজিতবাবুর উত্তর, ‘আমার ছেলে চাকরি করে… আমার অত টাকার কী দরকার?’

রামনগর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ৪০ বছর স্কুলে পড়ানোর পর অবসর নেন তিনি। তার পর গত ১৮ বছর ধরে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের গরিব-দুঃস্থ পরিবারের পড়ুয়াদের প্রাইভেট টিউশন দেন তিনি। নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পাশাপাশি প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের পড়ান। তাঁর পাঠশালার ৮০ শতাংশই ছাত্রী।

শুরুটা ১৮ বছর আগে। কয়েকজন পড়ুয়া এসে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘মাস্টারমশাই আমাদের পড়াবেন?’ অবসর জীবনে কী করবেন তিনি, পড়াতেই তো চান। বেশি সময় নেননি ভাবতে। বলেছিলেন পড়াব। কিন্তু তার পর শোনেন এক অস্বস্তিকর প্রশ্ন। ‘পড়াতে কত পারিশ্রমিক নেবেন মাস্টারমশাই’। সুজিতবাবু বলেন, ‘বছরে একটাকা দিতে পারবি?’ নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়াচায়ি করে পড়ুয়ারা। এত কম?

এভাবেই শুরু ‘সদাই ফকিরের পাঠশালা’। তার পর কেটে গিয়েছে ১৮টা বছর। মাস্টারমশাইয়ের ‘ইনক্রিমেন্ট’ বলতে একটাকা। মানে এখন প্রায় তিনশো পড়ুয়া বছরে মাস্টারমশাইকে দেন দু’টাকা করে। এবছর পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত সেই মাস্টারমশাই-য়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল টিভি নাইন বাংলা।

মাস্টারমশাইয়ের কথায়, “অবসরের পর আমি চাইছিলাম পড়াতে। কারণ পড়ানো ছাড়া তো আর কোনও কাজ আমি পারিনা। মাধ্যমিক পাশ কয়েকজন ছেলেমেয়ে আমাকে প্রশ্ন করে স্যর আমাদের পড়াবেন? বললাম হ্যাঁ। কিন্তু ওদের একটা প্রশ্নে ধাক্কা খেলাম। স্যর কত নেবেন?”

মাস্টারমশাই যোগ করেন, “বললাম, দ্যাখ আমার বছরে মাইনে একটাকা। দিতে পারবি তো? ওরা শুনে খুশি। বলল, হ্যাঁ। সেই শুরু।” একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “পদ্মশ্রীটা আগে নয়, ওরা আগে।”

তবে শুধু ছাত্র পড়ানো নয়। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সাহায্যেও হাত লাগান তাঁরা। পড়ুয়াদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে চাঁদা তুলে রোগী পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি। তবে খারাপ অভিজ্ঞতা কি নেই এই দীর্ঘ সফরে? অবশ্যই আছে। তখন অমর্ত্য সেনের সঙ্গে ছবিটার দিকে চোখ যায়। ভাবেন, জটিল অর্থনীতির বোঝা নাইবা চাপল ওদের ঘাড়ে।

আরও পড়ুন: Mamata In Mumbai: ‘কম কথা, বেশি কাজে বিশ্বাস করি’, বাণিজ্যনগরীতে গিয়ে বার্তা মমতার