‘শূন্যে নেমেও শিক্ষা হয়নি’, অজন্তার শাস্তিতে অনিল বিশ্বাসের অবদান মনে করাল তৃণমূল

জাগো বাংলায় কলম ধরার পর দলের রোষের মুখে পড়েছেন অনিল-কন্যা অজন্তা। সিপিএমের সেই সিদ্ধান্তে কড়া প্রতিক্রিয়া ঘাসফুল শিবিরের।

'শূন্যে নেমেও শিক্ষা হয়নি', অজন্তার শাস্তিতে অনিল বিশ্বাসের অবদান মনে করাল তৃণমূল
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2021 | 1:35 PM

কলকাতা: তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’ নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করার পরই তাতে কলম ধরেন বাম নেত্রী তথা ইতিহাসের অধ্যাপিকা অনিল বিশ্বাসের মেয়ে অজন্তা বিশ্বাস।  ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে অজন্তার কলমে উঠে এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা। আর তারপরই ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে অজন্তাকে। সিপিএমের এই সিদ্ধান্তকে ‘গোষ্ঠীবাজি’র পরিণাম বলে উল্লেখ করল তৃণমূল। আজ, সোমবার ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকীয়তে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। সেই প্রতিক্রিয়ায় বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের অবদানের কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, অজন্তা বিশ্বাস যে সিপিএমে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, সে কথাও স্মরণ করা হয়েছে বাম নেতাদের।

ঘাসফুল শিবিরের দাবি অনিল-কন্যার বিশেষ অবদান র‍য়েছে। অনিল বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করে তৃণমূল দাবি করেছে যে, ২০০১-এ বামেদের ক্ষমতায় ফেরার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। অনিল বিশ্বাসের মৃত্যুর পর সেই সহানুভূতির খাতিরেই বাম শিবিরে এসেছিল বিপুল ভোট। তা সত্ত্বেও তাঁর মেয়েকে এই ধরনের শাস্তি দেওয়া বামেদের সংকীর্ণতার পরিচয় বলে উল্লেখ করেছে তৃণমূল।

জেদের কারণে দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে এমন উদাহরণও তুলে ধরেছে তৃণমূল। তুলে আনা হয়েছে, নৃপেণ চক্রবর্তী, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়দের কথা। সেই তালিকাতেই অজন্তান নাম জুড়ে যেতে পারে বলেও মনে করছে তৃনমূল। প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল বাম শিবিরের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়ে বলেছে, ‘আজব দল সিপিএম। নিজে ডুবেছে। শরিকদের ডুবিয়েছে। শূন্যে নেমেও এখনও শিক্ষা হয়নি।’ অজন্তার বিরুদ্ধে নেওয়া এই সিদ্ধান্তে সিপিএম ‘সময় এলে সঠিক জবাব পাবে’ বলেও উল্লেখ করেছে তৃণমূল।

‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক ধারাবাহিক লেখা তৃণমূলের মুখপত্রে প্রকাশ পেয়েছিল গত ২৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই তিন কিস্তিতে। শেষ কিস্তিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তিও ছিল। তাতেই ক্ষুব্ধ হয় বাম নেতৃত্ব। প্রাথমিকভাবে, সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার তৃণমূলের মুখপত্রে অজন্তার উত্তর সম্পাদকীয় লেখাকে ‘খারাপ কাজ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। দলের সদস্য হয়ে প্রতিপক্ষ দলের মুখপত্রে বিনা অনুমতিতে লেখা যে মেনে নেওয়া হবে না তখনই স্পষ্ট করে দেয় সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব।

প্রাথমিকভাবে তিনমাসের জন্য সাসপেনশনের মুখে পড়েছিলেন অনিল-কন্যা। পরে সেই ‘শাস্তির’ মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। আগামী ৬মাসের দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে অজন্তা বিশ্বাসকে। অজন্তা যে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তাতে সন্তুষ্ট হয়নি এরিয়া কমিটি। টানা কয়েকদিন নিজের অবস্থানে অনড় থাকার পর অজন্তা জানিয়েছিলেন, তিনি এই ঘটনার জন্য দুঃখিত। তাঁর এই লেখায় কেউ যদি দুঃখ পেয়ে থাকে তা হলে তার জন্য তিনি ক্ষমা চাইছেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তিনি সতর্ক থাকবেন। আরও পড়ুন: ফের ১২১ নম্বর ওয়ার্ডেই! বেহালার শুটআউটে আবারও শাসক-কোন্দলের ইঙ্গিত