Mamata Banerjee: কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’ নয়, ‘ইন্ডিয়া’য় এবার কি তৃণমূলের ‘দিদিগিরি’?
Mamata Banerjee: লোকসভা নির্বাচনে আগে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে গরহাজির ছিল তৃণমূল। আবার বাংলায় রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা নিয়েও চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "রাহুলের ন্যায় যাত্রা পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া উচিত ছিল।"
কলকাতা: দুই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার মধ্যে মহারাষ্ট্রে মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আঘাড়ি। তবে ঝাড়খণ্ডে জেএমএম, কংগ্রেস ও আরজেডির জোট ফের মসনদ দখল করেছে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে ৬টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনে সবগুলিই জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর শনিবার এই ফল বেরনোর পরই ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেসের গুরুত্ব কমা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তেমনই তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্ব ইন্ডিয়া জোটে আরও বাড়ল কি না, তা নিয়েও শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরোধিতায় বিরোধীরা জোট গড়ে। নাম দেয় ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স(ইন্ডিয়া)। সেই ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম দুই শরিক কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। জোট হলেও বিভিন্ন রাজ্যে আসন বণ্টন নিয়ে মতপার্থক্য দেখা যায়। বিরোধী সেই জোটে থাকলেও বাংলায় পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসময় লোকসভার প্রচারে মমত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ইন্ডিয়া জোট তিনি তৈরি করেন। নামটা তাঁরই দেওয়া।
জোটে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’-র অভিযোগ তোলে ইন্ডিয়ার শরিকরাই। লোকসভা নির্বাচনে আগে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে গরহাজির ছিল তৃণমূল। আবার বাংলায় রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা নিয়েও চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “রাহুলের ন্যায় যাত্রা পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া উচিত ছিল।”
এই খবরটিও পড়ুন
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে ইন্ডিয়া জোটে সবচেয়ে বেশি আসন জেতে কংগ্রেস। তারা ৯৯টি আসন পায়। সমাজবাদী পার্টি পায় ৩৭টি আসন। আর ২৯টি আসন পেয়ে বিরোধী জোটে তৃতীয় স্থানে থাকে তৃণমূল। কিন্তু, কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির চেয়ে অনেক কম আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূল। আবার বাংলায় আসন বাড়াতে কোমর বেঁধে নেমেছিল বিজেপি। সেখানে বাংলায় বিজেপির আসন কমে যায়।
লোকসভায় বিরোধী দলনেতা এখন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিরোধী জোটে ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রায়ই ওঠে। লোকসভা নির্বাচনের পর হরিয়ানা ও জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটে থাকলেও আলাদভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অরবিন্দ কেজরীবালের আপ। আসনরফা নিয়ে মতপার্থক্য হয়। তার জেরে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ময়দানে দেখা যায়। হরিয়ানায় খারাপ ফল করে কংগ্রেস। জম্মু ও কাশ্মীরের কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্স জয়ী হয়। কিন্তু, কংগ্রেসের আসন কমে।
এবার মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডেও আশানুরূপ ফল করতে পারল না কংগ্রেস। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের কার্যত ভরাডুবি হয়েছে। ঝাড়খণ্ডে জেএমএম, কংগ্রেস ও আরজেডির জোট জিতেছে। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, এই জয়ের কৃতিত্ব মূলত জেএমএম-র।
অন্যদিকে, বাংলায় ৬ আসনে উপনির্বাচনে এদিন সবগুলিই জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসকদলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বিজেপি। এদিন প্রাপ্ত ভোটের নিরিখেও বিজেপিকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে তৃণমূল। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, বিজেপি বিরোধিতায় বিরোধী জোটের মধ্যে গুরুত্ব আরও বাড়ছে তৃণমূলের। তেমনই একের পর এক নির্বাচনে হারের পর কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’ আর চলবে না ইন্ডিয়া জোটে। বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনে আসনরফা নিয়ে গুরুত্ব বাড়বে আঞ্চলিক দলগুলির।