চার তলা হচ্ছে তিলজলার তৃণমূল ভবন, কী কী থাকছে নয়া হেড অফিসে?

২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলকে ছড়িয়ে দেওয়ার যে মিশন নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী, তার অংশ হিসাবে দলের সদর দফতরকেও নতুন চেহারা দিতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

চার তলা হচ্ছে তিলজলার তৃণমূল ভবন, কী কী থাকছে নয়া হেড অফিসে?
অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 8:37 PM

সৌরভ গুহ: একুশের বিধানসভা ভোটে বিরাট ব্যবধানে জয়। তার পর সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এবার নতুন করে সাজছে তৃণমূলের (TMC) সদর দফতরও। তিলজলার তৃণমূল ভবন এই পার্টি অফিস তৈরি হয় ২০০২ সালের ২০ মে। বাংলার রাজনীতিতে অনেক উত্থান-পতনের স্বাক্ষী এই তৃণমূল ভবন। একুশের ভোটে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসে সর্বভারতীয় স্তরে সংগঠনকে জোরদার করার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সঙ্গে বদলে যাচ্ছে তৃণমূল ভবনের সজ্জাও। গত ৫ জুন তৃণমূল ভবনকে ঢেলে সাজানোর ওপরও জোর দেন তিনি।

কয়েক দিন আগে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক। নেতা-কর্মী-সাংবাদিকদের ভিড়ে তিলধারনের জায়গা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে একটু মানিয়ে নিয়ে বসতে বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ভবনের অবস্থা ভাঙাচোরা। সারাতে হবে।

কী কী থাকছে নয়া তৃণমূল ভবনে?

এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার শাখা সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বসার জন্য বেশ কয়েকটি ঘরের প্রয়োজন পড়েছে। ভিড় বেড়েছে ভবনে। আগামী লোকসভা ভোটের আগে কাজ আরও বাড়বে। সেই লক্ষ্যেই এবার ভবনের সংস্কার করার বিষয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।

জানা গিয়েছে, মূল তৃণমূল ভবনের পিছনে যে এনেক্স বিল্ডিং রয়েছে, তা ভেঙে একটি স্থায়ী ভবন বানানো হবে। সূত্রের খবর, এবার চার তলা হবে তৃণমূলের হেড অফিস। তাছাড়া ভবনে একটি সুলভ ক্যান্টিনও করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই কাজের জন্য পাশে আরও জমি লাগতে পারে। তার জন্য ইতিমধ্যে কথাবার্তা শুরু হয়েছে বলে খবর। আর নতুন এই ভবনে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব-সহ শাখা সংগঠনের প্রধানদের থাকার জন্য ঘরের বন্দোবস্ত করা হবে। থাকবে কনফারেন্স কক্ষ। সেই বড় হলঘরে হবে দলের যাবতীয় বৈঠক।

প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের নির্বাচনী প্রচারে তখন তুঙ্গে শুভেন্দু বনাম তৃণমূল তরজা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এই তৃণমূল ভবন নিয়েও অভিযোগ করেছিলেন অধুনা বিজেপি নেতা তথা বর্তমানে বিধানসভার বিরোধী নেতা। এক সভা থেকে শুভেন্দু বলেছিলেন, “কলকাতার তৃণমূল ভবন তৈরি হয়েছে এনডিএ সরকারের কো-কনভেনর জর্জ ফার্নান্ডেজের দেওয়া টাকায়।” রাজনৈতিক মহলের মতে, কার্যত ঘুরিয়ে শুভেন্দু বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন বিজেপির টাকাতেই তৈরি হয়েছে তৃণমূল ভবন।

১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা হয় তৃণমূলের। ১৯৯৯ সালে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের শরিক হয় তৃণমূল কংগ্রেস। রেলমন্ত্রী হন মমতা। সেই সময় এনডিএ সরকারের মন্ত্রী ও কো কনভেনর ছিলেন জর্জ ফার্নান্ডেজ। সেই সময় বিজেপি ও তৃণমূলের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে শুভেন্দু খোঁচা দিয়েছিলেন। তবে সেই সময় তৃণমূল ভবন তৈরির টাকা কোথা থেকে এসেছিল এই বিষয়ে এতদিন কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। আর শুভেন্দুর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়াও মেলেনি।

আরও পড়ুন: বিপর্যয়ে ‘বোধদয়’ পদ্মের: অভিমানীদের মান ভাঙিয়ে দলে টানার নির্দেশ শীর্ষ নেতৃত্বের 

তবে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলকে ছড়িয়ে দেওয়ার যে মিশন নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী, তার অংশ হিসাবে দলের সদর দফতরকেও নতুন চেহারা দিতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।