‘সাংসদ আমায় ধর্ষণ করেছে’, বলেই সুপ্রিম কোর্টের দরজায় দাঁড়িয়ে গায়ে আগুন যুবতীর, শেষে মৃত্যু
বসপা সাংসদ অতুল রাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সামনে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে নেন।
নয়া দিল্লি: সাংসদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টের দরজায় নিজের শরীরে আগুন লাগিয়েছিলেন বছর ২৪-এর এক যুবতী। মঙ্গলবার দিল্লির এক হাসপাতালে মৃত্যু হল ওই নির্যাতিতার। আত্মঘাতী ওই যুবতী উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা বলে খবর। ২০১৯ সালের বসপা সাংসদ অতুল রাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সামনে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে নেন। তাঁর সঙ্গে এক পুরুষ বন্ধু ছিলেন। তিনিও নিজের গায়ে আগুল লাগান। দু’জনকেই গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবারই নির্যাতিতার ওই বন্ধু মারা যান। মঙ্গলবার মৃত্যু হল নির্যাতিতার। দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল দু’জনকে। নির্যাতিতার শরীর ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। ৬৫ শতাংশ পুড়ে যায় তাঁর পুরুষ বন্ধুর শরীর।
২০১৯ সালের মে মাসে বসপা সাংসদ অতুল রাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। সাংসদ বারাসণীতে নিজের বাসভবনে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তবে একমাসের মাথায় সাংসদ নিজেই আত্মসমর্পণ করেন। তারপর থেকে জেলেই বন্দি তিনি।
কিন্তু ২০২০ সালে বসপা সাংসদের ভাই ওই যুবতীর বিরুদ্ধে পালটা মামলা দায়ের করেন। মিথ্যে বলে তাঁর দাদাকে ফাঁসানো হয়েছে, এই মর্মে ধাপ্পাবাজির মামলা দায়ের করেন সাংসদের ভাই। পুলিশ আদালতকে জানায়, অভিযোগকারী মহিলাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরই নড়েচড়ে বসে যুবতীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
আদালতের এই নির্দেশের কথা জানার পরই নিজের এক পুরুষ বন্ধুকে নিয়ে দিল্লি পৌঁছয় ওই যুবতী। স্বাধীনতা দিবসের পরের দিন সকালে দু’জনে মিলে একটি ফেসবুক লাইভ করে। সেই ভিডিয়োতে পুলিশের বিরুদ্ধে সাংসদের পরিবারের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ তোলে যুবতী। দু’জনেই দাবি করে, তারা ন্যায় বিচার পায়নি। বরং অভিযুক্তদের দিকে আঙুল তুলে তারা বলতে থাকে, “ওরা যেটা চেয়েছিল সেটাই হয়েছে। ওরা আমাদের এখানেই পৌঁছে দিতে চেয়েছিল। গত বছর নভেম্বর থেকে ওরা আমাদের মৃত্যু চেয়ে গিয়েছে। আর এখন সেটাই হতে চলেছে।”
এরপরই দেখা যায় যে ওই দু’জন পেট্রল জাতীয় কিছু একটা নিজেদের শরীরে ছড়াচ্ছে। এরপরই ফেসবুক ভিডিয়োটি শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ওই যুগল নিজেদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে খবর সূত্রের। সুপ্রিম কোর্টের প্রবেশদ্বারের সামনেই পুরো ঘটনাটি ঘটে। তড়িঘড়ি ওই দু’জনকে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। প্রথমে বন্ধু, ও পরে নির্যাতিতা দু’জনেই বেঘোরে মারা পড়ল। শুধু রয়ে গেল মৃত্যুর আগে দু’জনের সেই লাইভ ভিডিয়ো। আরও পড়ুন: ভারতে করোনার ‘শেষের শুরু’ হয়ে গিয়েছে! অবশেষে সুখবর শোনালেন হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী