Cattle Smuggling Case: এই চোরাপথেই অনুব্রতর জেলায় পৌঁছত পাচারের গরু, জেনে নিন নীল নকশা…

CBI: সিবিআই সূত্রে খবর, গরু পাচার মামলার মূল অভিযুক্ত এনামুল হককে জেরা করে তদন্তকারীরা যে তথ্য পেয়েছেন, তাতে স্পষ্ট হচ্ছে, উত্তর ও পশ্চিম ভারত অর্থাৎ পঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান থেকে গরু আসত বীরভূমে।

Cattle Smuggling Case: এই চোরাপথেই অনুব্রতর জেলায় পৌঁছত পাচারের গরু, জেনে নিন নীল নকশা...
গরু পাচার মামলা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 12, 2022 | 1:35 AM

কলকাতা: গরু পাচার মামলায় বৃহস্পতিবারই অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সীমান্ত পার করে গরু পাচারে অনুব্রতকে জেরা করে তথ্য তুলে আনাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থার আপাতত লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই সিবিআই এই গরু পাচার মামলা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, যে পথে গরু পাচার এগোত, সেই পথের খোঁজ ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। দেশজোড়া ছড়ানো সেই জাল।

সিবিআই সূত্রে খবর, গরু পাচার মামলার মূল অভিযুক্ত এনামুল হককে জেরা করে তদন্তকারীরা যে তথ্য পেয়েছেন, তাতে স্পষ্ট হচ্ছে, উত্তর ও পশ্চিম ভারত অর্থাৎ পঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান থেকে গরু আসত বীরভূমে। কী ধরনের গরু আনা হত? যাদের সন্তান প্রজনন ক্ষমতা নেই, বয়স হয়ে যাওয়া বলদই পাচারকারীদের প্রথম পছন্দ। ভিন রাজ্য থেকে তা আসত বীরভূমে, অনুব্রত মণ্ডলের ‘রাজত্ব’ ইলামবাজারে। এই ইলামবাজারে বসে বিরাট গরুর হাট।

সিবিআই সূত্রে খবর, এনামুল ও অন্যান্যদের জেরা করে তারা জানতে পেরেছে, ইলামবাজারের গরুর হাটের ব্যবসার ‘কনট্রোল’ থাকত আব্দুল লতিফের হাতে। সেই আব্দুল লতিফ, যাঁর নাম রয়েছে এই মামলায়, যিনি ফেরার। সেখান থেকে ট্রাকে করে গরু যেত বীরভূমের ফুটিসাঁকো বা বাদশাহি রোড ধরে মুর্শিদাবাদে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে। গ্রামের বিভিন্ন খাটালগুলিতে সেই গরু রাখা হত। তারপর অপেক্ষা করা হত বিএসএফ এবং কাস্টমসের একাংশের সবুজ সঙ্কেতের।

ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে কাস্টমস ও বিএসএফের শীর্ষ কর্তাদের একাংশের সঙ্গে এনামুল হকের সিন্ডিকেটের সরাসরি যোগসাজশ ছিল। পাচারের পরিভাষায় যাকে বলে ‘লাইন খোলা’। নির্দিষ্ট দিনে এক ঘণ্টা বা দু’ঘণ্টা সীমান্তের চোরা পথ কার্যত ‘ওপেন’ করে দেওয়া হত বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে গরু নিয়ে যেতেন স্থানীয় যুবকরা। বাংলাদেশ থেকেও আসতেন পাচারকারীরা।

শুধু স্থল সীমান্ত নয়, জল সীমান্ত ধরেও পারাপার করা হত গরু। পাচারে যাতে কোনওরকম বাধা না আসে, তার জন্য একটা সুনির্দিষ্ট চ্যানেল কাজ করত। একেবারে সুসংহত পথে এগোত তারা। ভিন রাজ্য থেকে গরু আনা থেকে শুরু করে যখন যে থানার উপর দিয়ে এই গরু পাচার হত, সেখানকার থানার কর্তা, স্থানীয় নেতা একটা মোটা অঙ্কের টাকা পেতেন। মূলত পাচারের পথ যাতে মোটে কণ্টকিত না হয়, সেটার জন্য মিলত ‘পারিতোষিক’। সিবিআই তদন্তে জানতে পেরেছে, এই টাকা জেলার প্রভাবশালী এক নেতার কাছেও যেত।

সিবিআই সূত্রে খবর, এনামুল হক বয়ানে জানিয়েছেন, গোটা সিস্টেমকে মসৃণ রাখা হত। তার জন্য বিএসএফ কর্তাদের একাংশ মোটা অঙ্কের টাকা পেতেন। একাধিক কমান্ডান্ট পর্যায়ের আধিকারিক, ডিআইজি বা আইজি স্তরের একাধিক আধিকারিক এই ঘটনায় যুক্ত। তাঁরাও আর্থিকভাবে সুবিধা পেয়েছেন বলেও এনামুল তদন্তে জানান। তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিএসএফের অভ্যন্তরীন তদন্ত চলছে। গ্রেফতার করা হয় দু’জন বিএসএফ কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমার, জেডি ম্যাথুকে। অনেক দূর এই সিন্ডিকেটের জাল ছড়ানো বলেই তদন্তে উঠে আসে। যে দামে গরু কেনা হত, তার থেকে আট, এমনকী দশ গুণ দামেও বাংলাদেশে পাচার হত, উঠে আসছে এমনই তথ্য।