Salt Lake TET Agitation: ‘দীর্ঘদিন অবিচারের শিকার, ওদের উপর পুলিশ একটু দয়ামায়া দেখাল না’; সরব পবিত্র সরকার, রুদ্রপ্রসাদ, কমলেশ্বররা

Salt Lake: পুলিশের ভূমিকার পাশাপাশি সরকারের ভূমিকা নিয়েও সরব হয়েছেন রুদ্রপ্রসাদ, পবিত্র সরকার, চন্দন সেনরা।

Salt Lake TET Agitation: 'দীর্ঘদিন অবিচারের শিকার, ওদের উপর পুলিশ একটু দয়ামায়া দেখাল না'; সরব পবিত্র সরকার, রুদ্রপ্রসাদ, কমলেশ্বররা
প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন শহরের বিদ্বজ্জনেরা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 21, 2022 | 8:05 PM

কলকাতা: চাকরির দাবিতে অনশন। সেখানেই পুলিশের অভিযান ঘিরে বৃহস্পতিবার কুরুক্ষেত্র হয়েছে করুণাময়ী। রাত ১২টা নাগাদ করুণাময়ীর অবস্থানকারীদের তুলতে ময়দানে নামে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। তাঁদের ছত্রখান করে তোলা হয় পুলিশের বাসে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের বিদ্বজ্জনেরা। টিভি নাইন বাংলায় সরব হলেন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, নাট্যকার চন্দন সেন, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র।

পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়

পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় জানান, নির্লজ্জভাবে সরানো হয়েছে অবস্থানকারীদের। এই ঘটনাকে ধিক্কার জানাতেই হয়। তিনি বলেন, “ধিক্কার জানাই পুলিশ প্রশাসনকে, যারা এত বছর ধরে চলা চাকরি চুরির চক্রকে ধরতে পারেনি। অথচ যখন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা আজ রাস্তায় নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের উপর গিয়ে পড়ল এই প্রশাসনের স্বৈরাচারী সন্ত্রাস। এই অরাজকতা পশ্চিমবঙ্গে শুধু শিক্ষাক্ষেত্রেই নয় স্বাস্থ্য, পাড়ায় পাড়ায় তোলাবাজি-সিন্ডিকেটরাজেও রয়েছে। এই প্রশাসন একটি শিক্ষাবিরোধী এবং সংস্কৃতি বিরোধী প্রশাসন। এই প্রশাসন শুধুমাত্র দুষ্কৃতীদের কীভাবে আগলে রাখা যায়, ভালবাসা যায় সেটাই দেখিয়েছে। আজ পর্যন্ত কোনও মানবিক মুখ দেখতে পাচ্ছি না। মানুষ ভবিষ্যতে এর বিরুদ্ধে একত্রিত হবেন বলেই আমার বিশ্বাস। অচিরেই এই ক্ষমতার সুর ক্ষীণ হবে বলেই বিশ্বাস করি।”

নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত

বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় টিভি নাইন বাংলাকে নাট্যকার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “আজকে টিভিতে যেটা দেখলাম মনে হল পুলিশ একটু অ্যাগ্রেসিভলি কাজ করছে। যেমন জোর করে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাচ্ছে। এটা একটা বাজে দিক। এতে হিংসা বাড়ে। সেটা বোধহয় ভাল হল না সরকারের তরফ থেকে। কেন ‘১৪ সাল, ‘১৭ সাল চাকরি পেল না। সরকারের কি যথেষ্ট চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই অর্থনৈতিকভাবে? নাকি এতজনকে একসঙ্গে চাকরি দেওয়া যাবে না?”

নাট্যকার চন্দন সেন

একটা চূড়ান্ত বর্বরতা চলছে বলে মত নাট্যকার চন্দন সেনের। তিনি বলেন, “ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিকতার প্রতি কতটুকু সম্মান থাকতে পারবে এর পর আমার কিন্তু মনে হচ্ছে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। এই ছোট ছোট কতগুলো বিন্দু কিন্তু একটা বড় নদীতে এসে মিলবে। এই ছেলেমেয়েগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে এভাবে ছেলেখেলা করা মোটেই উচিৎ হচ্ছে না। আমি অত্যন্ত আতঙ্কিত এরপর সাধারণ মানুষ তাঁরা কোথায় যাবেন।”

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার

টিভি নাইন বাংলাকে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “কথা বলা উচিৎ ছিল। তা না বলে মধ্যরাত্রে পুলিশ দিয়ে এভাবে এদের তুলে দেওয়া হল খুব কুৎসিত। সভ্য দেশের পক্ষে লজ্জার বলে আমার মনে হচ্ছে। শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত বলে আমি খুব লজ্জিত বোধ করছি। এই ছেলেমেয়েগুলো, যাঁরা দীর্ঘদিনের অবিচারের শিকার, বঞ্চনার শিকার, তাঁদের উপর পুলিশ এতটুকু দয়ামায়া দেখাল না।”

অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র

শিক্ষাক্ষেত্রকে বাঁচানোর জন্য অবিলম্বে পথে নেমে আন্দোলন আরও তীব্র করা উচিৎ বলে টিভি নাইন বাংলাকে জানালেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। তিনি বলেন, “দলে দলে বহু জায়গায় ওনারা পথে বসছেন। কারও সাড়ে ৫০০ দিন পেরিয়ে গেছে। কারও ৫০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার এরকম পদক্ষেপ করবে স্বাভাবিক। এই সময়ে সব অংশের মানুষের, দলবল নির্বিশেষে সকলের উচিৎ রাজ্যটাকে বাঁচানোর জন্য, শিক্ষাকে বাঁচানোর জন্য নাগরিক আন্দোলনকে তীব্র করা।”